Aindrila Sharma Passes Away : `পাড়ার দস্যি মেয়ে আজ একেবারে শান্ত!`, ঐন্দ্রিলার মৃত্যুতে বিষণ্ণ বহরমপুর
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে কলকাতায় এসে নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করে নিয়েছিল মেয়েটি। অভিনেত্রী হিসাবে জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল সে। অভিনেত্রী হয়ে তাঁর হয়ত আরও অনেকটা পথ চলা বাকি ছিল, তবে নাহ, ২৪-এই থামতে হল ঐন্দ্রিলাকে। তাঁর মৃত্যুতে মন খারাপ বহরমপুরের প্রতিবেশীদের। তাঁদের ভালোবাসা পাওয়া সেই `দস্যি মেয়ে`টি আজ একেবারে শান্ত। কী বলছেন তাঁর ঐন্দ্রিলার বহরমপুরের প্রতিবেশীরা...
AIndrila Sharma Passes Away, সোমা মাইতি : মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে কলকাতায় এসে নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করে নিয়েছিল মেয়েটি। অভিনেত্রী হিসাবে জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল সে। অভিনেত্রী হয়ে তাঁর হয়ত আরও অনেকটা পথ চলা বাকি ছিল, তবে নাহ, ২৪-এই থামতে হল ঐন্দ্রিলাকে। তাঁর মৃত্যুতে মন খারাপ বহরমপুরের প্রতিবেশীদের। তাঁদের ভালোবাসা পাওয়া সেই 'দস্যি মেয়ে'টি আজ একেবারে শান্ত। কী বলছেন তাঁর ঐন্দ্রিলার বহরমপুরের প্রতিবেশীরা...
বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকায় ঐন্দ্রিলার বাড়ি। সেখানকার প্রতিবেশীদের কথায়, ঐন্দ্রিলার সাফল্যে যেমন তাঁরা খুশি ছিলেন, তেমন এই মৃত্যু তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না। এক প্রতিবেশী কাকু বলেন, ' ও পাশেই থাকত, আমার মেয়ের মতোই, মানসিক অবস্থা ভালো নয়। ছোট থেকেই আমার বাড়িতে আসত, যেত, মেয়ের মতোই দেখতাম (গলা ধরে এল)। ওদের বাড়িতে আমার মেয়েরাও যেত। এই খবর শুনব ভাবি না। খেয়ে শুয়েছি, তারপরই এটা শুনছি। আমার মেয়ের সঙ্গে ও খেলত। আমার মেয়ের জন্মদিন, ওর জন্মদিন, সব ছবি আমার কাছে রয়ে গিয়েছে।'
ঐন্দ্রিলার এক প্রতিবেশী জ্যেঠু বলেন, 'ওদের বাড়ির সবাইকেই চিনি। ওর মায়েরও ক্যানসার, ওরও দু'বার হল, তারপর ও সুস্থ হয়ে ফিরেও এল। এই তো বিজয়াদশমীতে আমার বাড়ি এসেছিল, প্রণাম করে গেল। ছোট থেকে চিনি তো, খুবই খারাপ লাগছে তাই। ভালো অভিনয় করত। এখানেও অনেক নাটকে অংশ নিয়েছে। ওর ইন্টারভিউ নিতেও অনেকে এখানে এসেছেন। দু' ঘণ্টা আগে শুনলাম ও মারা গিয়েছে। কাল রাতেও শিখার (ঐন্দ্রিলার মা) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওকে খুব কাছ থেকে চিনি, আমাকে জ্যেঠু বলত। আমাদের একসঙ্গেই বাড়ি হয়েছে। ছোটবেলায় স্কুলে নিয়ে যেতাম।'
আরও পড়ুন-'এমন প্রাণবন্ত একটি মেয়ের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না'
ঐন্দ্রিলার আরও এক প্রতিবেশী কাকু বলেন, 'শেষবার ও যখন দাদাগিরিতে গিয়ে সাফল্য পেল, ওর কাকিমাকে ফোন করে বলেছিল, কাকিমা আমি অ্যচিভ করেছি আমি, আমার কিছু প্রাপ্য আছে। সেটা এখনও আমাদের দেওয়া হয়নি। সবথেকে বেশি আবদার ও আমাদের কাছেই করত। বলত, এটা খাব, ওটা করতে হবে, ওখানে যেতে হবে। হলির সময় এলে বাচ্চাদের মধ্যে ওই সবকিছু ঠিক করত, কী কী রং আনা হবে। পাড়ায় ও দস্যি মেয়ে ছিল, তবে খুব তাড়াতাড়ি অপরকে নিজের আত্মীয়র মতো ভেবে নিত, মিশে যেতে পারত। শেষবার ডাক্তারবাবুর মানে ওর বাবার কথা হয়েছিল, কিন্তু ফোন কেটে যায়। ওকে শেষবার তো একবার দেখতে চাই...'
আরও পড়ুন-'সে চলে গেলেও থেকে যাবে তার স্পর্শ আমার হাতের ছোঁয়ায়…'
মাত্র ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু হয়েছিল যুদ্ধ। একবার নয়, দু-দুবার মারণ রোগের ছোবল থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে মৃত্যুকে হারিয়েছে সে। এবারও যুদ্ধ থামল তবে এবার আর হাসিমুখে ফিরল না প্রাণোচ্ছ্বল মেয়েটি, যাঁর মুখে সবসময় লেগে থাকত হালকা হাসি, যাঁর অদম্য জেদের সামনে হার মেনেছিল মারণরোগও। অবশেষে যার ফিরে আসার কথা ছিল সে চলে গেল, থেকে গেল তার স্পর্শ। সব প্রার্থনা মিথ্যে করে মাত্র ২৪ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। ১ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই থেকেই হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। ফিরে আসার অদম্য চেষ্টা করেছেন। তবে সেই সব চেষ্টা, বিগত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রার্থনা সব আজ ব্যর্থ।