জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পরিচালক-অভিনেতা অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছেন এক অভিনেত্রী। মহিলা কমিশনে এই বিষয়ে অভিযোগ জানানোর পর তাঁকে ডিরেক্টর্স গিল্ড থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এরপর অরিন্দমের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছেন সেই অভিনেত্রী। এই বিষয়ে এতদিন মুখ খোলেননি অরিন্দমের স্ত্রী শুক্লা দাস। অবশেষে তিনি এক গণমাধ্য়মে স্বামীর হয়ে ব্য়াট ধরেছেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২৬ বছরের বেশি সময় ধরে অরিন্দমের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন শুক্লা। এই কথা জানিয়েই তিনি বলেছেন, 'সেই ১৯৯২ সাল থেকে আমি অরিন্দমকে চিনি। আমরা সম্পর্কে রয়েছি ২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে। সিনেমা তৈরি এবং অভিনয়ের প্রতি প্রথম থেকেই ওর একটা ভালোবাসা রয়েছে। ১৯৯৯ সালের আগে অরিন্দম একটি বড় সংস্থায় চাকরিও করতে। তারপর আমিই বলি দু'নৌকায় পা দিয়ে চলা যায় না। বলেছিলাম যে, আমি চাকরি করি, সামলে নিতে পারব। সুতরাং ঝুঁকি নেওয়ার আত্মবিশ্বাস ছিল ওর। এত বছরে অনেক বড় বড় সিনেমার সঙ্গে অরিন্দমের নাম জড়িয়েছে। আমি সবাইকে স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, ও যখন অভিনয় করত তখন আমি অরিন্দমের ফ্লোরে যেতাম। আর এখন পরিচালক অরিন্দমের ফ্লোরেও আমি যাই। আমি জানি ও কী করে কাজ করে!'


আরও পড়ুন: 'জোর করে কোলে বসায়, শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত দেয়...', FIR অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে!


ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কীভাবে অভিনয় করতে হবে, তা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন অরিন্দম। করিয়ে দেন রিহার্সালও। এই প্রসঙ্গে শুক্লা বলেন, 'চিত্রনাট্য তৈরির সময় থেকে অরিন্দমের সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকি। আমি জানি ও যে কোনোও সিনেমার দৃশ্য অভিনয় করে দেখায়। ঘনিষ্ঠ দৃশ্য অনেক সময় নবীন অভিনেতাদের অভিনয় করেও দেখিয়ে দিতে দেখেছি। এমনকী অনেক অভিজ্ঞ অভিনেতারাও অরিন্দমকে বলেন যে, দৃশ্যটা অভিনয় করে দেখিয়ে দিতে। শ্যুটিংয়ে এমন অনেক ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ও রিহার্সালের সাক্ষী আমি। অরিন্দম যে শুধু অভিনেত্রীদের অভিনয়ে করে দেখায় তেমনটা নয়। পুরুষ অভিনেতাদের ক্ষেত্রেও ও  একইভাবে বুঝিয়ে দেয়।'


যে দিনের ঘটনা নিয়ে অরিন্দমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে দিনের বিহাইন্ড দ্য সিনের ভিডিও দেখেছেন শুক্লা। সেই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, 'যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এত অভিযোগ, ওদিন ফ্লোরে ছিলাম না। কিন্তু সেখানে কী হয়েছিল তার সবকিছুই আমার জানা। কারণ, ও সব সময় সিন, বিহাইন্ড দ্য সিনের ভিডিও আমার সঙ্গে শেয়ার করে। আমি সবটা জানি সে দিন কী হয়েছিল! হতে পারে সেই অভিনেত্রী নতুন। এত বড় বাজেটের সিনেমায় অভিনয় করছেন, তাই হয়তো ভয় পেয়েছেন। সে জন্য ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। অস্বস্তি বোধ করেছিলেন। কিন্তু যখন চিত্রনাট্য তিনি শুনেছিলেন তখনই তার বোঝা উচিত ছিল, তাকে ঠিক কী করতে হবে। ওই দৃশ্যে লেখাই ছিল ‘গভীর চুম্বন’। উনি অস্বস্তি বোধ করতেই পারেন।'


অরিন্দম শীলকে ফাঁসানো হয়েছে বলেই মত শুক্লার। তাঁর সংযোজন, '৩ এপ্রিলে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে, এতদিন পরে কেন অভিযোগ জানালেন নায়িকা? আমিও অনেক বড় সংস্থায় কাজ করেছি। আমি জানি ঠিক কী কী ঘটতে পারে!  আমি সত্যিই জানি না ঠিক কী কারণে ওই অভিনেত্রী এমনটা করেছেন। কেউ ওকে প্রভাবিত করেছেন এমনটাও হতে পারে। আমি জোর গলায় বলতে পারি, অরিন্দমের ৩৫ বছরের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে। অরিন্দমের সব নায়িকাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। একটা ভিত্তিহীন ঘটনার ভিত্তিতে ওর দিকে প্রশ্ন তোলা কখনই উচিত নয়। ওকে ফাঁসানো হচ্ছে। লীনা গঙ্গোপাধ্য়ায় একদিকে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। অন্যদিকে আবার প্রযোজক এবং পরিচালকও। তারই সিরিয়ালে অভিনয় করেন ওই নায়িকা। কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছে না যে, স্বার্থের সংঘাত হয়েছে! মনে হয় না তিনি পক্ষপাতদুষ্ট হবেন? এই দিকটা তো কেউ ভেবেই দেখেননি।'


শুক্লা এও মনে করেন, এই বিষয়ে অরিন্দমের নায়িকা জয়া আহসান এবং কোয়েল মল্লিকের সঙ্গেও কথা বলা উচিত। শুক্লা বলেছেন, 'আমার তো মনে হয় অরিন্দমের সিনেমার সব নায়িকা, জয়া আহসান থেকে শুরু করে কোয়েল মল্লিক, সকলের সঙ্গে কথা বলা উচিত। এর আগে কোনও নায়িকা এমন কোনও অভিযোগ আনেননি। মহিলা কমিশনে যখন অরিন্দমকে ডাকা হয় নিয়ম অনুযায়ী, সেই কথাবার্তার পরে সেই সভার সব কথোপকথনে রেকর্ডে সবার সই করার কথা। কিন্তু সেটাও তো হয়নি। বরং, শুধু অরিন্দমের উপর চাপ সৃষ্টি করে চিঠিতে সই করানো হয়েছে মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে। ওকে জালে ফাঁসিয়ে ওই সই করা চিঠি পাঠানো হয় ডিরেক্টর্স গিল্ডে। পুরো ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত লাগছে।'


স্বামী অরিন্দমকে ‘ভালো মানুষ’ উল্লেখ করে শুক্লা  বলেছেন, ‘অরিন্দম তো ভালো মানুষ, জোর করাতেই মেনে নেয়। আমি অবাক কেন এমন হচ্ছে! আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হচ্ছে ওঁর (লীনা গঙ্গোপাধ্য়ায়) কোন যোগ্যতায় এমন গুরুত্বপূর্ণ পদটি পেয়েছেন! অরিন্দম পরিস্থিতির শিকার। আমি বলে দিচ্ছি, ও ভালো মানুষ বলে সরি বলেছে। কারণ, ওর মনে হয়েছে বিতর্ক বাড়িয়ে কোনও লাভ নেই। অরিন্দম নারীদের সম্মান করতে জানে। আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না, কীসের ভিত্তিতে এই ঘটনা ঘটল!' এখন দেখার এই ঘটনা কত দূর গড়ায়!


 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)