মৃণাল সেনের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির
তাঁর মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে তিন পথিকৃৎ-এর মধ্যে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক আগেই চলে গিয়েছেন, এবার চলে গেলেন মৃণাল সেন। কিংবদন্তী পরিচালকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলা, হিন্দি তথা গোটা দেশের চলচ্চিত্র মহল। মৃণাল সেন সিনেমার ইতিহাসে এক প্রতিষ্ঠানের নাম। শুধু বাংলা, হিন্দি নয়, তেলেগু ওড়িয়া ভাষাতেও সিনেমা বানিয়েছিলেন মৃণাল সেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ লিখেছেন, '' সিনেমা নির্দেশক মৃণাল সেনের মৃত্যুর খবরে আমি মর্মাহত। ভুবন সোম থেকে ক্যালকাটা ট্রিলজি তাঁর নিখুঁত নির্মাণ তাঁকে সমাজের ও সময়ের দর্পণ করে তুলেছে। তাঁর চলে যাওয়া বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমার জন্য একটা বড় ক্ষতি। ''
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরিচালক মৃণাল সেনের মৃত্যুতে শোকবার্তায় লিখেছেন, '' মৃণাল সেন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে যে অবদান রেখে গেছেন, তাঁর জন্য আমাদের দেশ তাঁকে সবসময় স্মরণ করবে। তিনি যে নিরপেক্ষতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে সিনেমার নির্মাণ করেছেন তা উল্লেখযোগ্য। তাঁর চলে যাওয়া শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।''
আরও পড়ুন-মৃণাল তর্পণে বলিউড, দেখুন কী লিখলেন অমিতাভ বচ্চন, মহেশ ভাট, মনোজ বাজপেয়ী, নন্দিতা দাসরা
'রাতভোর' (১৯৫৫) ছবি দিয়ে সিনেমা বানানোয় হাতেখড়ি হয় মৃণাল সেনের। যদিও সেই ছবিটি তেমন সাফল্যের মুখ দেখেনি। দ্বিতীয় ছবি 'নীল আকাশের নীচে' তাঁকে পরিচিতি দেয়। তৃতীয় ছবি 'বাইশে শ্রাবণ' তাঁকে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিষ্ঠা দেয়। তাঁর পরিচালনায় বাংলার দর্শক উপহার পেয়েছে অসামান্য কিছু ছবি। মৃণাল সেনের সৃষ্টির ঝুলিতে রয়েছে 'ভুবনসোম', 'কোরাস', 'মৃগয়া', 'আকালের সন্ধানে', 'পুনঃশ্চ', 'পরশুরাম', 'একদিন প্রতিদিনে'র মতো অসামান্য সব ছবি। তাঁর শেষ ছবি 'আমার ভুবন' (২০০২)। সর্বমোট ২৭টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি, ১৪টি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ও ৪টি তথ্যচিত্রের পরিচালনা করেছিলেন মৃণাল সেন।
কিংবদন্তী পরিচালকের ঝুলিতে রয়েছে ১৮টি জাতীয়, ১২টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার। মস্কো, বার্লিন, কান ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন মৃণাল সেন। ১৯৮১ সালে তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার। ২০০৫ সালে ভারত সরকার প্রদত্ত বিনোদন জগতের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। সাহিত্য ও শিল্পে অনস্বীকার্য অবদানের জন্য তাঁকে কম্যান্ডার অফ দ্য অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস (Ordre des Arts et des Lettres ) সম্মানে সম্মানিত করেছিল ফরাসি সরকার। ফ্রান্সের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান কম্যান্ডার অফ দ্য অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস। মহীরূহের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিনোদন জগতে।
আরও পড়ুন-পুনশ্চ মৃণাল, স্মরণ করলেন সৌমিত্র, মাধবী, অপর্ণা সেন ও অনিরুদ্ধ ধর