ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য অবস্থায় শ্বাসরোধ করে প্রেমিকাকে খুন, জেরায় স্বীকার সমরেশের

বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন সুচেতা। তাই ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে প্রেমিকা ও তার শিশুকন্যাকে খুন করেছেন। পুলিসের জেরায় স্বীকার করে নিলেন সমরেশ মজুমদার।

Updated By: Aug 30, 2015, 09:00 PM IST
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য অবস্থায় শ্বাসরোধ করে প্রেমিকাকে খুন, জেরায় স্বীকার সমরেশের

ওয়েব ডেস্ক: বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন সুচেতা। তাই ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে প্রেমিকা ও তার শিশুকন্যাকে খুন করেছেন। পুলিসের জেরায় স্বীকার করে নিলেন সমরেশ মজুমদার।

কীভাবে খুন?

শুক্রবার বিকেলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সুচেতাকে অচৈতন্য করে ফেলে সমরেশ। তারপর শ্বাসরোধ করে খুন । সমরেশকে খুন করতে দেখে ফেলে ছ বছরের দীপাঞ্জনা। তাকেও একইভাবে গলা টিপে খুন করে সমরেশ।

দুটি মৃতদেহ ফ্ল্যাটে ফেলে রেখেই বেরিয়ে যায় সমরেশ। সন্ধের কিছু পর চারটি ট্রলি ব্যাগ ও প্লাস্টিক কিনে ফিরে আসে। বঁটি দিয়ে টুকরো টুকরো করে কাটে দুটি দেহ। তারপর পুরে ফেলে ট্রলি ব্যাগের ভিতর। ঘরের মেঝেয় পড়ে থাকা রক্ত গামছা দিয়ে মুছে ফেলে। ভোর তিনটে থেকে চারটের মধ্যে মারুতি ভ্যান ভাড়া করে রওনা দেয় কলকাতার দিকে। শেওড়াফুলি ঘাট থেকে ব্যারারপুরে যাওয়ার সময় মাঝগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যাগগুলি। রাতভর পুলিসি জেরার মুখে গোটা ঘটনাই স্বীকার করে নিয়েছে সমরেশ সরকার। তাকে ১২দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সুচেতা-সমরেশের সম্পর্কের শুরু মামরা বাজারের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে। দু বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে এই শাখায় বদলি হয়ে আসেন সমরেশ মজুমদার।  গ্রাহক হিসাবে ব্যাঙ্কে যাতায়াত ছিল সুচেতার। সেখান থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা।

দুর্গাপুরের বিধাননগর আবাসনের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী। ২০০৭ ডিসেম্বরে বসিরহাটের শ্রুতিধর মুখার্জির সঙ্গে বিয়ে হয় সুচেতার। ২০১১-য় সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর থেকে সুচেতা দুর্গাপুরেই থাকতেন। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ফ্ল্যাটে একাই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার কারণ দেখিয়ে বসিরহাট ফিরবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন সুচেতা। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় একা থাকতেন সুচেতা আর দূরত্বের কারণে পরিবার ছেড়ে দুর্গাপুরে থাকতেন সমরেশও। দুজনের তাই পরিচয় ক্রমশই গাঢ় হতে শুরু করে। সুচেতার ফ্ল্যাটে যাতায়াত শুরু করেন সমরেশ। স্বামীর সঙ্গে সুচেতার সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে শ্রুতিধরকে দুর্গাপুরে আসতে বারণ করে দেন সুচেতা।

সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। পট পরিবর্তন কয়েক মাস আগে। সমরেশকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন সুচেতা। কিন্তু, স্ত্রী ,এক পুত্র ও কন্যাকে নিয়ে ঘোরতর সংসারী সমরেশের পক্ষে কোনওভাবেই বিয়ে করা সম্ভব ছিল না। কিন্ত, মানতে চাননি সুচেতা। অতিরিক্ত চাপের মুখেই সুচেতাকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষেন সমরেশ।

 

.