পাক মাটিতে ‘দুবাই’ তৈরি চিনের, জল সঙ্কটে ভুগছেন স্থানীয়রা
বালুচিস্তানের এক সাংবাদিক সাজিদ বালোচের কথায়, “গত তিন বছর এখানে একফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি।” গ্বদর বন্দরে কর্মরত আব্দুল রহিম নামে এক শ্রমিক তো প্রকৃতির আমূল পরিবর্তনকে দায়ী করে বসলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আরব সাগরে তীরে ‘দুবাই’ তৈরি করতে চলেছে পাকিস্তান। যদিও এর প্রধান কারিগর চিনই। বালুচিস্তান প্রদেশের গ্বদর বন্দরে তৈরি হচ্ছে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের অন্তর্গত এই প্রকল্প। এই গ্বদর বন্দরকে কেন্দ্র করে তৈরি ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ প্রকল্পের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করার লক্ষ্যে রয়েছে চিন। তেমনই পাকিস্তানও চাইছে তাদের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করতে। এই প্রকল্প শুরু হওয়ায় প্রাথমিকভাবে সে দেশের কর্মসংস্থান বেড়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের উন্নয়নের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানকার ব্যাপক জলসঙ্কট।
আরও পড়ুন- সীমান্ত সমস্যা মেটাতে চলতি সপ্তাহে ড্রাগনের দেশে মোদী-জিনপিং বৈঠক
বালুচিস্তানের এক সাংবাদিক সাজিদ বালোচের কথায়, “গত তিন বছর এখানে একফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি।” গ্বদর বন্দরে কর্মরত আব্দুল রহিম নামে এক শ্রমিক তো প্রকৃতির আমূল পরিবর্তনকে দায়ী করে বসলেন। তিনি বলেন, “প্রতি বছর একটা মরশুমে অল্প হলেও বৃষ্টি হত। কিন্তু এখন সে লক্ষণ আর নেই। এখানে পানীয় জলের সঙ্কট ভীষণ।” উল্লেখ্য, গ্বদর বন্দরের অদূরে অক্র কাউর জলাধারটি দুই বছর আগেই শুকিয়ে গিয়েছে। রহিম জানিয়েছেন, ভূর্গভস্থ জলস্তর এতটাই নীচে যে এখানে টিউবওয়েল তৈরির পরিস্থিতিও নেই। জল সঙ্কটের দরুন সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিতসকের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন- ইজরায়েলি সেনার গুলিতে গাজায় মৃত ২, নিরপেক্ষ কমিশন গড়ার দাবি প্যালেস্তাইনের
কিন্তু গ্বদর বন্দরকে ‘দুবাই’য়ের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে কেন?
আরব সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা গ্বদর বন্দরের হাত ধরে ইরান, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কায় বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে চিনের। এই মুহূর্তে গ্বদর বন্দরের কাছে প্রায় এক লক্ষ মানুষ বসবাস করেন। ২০২০ সালের মধ্যে এখানে ৫ লক্ষ জনসংখ্যা হবে বলে আশাবাদী সিপেক প্রকল্পের বিশেষজ্ঞরা। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি তৈরি হচ্ছে এখানেই। তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র, খনিজ তেল, শস্য সরবরাহের জন্য তা মজুতের ব্যবস্থা-সহ প্রায় ২ হাজার একর জুড়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে গ্বদর বন্দরের কাছে। জলের সমস্যা মেটানোর জন্য ইতিমধ্যেই সৌদি আরব এবং সুইত্জারল্যান্ড থেকে আনা অত্যুাধিক যন্ত্র স্থাপন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- বর্জ্যে বজ্রআঁটুনি বেজিংয়ের, কপালে ভাঁজ পড়েছে ব্রিটেন-আমেরিকার