স্বামীর সন্দেহের বলি? পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার হল বধূর দগ্ধ দেহ

শুক্রবার ওই ঝামেলা চরম আকার নেয়। বিকেলে তাঁর দিদি বাজারে গিয়েছিল। সেখান থেকে পরিচিত মহিলার বাড়ি যাচ্ছিল সে। তখনই দিদিকে দেখতে পায় জামাইবাবু। দাবি করে, অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে দিদি। দিদিকে নিয়ে বাড়ি ফিরেই সে ফোনে তাঁর ছোটো বোনকে বলে, দিদিকে সে খুন করে ফেলবে। 

Updated By: May 19, 2018, 08:41 PM IST
স্বামীর সন্দেহের বলি? পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার হল বধূর দগ্ধ দেহ

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কে জড়িত বধূ। এই সন্দেহে এক মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে পাটক্ষেত থেকে ওই বধূর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার চাঁচল নম্বর ১ ব্লকের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেবা গ্রামে। ঘটনার প্রেক্ষিতে খরবা ফাঁড়ির পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করলেও পলাতক শ্বশুর ও শাশুড়ি। 
          
মৃত বধূর নাম মঞ্জুরা বিবি। বয়স ৩৫। বাবার বাড়ি স্থানীয় বিলাইডাঙি গ্রামে। ১৫-১৬ বছর আগে দেখাশোনা করেই তাঁর বিয়ে হয় ভেবা গ্রামের পুতুল আলির সঙ্গে। পুতুল পেশায় ভিনরাজ্যের শ্রমিক। সম্প্রতি সে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়েও রয়েছে।
   
মঞ্জুরার ভাই মঞ্জুর আলমের অভিযোগ, তাঁর জামাইবাবু সন্দেহপ্রবণ। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে দিদিকে সন্দেহ করতে শুরু করে সে।  এনিয়ে মাঝেমধ্যে দিদির সঙ্গে জামাইবাবুর ঝামেলা হত। এনিয়ে বেশ কয়েকবার দিদি বাবার বাড়িও চলে এসেছে। বিবাদ মেটাতে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশি সভাও বসেছে। একবার এনিয়ে চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। থানার আইসি দু'পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই কোনও ফল মেলেনি। 
মঞ্জুর জানিয়েছেন, শুক্রবার ওই ঝামেলা চরম আকার নেয়। বিকেলে তাঁর দিদি বাজারে গিয়েছিল। সেখান থেকে পরিচিত মহিলার বাড়ি যাচ্ছিল সে। তখনই দিদিকে দেখতে পায় জামাইবাবু। দাবি করে, অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে দিদি। দিদিকে নিয়ে বাড়ি ফিরেই সে ফোনে তাঁর ছোটো বোনকে বলে, দিদিকে সে খুন করে ফেলবে। একই অভিযোগ মঞ্জুরার বাবা মফিজুদ্দিনেরও।
          
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে পুতুল ও মঞ্জুরার মধ্যে ব্যাপক ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এদিন সকালে পুতুলের বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি পাট খেতে মঞ্জুরার আধপোড়া মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় খরবা ফাঁড়ির পুলিশ। গ্রাম থেকে আটক করা হয় মূল অভিযুক্ত পুতুলকে। তবে তার বাবা-মা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। 
স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য মঞ্জুরার দেহে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মঞ্জুর ও তাঁর পরিজনরা। পুলিশ মঞ্জুরার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে চাঁচল থানার পুলিশ।

.