আপাতত ‘থামল’ রথ, পদযাত্রায় বিকল্প ভাবনা বঙ্গ বিজেপির
রথযাত্রার বদলে এবার রাজ্য জুড়ে পদযাত্রা বার করবে তারা।
অঞ্জন রায়: মুখ্যমন্ত্রীর সপাটে চড় বিজেপির গালে! সাম্প্রতিককালে বঙ্গে বিজেপির অবস্থান দেখে অন্তত এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। রথযাত্রা এবং তা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গে এনে সভা- সবই এখন যেন ধোঁয়াশা। তবে কি মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক চালে কিছুটা হলেও পিছিয়ে গেল বিজেপি?
রথযাত্রা আদৌ হবে কিনা, এখনও সে উত্তর ঝুলে রয়েছে আদালতে। তাই বাংলায় সাংগঠনিক শক্তি মজবুত করতে বিকল্প ভাবনা গেরুয়া শিবিরের। রথযাত্রার বদলে এবার রাজ্য জুড়ে পদযাত্রা বার করবে তারা। বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড। তার আগে ১৮ ডিসেম্বর অর্থাত্ মঙ্গলবার দিল্লিতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহাকে ডেকে পাঠালেন অমিত শাহ।
এক নজরে দেখুন বিজেপির কর্মসূচি
** জানুয়ারি মাসে রাজ্যে মোদী-শাহকে এনে সভা করবার চিন্তাভাবনা করছে বিজেপি।
** তার আগে ডিসেম্বরে সব জেলায় রাজ্য নেতাদের নিয়ে সভা করার চিন্তাভাবনা
** প্রশাসন সভার অনুমতি না দিলে আইন অমান্য কর্মসূচি গ্রহণ করবে তারা।
** রথযাত্রার বদলে এবার পদযাত্রা করার ভাবনা।
** ব্লকে ব্লকে রথযাত্রার বদলে পদযাত্রা হবে।
আরও পড়ুন: বৈঠকে মিলল না অনুমতি, রথযাত্রা নিয়ে ফের বিজেপির মামলা হাইকোর্টে
** জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে রাজ্য জুড়ে পদযাত্রা হবে।
** ২০ ডিসেম্বর বিজেপির ৩৬ টি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কে নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত।
পৌষ পার্বনের পর বিজেপির জনসভাগুলি শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে আর্জি মঞ্জুর, আইনি লড়াইয়ের পাশে রথযাত্রা নিয়ে আইন অমান্য কর্মসূচি বিজেপির
প্রসঙ্গত, সোমবারই রথযাত্রা নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছে বিজেপি। তাদের আর্জি গৃহীতও হয়েছে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি।
গত শনিবারই বিজেপির দফতরে ফ্যাক্স মারফত চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, রথযাত্রা অনুমতি নেই তাদের। তবে বিজেপি চাইলে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের সভার অনুমতি মিলতে পারে।
রাজ্য সরকারের মূল আপত্তি, বিজেপির 'গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা' কর্মসূচি ৪২দিনের। এতদিন ধরে কোনও কর্মসূচি চালানো সম্ভব নয়। রথযাত্রার নিরাপত্তায় ৫০০০ পুলিস কর্মীকে মোতায়েন করতে হবে, তা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি গঙ্গাসাগরে মেলার জন্য ওই জায়গা থেকে রথযাত্রার সূচনার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। রয়েছে পৌষ মেলাও। এর মাঝে আবার ২৫ থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে থাকবে আনন্দের আবহ। এর মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি হলে সামাজিক উত্সবে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে মত রাজ্যের।
কিন্তু রাজ্যের আপত্তি মেনে নিতে পারেনি বিজেপি। সোমবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। রথযাত্রা ভাগ্য নির্ধারণ এখন হাইকোর্টের হাতে। তবে আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা না করেই বিকল্প ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া ব্রিগেড। আপাতত রথযাত্রার বদলে পদযাত্রা করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।