Aparajito: সত্যজিৎ ঘরানাতেই `অপরাজিত`-র লোগো, পরিচালক জানালেন নেপথ্য কাহিনি
`কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় কেহনা``- বলা যায় এই লাইন দুটিই তাঁর লোগো তৈরিতে কিছুটা ইন্ধন যুগিয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বাংলা সিনেমার উজ্জ্বলতম নক্ষত্র সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray)। সিনেমার মাধ্যমে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবেন পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta)। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘পথের পাঁচালী’ ছবির প্রেক্ষাপটেই ‘অপরাজিত’ (Aparajita) তৈরি করছেন অনীক।
এবার সামনে এল 'অপরাজিত' ছবির লোগো। সত্যজিৎ রায়ের ঘরানাকে বজায় রেখে, এই ভাবনার খসড়া করেছেন পরিচালক। নিজেই প্রকাশ্যে আনলেন লোগো তৈরির নেপথ্য কাহিনি। ''কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় কেহনা''- বলা যায় এই লাইন দুটিই তাঁর লোগো তৈরিতে কিছুটা ইন্ধন যুগিয়েছে।
পরিচালক জানিয়েছেন, যদি লোগো শব্দটিকে ইংরেজি Logo শব্দে রূপান্তরিত করে নিই তাহলেও "Logo কা কাম হ্যায় কেহনা " বাক্যবন্ধটির একটা স্বাধীন অথচ গুরুত্বপূর্ণ মানে তৈরি হয়। Logo-র কাজই তো হল কিছু না কিছু বলা। এখানে ছবির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। লোগোর মাধ্যমেই ছবি সম্পর্কে দর্শককে অবগত করার চেষ্টা।
অনীক দত্ত বললেন, ''আমার প্রথম ছবি থেকেই ছবি তৈরির সঙ্গে সঙ্গে এই লোগো বা প্রচার নকশার প্রতি আমার আগ্রহ ও উৎসাহ বজায় থেকেছে। এই কাজটা করে আমি সৃজনশীলতার দিক থেকেও খুব আনন্দ পেয়েছি। আমি যন্ত্র ব্যবহারে খুব পারদর্শী নই বলে, প্রাথমিক ভাবে আমার চিন্তা ভাবনাটাকে পেনসিলে খসড়া করে নিয়ে তারপর গ্রাফিক ডিজাইনারদের সাহায্য নিই কাজটাকে শেষ করার জন্যে। 'অপরাজিত' ছবিটির ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি।''
''সত্যজিৎ বাবু সেই ছবি তৈরির সময় তাঁর অনমনীয় জেদকে সম্বল করে, যে অজস্র প্রতিকূলতা অতিক্রম করে অপরাজিত থেকে তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেছিলেন, তা এ ছবির মূল প্রতিপাদ্য এবং 'অপরাজিত' নামটি তারই সূচক। আমার বলা বাহুল্য যে, 'পথের পাঁচালী' শুধু বাংলা বা ভারতীয় সিনেমা নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রের এক নতুন দিশারি হয়ে উঠেছিল। আমাদের ছবিতে বাস্তব চরিত্রদের নাম ও ঘটনার বিবরণ আমরা খানিক পালটে নিয়েছি। তাই এখানে মূল চরিত্রের নাম অপরাজিত রায় আর তিনি যে ছবিটি করছেন তার নাম পথের পদাবলী।''
লোগো তৈরির গল্প বলতে গিয়ে পরিচালক জানান, অনেক খুঁজে কাপুরুষ-মহাপুরুষ ছবির টাইটেল কার্ড থেকে আমি একটা আদল খুঁজে পেলাম যা আমার ছবির লোগো তৈরির জন্য খুব প্রাসঙ্গিক মনে হল। 'অপরাজিত' নামটা লেখা তো হল; এবার মূল প্রশ্ন এটা এরকম সরলীকৃতই থাকবে নাকি উনি যেমন করে বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করতেন, সেই পথেই আমরা এগোনোর চেষ্টা করব। বছর খানেক আগে এই ছবিটির ঘোষণার সময়ে আমি অত্যন্ত তাড়াহুড়ো করে যেটুকু করতে পেরেছিলাম তাতে, 'জ' এ 'ই' এর যে অর্ধচন্দ্রাকার টান রয়েছে সেখানে ট্রেনের ধোঁয়া ব্যবহার করেছিলাম। কারণ 'পথের পাঁচালী' ছবির স্মরণীয়তম অংশগুলোর অন্যতম হল অপু-দুর্গার ট্রেন দেখতে যাওয়া। এবারে নতুন করে লোগোটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে মনে হল, আরও কিছু উপকরণও ব্যবহার করা যায়। আর তা যেন মূল লোগোর সঙ্গে আরেকটু সম্পৃক্ত হয়ে ওঠে।
এছাড়াও আমাদের ছবির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল একটা ছবির শ্যুটিং অর্থাৎ উপাদান প্রচুর। কিন্তু আমি চাইছিলাম তার ব্যবহার হবে খুব সূক্ষ্ণ ভাবে যাতে প্রক্ষিপ্ত না মনে হয়। এই সময়ের শিল্পী সমীর আইচের ছেলে রাজের সঙ্গে কথা হল, সে নিজেও একজন গ্রাফিক শিল্পী। রাজের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা ট্রেনের ধোঁয়াকে 'ই' তো রাখলাম, সঙ্গে ট্রেনের কামরাগুলো হল মাত্রা। ভাই-বোন চলে এল 'অ'-এর অলঙ্করণের অংশ হয়ে। আর শেষকালে মিচেল ক্যামেরা যা দিয়ে 'পথের পাঁচালী' শ্যুট হয়েছিল, সেই ক্যামেরার আভাস এল 'প' এর ফাঁকা জায়গায়। তবে পুরোটাই খুব সম্পৃক্ত ভাবে একেবারেই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বা আলাদা করে নিম্নরেখ করা নয়।
তিনি আরও বলেন, এর সঙ্গে আমাদের ইংরেজি টাইটেল হল The Undefeated, আসল অপরাজিত-র ইংরেজি নাম ছিল The Unvanquished. এই ইংরেজি নামের ক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করলাম Ray Roman Font যেটাও সত্যজিৎ রায়েরই তৈরি করা এবং এ প্রসঙ্গে এ কথা না বলা অপরাধ হবে যে এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে শ্রী সন্দীপ রায়ের অপরিসীম সহযোগিতা, অনুমতি ও অকৃত্তিম উৎসাহের জন্য।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)