Aindrila Sharma, Maitreyee Bhattacharjee : শেষরক্ষা হল না। টানা ২০ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন, তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে রবিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। রবিবার সকালে পর পর বেশ কয়েকবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় ঐন্দ্রিলার। চিকিৎসকরা সিপিআর দিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর এবার চিকিৎসকদের চেষ্টায় সাড়া দিলেন না 'ফাইটার' ঐন্দ্রিলা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

শনিবার সকালেও হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, ঐন্দ্রিলা এখনও ১০০% ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন। ওষুধ দিয়ে তাঁর রক্তচাপ বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। তবে এরই মাঝে ঐন্দ্রিলার প্রেমিক, অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী তাঁর ফেসবুকের দেওয়াল থেকে ঐন্দ্রিলা সংক্রান্ত সমস্ত পোস্ট ডিলিট করে দেওয়ার পরই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অনুরাগীরা। অনুরাগীদের আশঙ্কাই সত্যি হল, সকলকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা।


পর পর ২ বার ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেই সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা। আবার কাজে ফেরা। লড়াইয়ের অন্যতম নাম ঐন্দ্রিলা। দীপাবলির সন্ধ্যাতেও সেজেগুজে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোকময় ছবি পোস্ট করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু তার ১ সপ্তাহের মাথাতেই ১ নভেম্বর ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেতা। ১ নভেম্বর রাতে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁর শরীরের একদিক অসাড় হয়ে যায়। ঘন ঘন বমি করতে থাকেন। অচেতন হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে ছোটেন তাঁর পরিবার ও বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী। সেদিন রাতেই অস্ত্রোপচার হয় ঐন্দ্রিলার। তখন থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। 


মাঝে একবার তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বার করার প্রক্রিয়া শুরু হলেও, শরীরে সংক্রমণ বাড়তেই ফের তাঁকে সি-প্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। মাঝে বাঁ হাত ও চোখের পাতা একটু নাড়ালেও, জ্ঞান ফেরেনি ঐন্দ্রিলার। বিশেষ বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী লিখেছিলেন, তাঁর গলা চিনতে পারছেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর হার্ট রেট তখন বেড়ে ১৩০-১৪০-এ পৌঁছচ্ছে। সব্যসাচীর 'এক্সটার্নাল স্টিমুলি'তে ঐন্দ্রিলার সাড়া দেওয়ার খবরে আশায় বুক বেঁধেছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু না, এই ১৫ দিনে একবারের জন্য জ্ঞান ফেরেনি ঐন্দ্রিলার। কোমাচ্ছন্ন ছিলেন তিনি।


এরপর সোমবার সন্ধ্যাতেই অভিনেতার বিশেষ বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী ঐন্দ্রিলার জন্য 'মিরাকল' প্রার্থনা করে পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সব্যসাচীর ওই পোস্টের পরই সবাই শঙ্কিত হয়ে পড়েন। টলিউডের বিভিন্ন সেলিব্রিটি সহ আপামর সাধারণ মানুষ প্রিয় অভিনেতার দ্রুত সুস্থতা কামনায় 'মিরাকল' প্রার্থনা করে একের পর এক পোস্ট করতে থাকেন। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হতে শুরু করে। মস্তিষ্কে নতুন করে জায়গায় জায়গায় রক্ত জমাট বাধার খবর সামনে আসে। 


আরও পড়ুন-'সে চলে গেলেও থেকে যাবে তার স্পর্শ আমার হাতের ছোঁয়ায়…'



একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০১৫-র ৫ ফেব্রুয়ারি জন্মদিনের দিনই তাঁর শরীরে বেড়ে ওঠা মারণরোগের কথা প্রথম জানতে পারেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর অস্থি মজ্জায় মারণ রোগ বাসা বেঁধেছিল। তারপরই লড়াই শুরু হয় ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি বহরমপুরেই থাকতেন। মেয়েকে নিয়ে দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান বাবা-মা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ঐন্দ্রিলার হাতে বেশি সময় নেই। এরপর একের পর এক কেমো, ইঞ্জেকশন শুরু হয়। শরীর যেন ক্রমশ কুঁকড়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তবে ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। 


২০১৬ থেকে ২০২১, টানা পাঁচ বছর বেশ ভালোই কাটছিল ঐন্দ্রিলা শর্মার। ততদিনে ঐন্দ্রিলার অভিনয় জীবন শুরু গিয়েছে। কিন্তু ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎই ছন্দপতন। আচমকা ডান কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয় ঐন্দ্রিলার। অভিনেত্রী ভেবেছিলেন শোয়ার দোষে হয়তো ব্যথা। তারপর জানা যায়, ডান ফুসফুসে ১৯ সেন্টিমিটারের একটি টিউমার রয়েছে। আবারও শুরু হয় কেমো, সেই যন্ত্রণা। ২০২১-এর প্রায় গোটা বছরটাই ক্যানসারের সঙ্গে কঠিন যুদ্ধ চালিয়ে ফের জয়ী হন ঐন্দ্রিলা। কাজেও ফেরেন ধীরে ধীরে। কিন্তু ২০২২-এর ১ নভেম্বর রাতে ফের ছন্দপতন। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন অভিনেতা।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)