২৪ ঘণ্টার খবরের জের! ৭ ঘণ্টা পর শিশুর চোখ থেকে পেরেক বের করার দায়িত্ব নিল হাসপাতাল

Updated By: Jul 16, 2017, 12:12 PM IST
২৪ ঘণ্টার খবরের জের! ৭ ঘণ্টা পর শিশুর চোখ থেকে পেরেক বের করার দায়িত্ব নিল হাসপাতাল
ছবিটি প্রতীকী

ওয়েব ডেস্ক : পেরেক বিদ্ধ শিশু। একের পর এক হাসপাতালে ঘন্টার পর ঘন্টা ভোগান্তি। অসহায় পরিবারের পাশে শেষমেশ দাঁড়াল ২৪ ঘণ্টা। খবর সম্প্রচারে পরে অবশেষে মেলে চিকিত্সা। খবর দেখে উদ্যোগী হয় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরও। আজ সকালে কিছুটা হলেও স্থিতিশীল শিশুটির শারীরিক অবস্থা। ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস পরিবারের।  

চোখে ফুটে রয়েছে পাঁচ ইঞ্চির পেরেক। চারদিক ভেসে যাচ্ছে রক্তে। সেই অবস্থাতেই তাঁকে নিয়ে কলকাতার পাঁচ-পাঁচটা সরকারি হাসপাতালের চক্কর কাটলেন আত্মীয়রা। শুধুই রেফার। ভর্তি নিতে উদ্যোগ নিল না কেউই। ২৪ ঘণ্টায় খবর প্রচার হওয়ার পরে শেষে ভর্তি নিল NRS  হাসপাতাল।

'নির্মম!' ছোট্ট করিমের সঙ্গে যা হল, তা ব্যাখা করতে এই একটা শব্দই যথেষ্ট। দিনভর যন্ত্রণায় কাতরালো আট বছরের ছোট্ট ছেলেটা। আর সেই অবস্থাতেই তাকে নিয়ে একেরপর এক হাসপাতালে দরজায় দরজায় ঘুরলেন বাড়ির লোক। যদি চিকিত্সা মেলে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুমিরমারির বাসিন্দা করিম মোল্লা। সকালে বাঁশে মাচার উপর থেকে কুলো পাড়তে যায় সে। তখনই পেরেকটি প্রায় দুই ইঞ্চি ঢুকে যায় করিমের চোখে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যানিং হাসপাতালে। কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেন তাঁরা। এরপরেই শুরু হয় হয়রানি হাসপাতাল যাত্রা। ভর্তি নয় শুধুই রেফার।

আরও পড়ুন- এখনও স্থিতিশীল নয় পুরুলিয়ার সূচ বিদ্ধ শিশুটি

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ভর্তি নেয়নি শিশুটিকে। সেখান থেকে পাঠানো হয় SSKM হাসপাতালে। অভিযোগ সেখান থেকে বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে রেফার করা হয়। তারা পাঠিয়ে দেয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের RIO-তে। অভিযোগ ভর্তি নেয়নি তাঁরাও। এরপর শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় NRS-এ।

ঘড়িতে তখন দিন শেষ হয়ে রাত। চোখে ফুটে রয়েছে লম্বা পেরেক। জামা ভেসে যাচ্ছে রক্তে। তাও চিকিত্সা শুরু হয়নি। এরপরই উদ্যোগী হয় ২৪ ঘণ্টা।
খবর পেয়ে হাসপাতালে যায় ২৪ ঘণ্টা। শুরু হয় খবর সম্প্রচার। ছোট্ট করিমের অবস্থা দেখে এগিয়ে আসেন হাসপাতালে থাকা অন্য লোকজনও। ক্ষুব্ধ সকলেই।  শেষ পর্যন্ত করিমকে ভর্তি নেয় হাসপাতাল।

ততক্ষণে পাড় হয়ে গিয়েছে ৭ ঘণ্টা। অবশেষে শুরু চিকিত্সা। তড়িঘড়ি করিমের অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তখন হাসপাতালে কোনও চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। রাতেই চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞকে ডেকে পাঠানো হয়। এমার্জেন্সির চিকিত্সকরাই অস্ত্রোপচার করেন। উদ্যোগী হন খোদ CMO।  ২৪ ঘণ্টায় খবর সম্প্রচার হতেই হইচই পড়ে যায়। শিশুটির চিকিত্সার খোঁজ খবর নেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেও। করিম আর দৃষ্টি ফিরে পাবে কিনা, নিশ্চিত করতে পারছেন না কেউই। কিন্তু রক্তে ভেসে যাওয়া ছোট্ট শিশুটির দিকে কেন কেউ একবারও ফিরে তাকালো না? কেন এত উদাসীনতা হাসপাতালগুলির?

.