পূজা বসু দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বছর শেষকেই টার্গেট করেন আমির খান। ডিসেম্বরের শেষে, হাল্কা মুডে তাঁর ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে গোটা দেশ। ছবির ব্যবসাও হয় সেই রকম। একশ-দুশো-তিনশো কোটি! এই বছরেও হল না ব্যতিক্রম। দঙ্গল-এ মেয়েদের জয় দিয়ে এবার আমিরের চমক। সত্যমেব জয়তে করার সময়ই খোঁজ পান মহাবীর সিং ফোগতের। সেই থেকেই এই গল্প পছন্দ টিম আমিরের। মহাবীরের দুই মেয়ে, গীতা-ববিতাকে স্ক্রিনের জন্য তৈরি শুরু করেন আমির। অভিনেত্রী নাকি কুস্তিগীর, দেখে বোঝার উপায় নেই অনস্ক্রিন মেয়েগুলিকে। এমনই হয়েছে তাঁদের ট্রেনিং। ছবির গল্প সবারই জানা। উইকিপিডিয়ায় সার্চ করলেই জানা যাবে মহাবীর সিং ফোগতের জীবনী। তাহলে স্ক্রিপ্টে কি চমক থাকলে, নিজের অভিনবত্ব বজায় রাখতে পারেন আমির খান। এখানেই তাঁর বাজি, দেশ প্রেম এবং ভারতীয় মেয়েদের অনুন্নয়ণ। নিজেদের মানুষ হিসেবে গড়ার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত দেশের মেয়েরা। বাবা-মায়েরাও ভেবে উঠতে পারে না, মেয়েদের ভবিষ্যত্‍ নিয়ে। মেয়ে মানেই বিয়ে-সংসার-সন্তান। এই স্বপ্নগুলি নিয়েই বেঁচে থাকে ভারতীয় মেয়েরা। এর বাইরেও যে একটা জগত আছে, ধরাই পড়ে না তাদের কাছে। এটাই আমিরের সম্বল। এর জন্যই তো তিনি মহাবীর সিংকে পর্দায় এনেছেন। যেই মানুষটি প্রতন্ত গ্রামে থেকেই, মেয়েদের কুস্তিগীর করার স্বপ্ন দেখেছেন, সেই মানুষটিকে যোগ্য সম্মান না দিলে হয়। ছবিতে আরও একটি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে, যা হল বাবা মেয়ের সম্পর্ক।


আরও পড়ুন ব্ল্যাক ক্যাপদের কাছে হোয়াইট ওয়াশ বাংলাদেশ


এতদিন বড় পর্দায় বাবা ছেলের সম্পর্ক দেখেই অভ্যস্ত আমরা। এবার পুরোটাই মেয়েদের নিয়ে, মেয়েদের জন্য। মহাবীর দেশের হয়ে কুস্তি লড়েছেন। জিতেছেন। কিন্তু দেশের জন্য খেলতে না পারার আক্ষেপ তাঁকে পীড়া দেয়। তাই তিনি চান তাঁর ছেলেরা তাঁর আশাপূরণ করবে। কিন্তু পুত্র নয়, কন্যা সন্তান হয় তাঁর। কিন্তু মেয়েদের লড়াকু মনোভাবে, স্থির করেন, মেয়েরা তাঁর জয়ের আশা পূরণ করবেন। শুরু হয় লড়াই। এক বাবার লড়াই। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি দিয়েই এগিয়ে নিয়ে যান তাঁর স্বপ্ন। মনের মত করেই গড়ে তোলেন তাঁর মেয়েদের। জিতে বাবাকে সম্মানও জানায় গীতা ববিতা। কিন্তু কখনও মনে হয়, বাবাকেও ছাপিয়ে যায় তাঁর বড় মেয়ে। সংঘাতের বাতাবরণে এগোয় গল্প। তবে বাবাকে অস্বীকার করে তো চলা সম্ভব নয়। এমন বাবা যার বেঁচে থাকার অর্থই মেয়েদের বিশ্ব দারবারে জয়।


আরও পড়ুন  যুবরাজ এবং রায়না খেলবেন ডি ওয়াই পাতিল টি২০ প্রতিযোগিতায়


বাবাই যে মেয়েদের একটা বিরাট ভরসার জায়গা, সেটা এই ছবি আরও একবার , সুন্দরভাবে সামনে এল। ছবিতে যে কুস্তি দেখানো হয়েছে, একবারের জন্যও মনে হয়নি, সেটা মেকি। বাবা হিসেবে ছবি জুড়ে আমিরের একাগ্রতা, মনে করাচ্ছিল ছবির বাইরে একই ভাবে প্রজোযোক আমিরের একাগ্রতার কথা। ছবির জন্য যেভাবে শরীরকে গড়েছেন, ভেঙেছেন, সেটা তাঁর পক্ষেই সম্ভব। বুড়ো বয়সের থলে থলে শরীর প্রর্দশন, তিনিই করতে পারেন। চরিত্রের স্বার্থে সুপারস্টার আমিরই এরকম চেহারা পর্দায় দেখানোর সাহস দেখাতে পারেন। পারেন নিজের সময় কমিয়ে, ছবির গীতা ববিতাকেই রেখেছেন ছবির সিংহভাগ জুড়ে। এটাই তো পারফেকশনিস্টের পরিচয়। নিজের উপস্থিতি রয়েছে, তবে আড়ালে। এবার তাঁর দেশ প্রেমের কথা। বারবার একই বার্তা দেশের জন্য সোনা জয়। অর্থাত্‍ জগত সভায় ভারতের শ্রেষ্ঠ আসন জয়। আর যভাবে সেই জয়টা এল তাঁর ছবিতে, তাতে শুধু হাততালিতেই থামল না হলের দর্শক। তাঁদের সিট ছেড়ে উঠতে বাধ্য করলেন আমির। প্রতিবার এক এক রকম চমক আনেন এই অভিনেতা। যা স্ক্রিনে তো বটেই, স্ক্রিন ছাপিয়ে যায়। একাত্ব হয় দর্শক। এবার ভারতীয়দের জন্য ছবি উপহার দিলেন আমির, বুঝিয়ে দিলেন, এই দেশের মেয়েরাই তো দূর্গার আরেক রূপ।