মুর্শিদাবাদের ভয়ানক বাস দুর্ঘটনার নেপথ্যে আসল কারণ কী , এবার উঠে এল সেই তথ্য
কীভাবে বালিঘাট ব্রিজের রেলিং ভেঙে মুর্শিদাবাদের ভৈরব নদীতে পড়ে গেল বাসটি? ধোঁয়াশা কাটিয়ে এবার দুর্ঘটনার আসল কারণ জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কীভাবে বালিঘাট ব্রিজের রেলিং ভেঙে মুর্শিদাবাদের ভৈরব নদীতে পড়ে গেল বাসটি? ধোঁয়াশা কাটিয়ে এবার দুর্ঘটনার আসল কারণ জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানান, কুয়াশা মাখা ভোরে ব্রিজে ওঠার মুখে একটি ট্রাককে পাশ কাটাতে গিয়েছিল যাত্রীবাহী বাসটি। তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। সোজা ধাক্কা মারে সেতুর রেলিংয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রেলিং ভেঙে বাসটি পড়ে যায় নদীতে।
সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে যে বাস দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার ভয়াবহতা যে কতটা মারাত্মক, তা বারবারই ধরা পড়ছিল স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়। তাঁদের দাবি, সাম্প্রতিক অতীতে এহেন বড় দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকেনি মুর্শিদাবাদ। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল ধোঁয়াশা। স্থানীয়দের দাবি, বালিরঘাট সেতু শক্তপোক্ত, সেক্ষেত্রে কীভাবে রেলিং ভেঙে দুর্ঘটনাটি ঘটল? অনেকে আবার মনে করছিলেন, তবে কি চালক বাস চালানোর সময়ে মোবাইলে কথা বলছিলেন, তাতেই দুর্ঘটনা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছিল ধোঁয়াশা। অবশেষে প্রাথমিক তদন্তের পর সঠিক তথ্য জানালেন পরিবহণমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: চোখের সামনে ভৈরবের গর্ভে ডুবে গেল আস্ত একটা বাস, শেষ বাঁচার আর্তি যাত্রীদের! দেখুন দুর্ঘটনার ভিডিও
সূত্রের খবর, ঘটনার ৪ ঘণ্টা পর ভৈরব নদীতে পুরোদস্তুর উদ্ধারকাজ শুরু করেছে প্রশাসন। কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। রয়েছেন পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কীভাবে এত বড় দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখতে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদে যাচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের টিম।
কীভাবে চলছে উদ্ধারকাজ?
হেলিকপ্টারে করে উড়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারের পদ্ধতি নিয়ে ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়েছে। ১৪০ টনের উচ্চ পর্যায়ের ২ টি ক্রেনের সাহায্যে উদ্ধার চলছে। নৌকা নিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ।নদীর গভীরতা কতটা বেশি, তা বোঝার জন্য প্রথণে ৩৫ ফুট লম্বা একটি বাঁশ নদীতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, বাঁশটি নদীর তল স্পর্শ করতে পারেননি। নদীর গভীরতা অনেকটাই বেশি হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় উদ্ধারকারীদের। এদিকে, বাসটিও পুরোপুরি নদীতে ডুবে যাওয়া উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছিল। জানা যাচ্ছে, বাসটির এখন হদিশ পাওয়া গিয়েছে। সেতুর ঠিক নীচেই রয়েছে বাসটি। বাসটিকে তুলতে হাইড্রোলিক ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে খবর। ঘটনাস্থলে পুলিস সুপার, জেলাশাসক, রয়েছে মন্ত্রী জাকির হোসেন। উদ্ধারকাজে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে খবর দেওয়া হয়েছে। বেলা পৌনে ২টো নাগাদ, প্রশিক্ষিত ডুবুরি নদীতে নামানো সম্ভব হয়।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ৪ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তদন্তে জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি এনবিএসটিসি-র বাস। করিমপুর থেকে মালদা যাচ্ছিল বলে খবর। বাস চালক ও কন্টাকটর ডোমকলের বক্সিপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
দুর্ঘটনার সময়ের সেই হাড় হিম করা দৃশ্য মোবাইলবন্দি করেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী...