Debarati Mukhopadhyay, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিরল রোগে আক্রান্ত জনপ্রিয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়। বিজয়া দশমীর পর থেকেই পায়ে সাড় পাচ্ছিলেন না তিনি, এরপর ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবারতি। পা, হাঁটু থেকে শুরু করে গলা অবধি সারা শরীরই প্যারালাইজড হয়ে যায় লেখিকার। কিন্তু কী থেকে হঠাৎ এক প্রাণোচ্ছ্বল মেয়ে প্যারালাইজড হয়ে গেলেন তার কারণ কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকরা। সব রুটিন রিপোর্ট ঠিক আসায় তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল এক হাসপাতালও। তারপর বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কোন রোগের প্রকোপে এই অবস্থা হয় লেখিকার তা বের করতে ৭ দিন সময় লেগে যায় চিকিৎসকদের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লেখিকার কথায়, ‘প্রায় উল্কার গতিতে শুরু হয় আমার শারীরিক অবনতি। চোখ ঝাপসা হচ্ছে, গলা পেরিয়ে ফুসফুস তখন অচল হতে শুরু করেছে। তীব্র শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন ৮০ এর ঘরে, আমি জ্ঞান হারিয়েছি। আমায় ICU তে পাঠিয়ে অভিজ্ঞ রিউম্যাটোলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট, পালমনোলজিস্টদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে টিম। নার্ভ কনডাকশন টেস্টের পর তাঁরা জানালেন, তাঁরা একটি বিরল রোগের আশংকা করছেন, আশংকা সত্যি কিনা তার জন্য কোমরের হাড় ফুটো করে করতে হবে Lumber Puncture Test. অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক সেই পরীক্ষা করতে হবে এখনই। সবই হয়। ডাক্তারদের আশংকা সত্যি করে রিপোর্ট আসে। আমার যে অসুখটি হয়েছে, তার নাম গুলিয়ান ব্যারি সিনড্রোম, সংক্ষেপে G B Syndrome. ডাক্তাররা জানালেন, এই রোগে শরীরের নীচ থেকে অবশ হওয়া শুরু হয়, অত্যন্ত দ্রুত এগোতে থাকা সেই প্যারালিসিস ধীরে ধীরে প্যারালাইজ করে দেয় ব্রেইন থেকে ফুসফুস সব। ডাক্তাররা এও জানালেন, এই রোগ ১৮৫৯ সালে আবিষ্কৃত হলেও অত্যন্ত বিরল ছিল। কিন্তু একুশ শতকের পৃথিবীতে এই রোগ ক্রমশ বাড়ছে। কারণ? দূষণ, ভেজাল খাবার কিংবা নতুন কোন ভ্যাক্সিন, অনেক কিছু হতে পারে। এই রোগে দেহের ইমিউনো সিস্টেম নিজেই নিজের শত্রু হয়ে উঠে ক্রমশ নিজের দেহের ইমিউনিটি ধ্বংস করতে থাকে। পরিণাম মাল্টি অর্গান ফেলিয়োর, মৃত্যু... কোনভাবেই কিছু না হওয়ায় আমায় ভেন্টিলেশনে দেওয়া হল। কৃত্রিম সেই শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে চলতে লাগল IVIG treatment... পাক্কা সাতদিন পর ভেন্টিলেশন খোলা হল আমার। ডাক্তাররা জানান, আমি নাকি 'মিরাকুলাস ফাইট' করেছি! একটু জন্য ব্রেইন বেঁচে গেছে আমার। আমার এখন হাতদুটো ছাড়া সবই অবশ। তবু সারাদিন চেষ্টা করে যাই কথা বলার, পা নাড়ানোর। কবে অফিস যেতে পারব, স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারব, জানি না। আমি লড়ছি। ডাক্তাররা বলছেন, পুরোপুরিভাবে সুস্থ হতে তিন চারমাস লাগবে। কিন্তু প্রয়োজন vigorous ফিজিওথেরাপির।’



কেমন আছেন দেবারতি? অনুরাগীদের নিজেই জানালেন সে কথা। তিনি লেখেন, ‘বাড়ি ফিরলেও আমার মুখের পেশী অসাড়, একদিকটা বেঁকে আছে এবং নিম্নাঙ্গ এখনো অনেকটাই অবশ। তবে আমি এখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও বসতে পারছি। দিনে দুবার ফিজিওথেরাপি চলছে। আশা করি, মাসখানেকে দাঁড়াতে পারব’।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)