স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সেই সক্কাল থেকে শুরু বৃষ্টি। কবে আসবে, কবে আসবে, এই গরমে আর পারা যাচ্ছে না, এই ছিল আমাদের কোরাস। কথা ফেলেনি বৃষ্টি। দিব্যি আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছে সে। আর আসার পর থেকেই অবিরামভাবে ঝরে চলেছে। আকাশ কালো। চারপাশ আবছা। শীত, শীত, ভাব। বাতাসে জোলো হাওয়া। তার উপর রবিবার। ছুটির মেজাজ। বাঙালির জন্য এর থেকে ভালো আবহাওয়া আর কী হতে পারে? এবং, এই বৃষ্টি এক্ষুনি থামবে না, জানিয়ে দিয়েছে হাওয়া অফিস। ব্যাস্, আর কী? সন্ধেটা চপ, সিঙ্গাড়া, মুড়ি দিয়ে চালিয়ে দিন। আর রাতে বরষার ভালো-মন্দ খাওয়ার পর অবশ্যই শুতে যাওয়ার আগে এই লেখাটা পড়ুন। অবশ্য এটাকে লেখা ভাববেন না। বরং, বৃষ্টির দিনে বাঙালির ভালো লাগতে পারে, এমন ১০টি গানের ভিডিও দেওয়া থাকলো এখানে। আজ রাতে এই ১০টা বাংলা বৃষ্টির গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ুন। রাতটা মনে থাকবে অনেকদিন। তাহলে শুরু করা যাক, এক, দুই, তিন করে। হোক নতুন 'বরসাত কি এক রাত'! বড় রোম্যান্টিক এক রাত....


১) ভাবছিলাম শুরুটা কোন গান দিয়ে করব! রবিঠাকুর থাকতে অন্য কিছু গানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম না। তাই হোক শুরু রবীন্দ্র সঙ্গীত দিয়েই। পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে, পাগল আমার মন জেগে ওঠে....তাহলে শুরু করুন এটা দিয়েই। আশা জেগে উঠবে আপনার মন।


 


২) রবিঠাকুর দিয়ে শুরু করেছি। দ্বিতীয় গানটা নজরুলগীতি না হলে হয় কখনও! আর এক্ষেত্রে, শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরের থেকে ভালো গান কী হতে পারে। দেবদাসের সেই ভিডিওটাও গান শুনতে শুনতে দেখলে আপনার মনটা দেখুন কী ভালো হয়ে যাবে।

৩) দুই সেরা কবির গান দিয়ে রাতটা তো শুরু হল। এবার আসি সুধীন দাশগুপ্তের সুরে অবিস্মরণীয় সেই গানে। সুনীল বরণের কথায় কণ্ঠ দিয়ে যেন গানটাকেই জীবন্ত করে তুলেছিলেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। আকাশ এত মেঘলা, যেও নাকো একলা...আহা একবার শুনলে কী আর এসব মন ভরে? কিন্তু আজকের রাতে তাল না কেটে প্রতিটা গানই প্রথমে শুনুন একবার করে।

৪) এবার শুনুন মাদার ছবির সেই বিখ্যাত গান। এই বৃষ্টিতে ভিজে মাটি, চলো চলে যাই, তুমি, আমি, দুজনেতে মজা করে ঘুরে আসি...মান্না দে আর লতা মঙ্গেশকরের এই গান কোনওদিন পুরোনো হয় বলুন? মন কি সত্যিই এলোমেলো করে দেয় না?

৫) দেখতে দেখতে চারটে গান কিন্তু শোনা হয়ে গেল। বেশ জমে উঠেছে না আবহটা? এবার শুনুন লতা মঙ্গেশকরেরই গাওয়া আরেকটি গান। এই গানটি প্রতীক ছবির। বৃষ্টির অনাসৃষ্টির দিক শুনতেও মন্দ লাগবে না। ও হ্যাঁ, স্ক্রিনে আবার রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং চিরঞ্জিত। দুই রাজনীতিবিদ! এটা কিন্তু বাড়তি পাওনা।

৬) এবার চলে আসি আজ থেকে ৫৬ বছর আগের গানে। না, শুনতে একটুও পুরোনো হয় না আজও। ১৯৬০ সালে মুক্তি পেয়েছিল শেষ পর্যন্ত। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথায় কণ্ঠ দিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। আর ছবিতে এই গানে লিপ দিয়েছিলেন বিশ্বজিত্। প্রসেনজিতের বাবাকে দেখতে কী অপূর্ব ছিল না কম বয়সে? আহা প্রাণ ভরে শুনে নিন। এই মেঘলা দিনে একলা....

৭) হেমন্ত মুখোপাধ্যায় শুনলেন। এবার তাহলে আরও একটা মান্না দে, শোনা যাক। কী বলেন। রিমঝিম বৃষ্টি যত পড়ে, ততই তো আমাদের প্রিয় মানুষটাকে আরও মনে পড়ে। আপনারও কি তাঁর কথা মনে করে করে সারাদিন সময় কেটে যায় না?

৮) দেখতে দেখতে সাতটা গান হয়ে গেল কিন্তু। এবার চলে আসি আশা ভোঁসলেতে। ১৯৮৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল পারাবত প্রিয়া ছবিটি। অজয় দাসের সুরে গানটি শুনলে মনটা কী ভালো হয়ে যাবে দেখুন। সেই তাপস পাল কেমন নিষ্পাপ মানুষ ছিলেন না? সঙ্গে মহুয়া। সত্যি, বাংলার রুচি আগে কী ছিল।

৯) শেষ বেলায় হয়ে যাক আর একটা মান্না দে-র গান। তবে, না রাতটা জমবে। বাইরে তাকিয়ে দেখুন তো বৃষ্টির তেজ বাড়ল কিনা? আমার মনে হয় না, আপনার ঘুম আদৌ এসেছে বলে। ঘুম কেটে গেলে, মাঝ রাতে এক কাপ চা খেয়ে নিন। কালকের অফিস? সে দেখা যাবে। আজ রাতটা তো দারুণ কাটান। কাল সকালের কথা না হয়, সকালেই ভাববেন। তাই কী লাভ বলে যে, বরষা তুমি ঝোরো না গো অমন জোরে....

১০) আজকের মতো শেষ গান। অর্থাত্, ১০-এর ১০ নম্বর গানটির পালা এবার। রবীন্দ্রনাথ থেকে নজরুল। সতীনাথ থেকে মান্না দে। লতা মঙ্গেশকর থেকে আশা ভোঁসলে, সবই তো হল। শেষ বেলায় আজকের দিনের একটা গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ুন। অবশ্য প্রেমের কাহিনি মুক্তি পেয়েছে, সেটাও আজ ৮-৯ বছর হয়ে গেল। শানের গলায় ঘেরা মেঘে, বৃষ্টিতে ভাসতে ভাসতে এবার চোখদুটো বুজে ফেলুন। আর বলুন, আজকের এই রাতটা অনেকদিন মনে থাকবে না আপনার? আর আজই কিন্তু শেষ নয়, আগামী তিন মাস এই বৃষ্টি চলবেই। তাই মাঝে-মাঝেই শুনে নেবেন গানগুলো। আশা, এমন বরষার রাত আপনার মনে গেঁথে থাকবে অনেকদিন।