স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মেরি কম, গীত শেঠিদের কথা বলব নাকি জর্জ বেস্ট আর জর্জ উইয়াকে দিয়ে শুরু করব ভাবছিলাম। তার আগে বলে নিই, কেন এই চারটে নামের কথা মাথায় এলো। আজ লেখার বিষয় লিওনেল মেস। আজকের ভাষায় 'এল এম টেন'। পঞ্চমবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব। মানে পাঁচটা ব্যালন ডি'ওরের গোল্ডেন বল জমে গেল তাঁর বাড়িতে। তাই গোটা পৃথিবীর মতো বসতে হবে মেসি বন্দনায়। আপনার এমনটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক। যদি না আপনি ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর 'গাম্বাট' ভক্ত হন। কারণ, এটা মানতে কোনও দ্বিধা কারও থাকা উচিত নয় যে, মেসি ভালো ফুটবলার। খুব ভালো ফুটবলার। অন্তত ভালো প্রমাণ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টেও তাঁর আইনজীবীর হাতে যে যে প্রমাণপত্র থাকলে, তিনিও তাঁর সওয়াল-জবাবের পর আত্মবিশ্বাসী হয়ে বলতে পারেন, 'দ্যাটস অল ইওর অনার'!


ফুটবলার মেসিকে সেই জায়গায় রেখেই শুরুটা অন্তত করলাম। দেখি লেখা শেষ হওয়ার সময় মেসি ঠিক কতটা উপরে থাকতে পারেন! মাখন অনেক লাগালাম। এবার ছুড়িটা চালানো শুরু করা যাক। পিছন থেকে নয়। যুক্তি দিয়ে। একবার, একবার করে এপাশ-ওপাশ করে। পঞ্চম ব্যালন ডি'ওর কি পাচ্ছেন মেসি? বিশ্বাস করুন, এটা নিয়ে কোনও আগ্রহ ছিল না। শুধু মাথায় ঘুরছিল, অন্য একটা প্রশ্ন। তা হলো- এবার মেসি সেরার শিরোপা জিতলে, পাঁচবার হবে। সেক্ষেত্রে তাঁর উইনিং স্পিচটা কী হবে? জানার জন্য মনটা ছটফট করছিল ওটাই। কারণ, এটাই যে বলার দিন। নিজেকে চেনানোর দিন। বড় মানুষ অবলীলায় অনেক কিছু করে ফেলতে পারেন। তারপর তিনি বাকি পৃথিবীটাকে কী শিক্ষা দিয়ে যাবেন, জানার সেটাই।
 
মেসি জিতলেন! লাজুক আবার আত্মবিশ্বাসীর এক মিশেলের হাসি নিয়ে দিব্যি কথা বলা শুরু করলেন। বললেন বেশ কিছু কথা। যাতে 'কান এঁটো' করে হাসা যায়। গুরু কী দিল বলে লুটিয়ে পড়া যায়। কিন্তু কী শুনলাম বলতে মেসিকে! মাথায় ঘুরতে লাগলো সারা রাত। পরের দিন খবরের কাগজে সকালবেলায় পড়লামও ওই দুটো লাইনই। হ্যাঁ, যা মেসি বলেছেন। কী ছিল সেটা? বলেছিলেন, 'একটা বিশ্বকাপের জন্য আমি ৫ টা ব্যালন ডি'ওরও ছেড়ে দিতে পারি!' অথবা  'একটা বিশ্বকাপের জন্য আমি ৫ টা ব্যালন ডি'ওরও দিয়ে দিতে পারি!' চমকে উঠছিলাম। এখনও উঠছি। একটা পুরস্কার নিয়ে, সেই মঞ্চেই বলছি, আর একটা বড় পাওয়ার জন্য এটাকে দিব্যি ছেড়ে দিতে পারি! প্রথমেই আক্রমণের কথা মাথায় এল। খানিকবাদে সামলে নিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলাম। ভুল কী এমন বললেন মেসি! কিছুই তো না। একজন ফুটবলার, বিশ্বকাপ জিতবেন, এটাই তো তাঁর সবথেকে বড় স্বপ্ন হওয়ার কথা। সেটার জন্য সে, সবকিছু ত্যাগ করতে পারবে, এটাই তো হওয়ার কথা। তাহলে তো ঠিকই করেছেন। তাহলে কেন খামোখা মেসির এই বক্তব্যের বাঁকা ব্যাখ্যা করতে যাবো? আর তখনই মনে হল, না, ব্যাঁকাটা মেসিই করলেন। সোজা কথা এটাই-পুরস্কার কোনওদিন এত ছোট হতে পারে না। যে, সেটা হাতে নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলা যায়, আমি আর একটা পুরস্কারের জন্য আগের পাওয়া পাঁচটা পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে পারি! তাই কিছু কথা মেসির বিরুদ্ধেই।


এতদিন মনে হতো, লিওনেল মেসির মতো ফুটবলার একবার বিশ্বকাপ জিতবেন না! নিশ্চয়ই জিতবেন। আজ মনে হচ্ছে, হলফ করে বলে দেওয়া যায়, এই লোকটার ওই স্বপ্নটা পূরণ হওয়া উচিত নয়। যে লোকটা একটা স্বপ্ন পূরণ করার জন্য, আগের স্বপ্নগুলোকে মূল্যহীন ভাবতে পারেন, হাতে পুরস্কারটা নিয়ে, সে লোকটার কিছুতেই পরের স্বপ্নপূরণ হওয়া উচিত নয়। তাহলে সমাজটায় সত্যিই পুরস্কারের দাম থাকবে না। এক্ষেত্রে কয়েকটা উদাহরণ দিতে চাই। আমি বলছি। আপনি পড়তে থাকুন আর ভিস্যুয়ালাইজ করতে থাকুন।


গুলাম আলিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরীয়টা পরিয়ে দেওয়ার পর, সম্মান জানানোর পর গুলাম আলি যদি বলেন, 'ইস, যদি একবার শিবসেনা প্রধান এমন সম্মান দিত মুম্বইতে। আমি সব ছেড়ে ওখানে চলে যেতাম!' যদি রজার ফেডেরার কখনও বলেন, ইস রোলা গাঁরোতে যদি ৫ টা ট্রফি জিততে পারতাম, তাহলে সবকটা উইম্বলডন ফিরিয়ে দিতাম। ওসব যদির কথা আমিই ছেড়ে দিলাম। ঘটে যাওয়া বাস্তবে আসি। সচিন তেন্ডুলকর তো খেলা শুরু করেছেন ১৯৮৯ তে। আর বিশ্বকাপটা জিতলেন ২০১১ তে এসে। 'বা....ই..শ সাল বাদ'! ওই ২২ টা বছরে লোকটাকে কখনও বলতে শুনেছেন যে, ইস বিশ্বকাপটা যদি পেতাম, তাহলে ৮৫ টা সেঞ্চুরিও ছেড়ে দিতে পারি! কোনওদিন ইভান লেন্ডেলকে এতটা আক্ষেপ করে বলতে শুনেছেন, ইস একটা উইম্বলডনের জন্য, জীবনে জেতা সব ট্রফি ফিরিয়ে দিতে পারি! কখনও জর্জ উইয়াকে বলতে শুনেছেন, ইস একটাবার বিশ্বকাপ খেলতে পারলে, দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার চেষ্টাটাও করব না! উইয়া ছাড়ুন, জর্জ বেস্টকে কখনও বলতে শুনেছেন, বিশ্বকাপটা খেলতে পারলে, ইংল্যান্ডের সব সুন্দরীকে মন থেকে ভুলে যেতাম! ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে একের পর এক খেতাব জেতানোর পর কোনওদিন স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনকে বলতে শুনেছেন, 'ধুর, একটা বিশ্বকাপ জিতলে ইপিএলের সবকটা ট্রফি দিয়ে দেব!' হয় নাকি! মেরি কম তো আগে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অলিম্পিকের পদক তো সেদিন পেলেন। গীত শেঠি ছ'বারের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন। কই, কোনও অলিম্পিক পদক তো ঘরে নেই। তাহলে কী, তাঁরা সেই ট্রফিগুলোকে দাম দেন না! এত বড় নামের দরকার নেই। আমাদের জয়দীপ কর্মকারও যে অলিম্পিকে চতুর্থ হয়ে ফিরে আফশোস করেন। কিন্তু কখনও বলেন না, যে ওই অলিম্পিক মেডেলটা পেলে, তাঁর পাওয়া সব ট্রফি ছেড়ে দেবেন।


আসলে এমনটা হয় না। আপনি জীবনে এক-একটা করে পেতে থাকবেন, আর আপনার পরের লক্ষ্যটা চোখের সামনে মাইল ফলকের মতো দেখাবে, ওটার দূরত্ব আর '?' কিলোমিটার। এবার সেই অনুযায়ী আপনি দৌড়বেন। কিন্তু আপনি কি কখনও এমন করবেন যে, আপনার নতুন মাইল ফলকের লক্ষ্যে দৌড়ের জন্য আপনার পেরিয়ে আসা পথটাকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দেবেন! অস্বীকার করবেন! যদি করেন, জানবেন, ঈশ্বর আপনাকে ওই পর্যন্তই পেরিয়ে এনেছে। এবার বাকি পথটা আপনাকে মরীচিকার পিছনে দৌড় করিয়ে মারবে। অথবা গাভাসকরের সেই বাউন্ডারির পিছনে দৌড়োতে থাকা ফিল্ডার করে ছাড়বে। যে ফিল্ডার সমানে ছুটবে আর ভাববে, বাউন্ডারিটা ঠিক বাঁচিয়ে দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানপ্রাণ উজাড় করে দেওয়ার পরও, অনেকটা ক্যালোরি শেষ করার পরও ফ্যালফেলে দৃষ্টিতে বলটা কুড়িয়ে আনতে হবে। আর গায়ের নোংরা পরিষ্কার করতে করতে দেখতে হবে, আম্পায়ার কত কায়দা করে বাউন্ডারির সিগন্যাল দিচ্ছেন। দূর থেকে গাভাসকর একটা এমন চাউনি দিল যাতে, আপনার গাটা রি রি করে জ্বলে উঠবে।


হ্যাঁ, লিওনেল মেসি সেটাই মনে হচ্ছে। আপনার জীবনে বোধহয় পাওয়ার দিন শেষ হয়ে এল। বেলা শেষের বেলাতেই বোধহয় অহংটা বেড়িয়ে এল এইভাবে। বলেদিলেন, একটা বিশ্বকাপের জন্য পাঁচটা ব্যালন ডি'ওর হেলায় ফিরিয়ে দিতে পারেন! একজনকে এত ভালোবাসতে গিয়ে যারা এত ভালোবাসার ছিল, তাঁদের সবাইকে মূল্যহীন করে দিলেন! আপনার অনেকদিন বোধহয় আয়নার সামনে দাঁড়ানো হয়ে ওঠেনি। চারপাশের তাবেদাররা এতবার আপনাকে 'জো হুকুম, জো হুকুম' বলেছেন যে, আপনি এখন পাঁচের অহংয়ে আকাশে উড়ছেন! একবার ভাবলেনও না, কতটা খারাপ লাগলো ব্যালন ডি'ওর কর্তাদের! কতটা খারাপ লাগলো ফিফা কর্তাদের!(অবশ্য ফিফা-উয়েফার দুই বড় কর্তার বলার মুখ থাকলে তো!)


আজ ওঁদের লাগলো। কাল আপনার খারাপ লাগার দিন ফেরত আসবে। এটাই জগতের নিয়ম। এমনটাই হয়ে আসছে সভ্যতার আদিমযুগ থেকে। এলএমটেন নামে আপনি যত আধুনিকই হন না কেন, খেলা ছাড়ার পর, আপনাকে খুব কম লোকই মনে রাখবে। আবারও লাইনটা 'রিপিট' করছি। খেলা ছাড়ার ১০ বছর পর আপনাকে আর মানুষ মনে রাখলে হয়! কেন মনে রাখতে যাবে আপনাকে! আপনি পেলের মতো ১৭ বছরে প্রথম, কেরিয়ারে তিনটে বিশ্বকাপও জেতেননি। আর নামের পাশে হাজার গোলও নেই। আপনি মারাদোনাও নন যে, একটা বিশ্বকাপ দিয়েছেন দেশকে। সঙ্গে নাপোলির মতো অখ্যাত কোনও টিমকে সেরি আ-ও জেতাননি। আপনি জর্জ বেস্টও নন। যে, ইংল্যান্ডের সব মাঠে গোলও করেছেন আবার সব সুন্দরীর সঙ্গে বিছানায় শুয়েছেন। ইংল্যান্ডে সেই নারীকে একটা সময় সুন্দরীই মনে করা হতো না, যে বেস্টের সঙ্গে বিছানায় 'বেস্ট রাতটা' কাটায়নি! আপনি জর্জ উইয়া নন, যিনি আফ্রিকা থেকে উঠে এসে বিশ্বসেরা হচ্ছেন। বিশ্বকাপ না খেলেই! আপনি রোমারিও-ও নন যিনি, ২৪ বছর পর দেশকে বিশ্বকাপ জেতাচ্ছেন! আপনি হালের বড় রোনাল্ডোও নন, যিনি আড়াই বছর মাঠের বাইরে কাটিয়ে একেবারে বিশ্বকাপে ফিরছেন। বুক বাজিয়ে নিজের উপরে জুয়াড়িদের টাকা লাগাতে বলছেন। আবার গ্যারান্টিসহ টাকা ফেরত দেবেন সেই আশ্বাসও দিচ্ছেন! এবং বিশ্বকাপটা শেষের পর দেখা যাচ্ছে, লোকটা ৮ গোল করে টপ স্কোরার! সঙ্গে বিশ্বকাপটাও জিতে নিয়ে গিয়েছেন। আরও নামের লিস্ট অনেক করা যাবে। তাতে আপনাকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। শুধু আর দুটো নাম করতে চাইব, তুলনায়।


এক, ড্যানিয়েল পাসারেল্লা। আপনার দেশেরই প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো ক্যাপ্টেন। লোকটাকে চিরকাল মানুষ মনে রাখবে। কারণ, আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ দিয়েছিলেন তিনিই। আর দুই, আজকের রোনাল্ডো। মানে, ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। আপনি পেতে পারেন ৫ টা ব্যালন ডি'ওর। কিন্তু খেলা ছাড়ার পর রোনাল্ডো আপনাকে 'ক্যারেক্টরের ক্যারিশমায়' তিন গোল দিয়ে চলে যাবেন। কেন? পর্তুগালের এমন এক দ্বীপে থাকতেন, যেখানকার ভাষার জন্যই লোকে হাসাহাসি করত। আপনাদের যাদবপুর কালচারের আড্ডায় হঠাত্‍ কোনও বাংলাদেশী এসে গেলে, আপনারা কেমন 'খেলো' করেন মনে পড়ল? রোনাল্ডোকেও লোকে তেমনই করত। তবু রোনাল্ডো ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে! স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের জমানায়, ডেভিড বেকহ্যামের থেকে প্রায় ছিনিয়ে নেওয়া ৭ নম্বর জার্সিতে। এবং দু' বছরেই নয়নের মণি! তবু সরকারি চাকরি পাওয়া হয়ে গিয়েছে বলে, ওল্ডট্র্যাফোর্ডে আস্তানা বসাননি রোনাল্ডো। বুক বাজিয়ে নিজেকে পরীক্ষায় ফেলেছেন মাদ্রিদের রয়্যাল ক্লাবে। যেখানে গ্যালাকটিকো যুগের শেষ হওয়ার পর, আকাশ ছিল মেঘলা। সেই মেঘলা আকাশের কালো মেঘ সরিয়ে একা জ্বলে উঠেছিলেন রোনাল্ডো। পাশে ওয়েলস উইজার্ড এসেছেন। করিম বেঞ্জিমা এসেছেন। কিন্তু রোনাল্ডোর পাশে সব মিটমিটে তারা। পর্তুগিজ তারকার ওই ঝলমলে আলো কোথায় তাঁদের! রোনাল্ডোর দল যে সফল নয়, আপনার দলের মতো। তাই এখন বলে বলে গোল দিচ্ছেন রোনাল্ডোকে। মাথায় রাখবেন, খেলা ছাড়ার পর কিন্তু এই চারিত্রিক পৌরুষ নিয়েই তর্কটা বাঁধবে। আর সেখানে আপনাকে বড্ড রাহুল দ্রাবিড় মার্কা লাগে। খুব ভালো। ভরসার। পাঁচিল। কিন্তু মিনমিনে। এমন চরিত্র খেলা ছাড়ার পর কেউ মনে রাখবে না। এই প্রজন্ম জানেই না, পিট সাম্প্রাস কে? ২০৩০-এর ১৬-১৭ বছরের ছেলেটিও জানবে না, এলএমটেন জিনিসটা খায় না মাথায় দেয়! মিলিয়ে নেবেন। আর যদি মনে পড়ে, তাহলে সেটা ব্যালন ডি'ওরের মঞ্চেই। কারণ, ওখানে যে আপনিই সেরা। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু আপনি যে, পঞ্চম ট্রফিটা হাতে নিয়ে দিব্যি বলে ফেলেছিলেন, 'বিশ্বকাপটা জেতার জন্য পাঁচটা ব্যালন ডি'ওরও ছাড়তে পারেন!' সেই মনে থাকাটায় আপনার নিজেরও যদি মনে পড়ে যায় নিজের মুখ থেকে বেরোনো কথাগুলো? আফশোসটা কিছুতেই যাবে না। দেখবেন। আর হ্যাঁ, বিশ্বকাপটা আপনি পেলেন কিনা দেখার অপেক্ষায় থাকব। বাজিটা লাগানোই থাকল। আপনি বিশ্বকাপ জিততে পারেন না কোনওদিন! উত্তর আপনার মন, পা আর সময় দেবে। জিতলে, সমাজ তাঁর অন্য গতিপথ খুঁজে নেবে। আর না জিতলে? আপনি বার্সেলোনা ক্লাবের সুব্রত ভট্টাচার্য অথবা সত্যজিত্‍ চ্যাটার্জি হয়ে থাকবেন! 'এক রাজা কুয়োর ব্যাঙের গল্প'। আজ আপনার দিন। শুনতে কেমন লাগবে। কিন্তু মাথায় রাখবেন, খেলা ছাড়ার পর আর দিন আপনার থাকবে না! খেলা না থাকলে, মানুষ চরিত্র খোঁজে। আপনার সব থাকতে পারে। কিন্তু চরিত্রটাই নেই। নাহলে আর্জেন্টিনার জাতীয় সঙ্গীতটাতেও ঠোঁট মেলাতে পারেন না একটু! মন থাকলে শিখে নিতেন। আপনার সে মন নেই। তাই তো সেফ খেলে এলেন চিরকাল। আর অন্যের হাত থেকে গোলাপটা নিয়ে দিব্যি বলে দিলেন, 'বড় গোলাপটা পেলে, এই সব গোলাপগুলো দিয়ে দিতে পারি!' আপনার কপালে আর গোলাপ নেই।


(এই লেখা পুরোপুরি ব্যক্তিগত মতামত। মেসি বন্দনায় তো অনেক প্রিন্ট, ফুটেজ খরচ হয়। তার বাইরে একটা বৃত্ত টানার চেষ্টা করলাম। কোনও মেসিভক্তকে কোথায় আঘাত করে থাকলে, ক্ষমাপ্রার্থী। লেখার পক্ষে এবং বিপক্ষে অবশ্যই মতামত জানান)