পরিচালনা – হোমি আদাজানিয়া


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অভিনয়ে – ইরফান খান, রাধিকা মদন, দীপক ডোবরিয়াল, কিকু সারদা, রণবীর শোরে, ডিম্পল কাপাডিয়া, করিনা কাপুর খান


সঙ্গীত পরিচালনা – সচিন-জিগর. তনিষ্ক বাগচি


শর্মিষ্ঠা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায় : ইরফান খানের দ্বিতীয় ইনিংসের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলেই। নিউরো-এন্ডোক্রাইন টিউমার ধরা পড়ার আগেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল দীনেশ বিজন প্রযোজিত ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ছবির। বিদেশে চিকিত্‍সা করিয়ে ফেরত এলেন ইরফান। কাজ শেষ করলেন এই ছবির। এটি যে ছবির সিক্যুয়েল, সেই ‘হিন্দি মিডিয়াম’ বক্স অফিস হিট। তাই এই ছবির প্রতি আগ্রহ আরও বেশি ছিল।


উদয়পুরের চম্পক বনসল (ইরফান খান), এক অখ্যাত মিঠাই বিক্রেতা।সারাক্ষণ দ্বিধায় ভোগেন। একইসঙ্গে সিঙ্গল পেরেন্ট। মেয়ে তারিকার (রাধিকা মদন) স্বপ্ন লন্ডনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার। মেয়ের স্বপ্নপূরণের এক অসাধ্য সাধনের গল্প লিখেছেন ছবির চার লেখক। তাই কি গল্পে এত অসঙ্গতি! কথায় বলে, অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট। এক্ষেত্রে হলও তাই।


মেয়ের বিদেশের পড়াশোনার স্বপ্ন সাজাতে গিয়ে সবথেকে বড় ভুলটি করলেন চম্পক। কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে গন্ডগোলে জড়ালেন। অধ্যক্ষের সেশন-কোর্ট জাজ স্বামীকে সবার সামনে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করে। কলেজের প্রিন্সিপাল যখন তারিকার নাম স্কলারশিপ থেকে বাদ দিয়ে দেন, তখন আবেগের বশে চম্পক সিদ্ধান্ত নেন, যেমন করেই হোক, মেয়েকে বিদেশে পড়তে পাঠাবেনই। আর এখান থেকেই শুরু হয় চিত্রনাট্যের খামতি। এক আজগুবি পদ্ধতিতে এসে হাজির হন চম্পকের NRI বন্ধু রণবীর শোরে। লন্ডনে পৌঁছে ইরফান ও তাঁর ভাইকে (দীপক ডোবরিয়াল) আটক করে পুলিস। তাঁদের বিরুদ্ধে তেমন গুরুতর কিছু না পেয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় ভারতে। তারিকা (রাধিকা মদন) যদিও ইমিগ্রেশন পার হয়ে যায়। ভারতে ফিরে চম্পক ও তার ভাই দুবাই হয়ে পাকিস্তানি নাগরিকের পরিচয়ে জাল পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে ফের হাজির হয় লন্ডনে। এবার টোনির (পঙ্কজ ত্রিপাঠি) সহায়তায় পার হয়ে যায় ইমিগ্রেশনও। কিন্তু এরপরের গল্প এত অবাস্তব যে ততক্ষণে দর্শক ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন। চিত্রনাট্যের বাঁধুনি এতই সামঞ্জস্যহীন যে, করিনা কাপুর খান ও ডিম্পল কাপাডিয়া পর্দায় এসেও ছবির রাশ ধরতে পারলেন না।



এ ছবি দাঁড়িয়ে আছে চতুষ্কোণের পারফরম্যান্সের উপর। ইরফান-দীপক-রণবীর-কিকু সারদা জমিয়ে দিয়েছেন। কমেডি টাইমিং দিয়েই ছবিকে একটা পর্যায়ে বেঁধেছেন। ছোট্ট একটা চরিত্রে সিক্সার পঙ্কজ ত্রিপাঠির। তবে ইরফানের কন্যার ভূমিকায় রাধিকা মদন সুনাম বজায় রাখতে পারলেন না। এটি রাধিকার তৃতীয় বলিউড প্রজেক্ট। প্রথম ছবি ‘পটাকা’তে সেরা নবাগতা হয়েছিলেন। পরের ছবি ‘মর্দ কো দর্দ নহি হোতা’তেও তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শক। কিন্তু ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র পেয়েও সফল হতে পারলেন না তিনি।করিনা কাপুর খান বরং পুলিসের চরিত্রে মানানসই।


যে হোমি আদাজানিয়ার ঝুলিতে ‘বিইং সাইরাস’, ‘ফাইন্ডিং ফ্যানি’, ‘ককটেল’-এর মত ছবি রয়েছে, প্রশ্ন ওঠে তিনি কীভাবে এমন একটা চিত্রনাট্য পরিচালনা করতে রাজি হলেন! যে ছবির চালকের আসনে খোদ পরিচালকের বসার কথা, দিশাহীন চিত্রনাট্যে যেন ড্রাইভিং সিটে জোর করে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ইরফান খানকে, যার খালাসির ভূমিকায় দীপক ডোবরিয়াল।