ইসলামপুরে নিহত ২ ছাত্রের দেহ দাহ করতে অস্বীকার গ্রামবাসীদের, মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রেখে চলছে পাহারা

গুলিতে দুই প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ এখনও পুলিসের ওপরেই

Updated By: Sep 22, 2018, 12:10 PM IST
ইসলামপুরে নিহত ২ ছাত্রের দেহ দাহ করতে অস্বীকার গ্রামবাসীদের, মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রেখে চলছে পাহারা

নিজস্ব প্রতিবেদন: ইসলামপুরে ছাত্রবিক্ষোভে নিহত দুই প্রাক্তন ছাত্রের শেষকৃত্য নিয়ে তৈরি হল নতুন সমস্যা। মৃতদেহ দাহ করতে অস্বীকার করল দাড়িভিট গ্রামের মানুষজন। তাদের দাবি, গুলিচালনার ঘটনার সিবিআই তদন্ত করতে হবে।

নিহত প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের কফিনবন্দি মৃতদেহ পুঁতে রাখা হয়েছে মাটিতে। রাতে পাহারারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। শুক্রবার রাতে দুটি মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। নিহত রাজেশ সরকারের বাবার দাবি ময়নাতদন্ত হলেও তা তাঁকে জানানো হয়নি। পাশাপাশি ধরপাকড়ের নামে পুলিসি হয়রানি চলছে।

আরও পড়ুন-অধীর সরতেই সমীকরণের অঙ্কে সক্রিয় তৃণমূল ও বিজেপি

এদিকে, গুলিতে দুই প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ এখনও পুসিসের ওপরেই। ঘটনার দিন নিজের দোকানের সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন রাজেশ সরকার। সেখানেই পেছেনর দিক থেকে গুলি এসে লাগে রাজেশের দেহে। অন্যদিকে, তাপস বর্মনকে গুলি লাগে তার বাড়ির সামনেই। দুজনই বিক্ষোভে সামিল হননি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নন তাপস। স্কুলের সামনেই তাঁর বাড়ি,  আর বাড়ির সামনে মিষ্টির দোকান। দোকানে রাজমিস্ত্রি কাজ করছিলেন। সেই কাজরই তদারকি করছিলেন তাপস। সেসময় তার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই পুলিসকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ছিল জনতা। ওইসময় আচমকাই ওপর প্রান্ত থেকে গুলি এসে লাগে তাপসের বুকে। এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় শরীরটা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি কথা বলেছিলেন তাপসের মায়ের সঙ্গে। কে গুলি চালিয়েছিল, প্রশ্ন করতেই এক নাগাড়ে তিনি বললেন,  ‘পুলিস গুলি চালিয়েছিল, মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল।’  তাপসের মায়ের কথায় উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি বলেন, ‘মুখে কালো কাপড় বেঁধে গুলি ছুড়েছিল পুলিস। যে লোকটা গুলি চালিয়েছিল, সে নীল রঙের পোশাক পরে ছিল। পুলিসের সঙ্গে এসেছিল, না র‌্যাফের সঙ্গে এসেছিল, তা বলতে পারব না। তবে  র‌্যাফের গায়ে বড় বড় লেখা ছিল। ওদের গায়ে কিছু লেখা ছিল না।

আরও পড়ুন-শনিবার ছাত্র ধর্মঘট! ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতে হবে’, দাবি এসএফআই-এর

উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ইসলামপুর। ছাত্রবিক্ষোভের মধ্যেই গুলি লেগে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার নামে এক প্রাক্তন ছাত্রের। মঙ্গলবার থেকে ঘটনার সূত্রপাত। এদিন পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ইসলামপুরের দাঁড়িভিট হাইস্কুল। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে পুলিস। অভিযোগ, আচমকা লাঠিচার্জ করতে শুরু করে পুলিস। তারপরই গুলি ছোঁড়ে।

এই ঘটনায় সম্পূর্ণরূপে পুলিসের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন গ্রামবাসীরা। জানা গেছে, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্র বিক্ষোভের সূত্রপাত। দাঁড়িভিট হাইস্কুলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্ররা। এদিন সেই শিক্ষককে স্কুলে দেখেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। অভিযোগ, ছাত্রীদের গায়েও হাত দেয় পুলিস।

.