নিজস্ব প্রতিবেদন:  গোটা বিশ্বজুড়ে বিষ নিঃশ্বাস ফেলছে করোনা মতো ভয়ঙ্কর ভাইরাস। কঠিন এই পরিস্থিতিতে সরকার থেকে বারবার সাধারণ মানুষের কাছে বাড়িতে থাকার আবেদন করা হচ্ছে। একসঙ্গে বেশি মানুষকে জড়ো হতে বারণ করা হচ্ছে। করোনার মতো ভয়ঙ্কর এই ভাইরাসের থাবা থেকে যাতে এই সমাজ তথা গোটা বিশ্বকে শেষ না করে ফেলতে পারে, তারই চেষ্টা চলছে। গোটা বিশ্বের কাছে এ এক কঠিন লড়াই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন তারকারাও। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদ মাধ্যম, বিভিন্নভাবে তাঁরা তাঁদের মতো করে মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরিচালক, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়, রাহুল বন্দ্য়োপাধ্যায়, তুহিনা দাস থেকে অনেকেই মানুষকে বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেছেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কে কী বলেছেন...


সৃজিত মুখোপাধ্যায় (পরিচালক)


আশাকরি সবাই ভালো আছেন, আমিও ভালো আছি, গৃহবন্দি রেখেছি নিজেকে। কাকাবাবুর শ্যুট শেষ করে ফেরার পর ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গিয়েছে, এখনও কোনও মানুষ চোখে দেখিনি। জেলের কয়েদিদের মতো দরজার বাইরে খাবার দিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজের প্লেট নিজে ধুচ্ছি। জামাকাপড় অনেক আছে, সেটাই পড়ছি। প্রচুর বই পড়ছি, চিত্রনাট্য লিখছি। যেটা চিন্তার বিষয়, বাকিরা অনেকেই বাইরে ঘোরাফেরা করছে, কেউ সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। এটা মারাত্মক একটা জায়গায় যাচ্ছে, যে ভাবেই হোক স্টেজ থ্রিতে যাওয়া থেকে এই ভাইরাসকে আটকাতে হবে, ব্যক্তি থেকে সমাজে, সকলের কাছে আবেদন, দয়া করে বাড়িতে থাকুন, দুসপ্তাহ বাড়িতে থাকলে খুব ক্ষতি হবে না পড়াশোনা, অফিসের কাজ বাড়িতে থেকে করুন। রাজ্যকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান, বিশ্বকে বাঁচান। এই ভাইরাসটিকে নতুন বাহক পেতে দেবেন না। আটকান...


অরিন্দম শীল (পরিচালক)


গোটা বিশ্বজুড়ে মানুষ নিজেদের মতো করে লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই লড়াই নিজেদের অস্তিত্বের জন্য, বেঁচে থাকার ও ভালো থাকার জন্য। লড়াইটা একটা অদ্ভুত শক্তির সঙ্গে, যাকে দেখা যায় না, অথচ সারা বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকার নিয়েছে। যার অভিজ্ঞতা আমাদের আগে নেই। এই সময় আমাদের দরকার নিয়মানুবর্তীতা। যা বলা হচ্ছে পালন করুন। সব থেকে আগে যেটা দরকার নিজের বাড়িতে থাকা, কাজকর্ম যতটা সম্ভব নিজের বাড়ি থেকে করা। জনতা কার্ফুর জন্য রবিবার কেউ বাড়ি থেকে বের হবেন না, ভারতবর্ষের কোনও মানুষ বাড়িতে থেকে বের হবেন না। তবে এটা একটা নমুনা মাত্র, আমাদের আরও বেশ কয়েক সপ্তাহ এটা করে যেতে হবে। আমিও আমার বাড়িতেই রয়েছি, কোনও রকম সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়।


 অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় (অভিনেতা)


একজন দায়িত্ববান ও সচেতন নাগরিক হিসাবে জরুরী, নিজেকে বাড়িতে বন্দি রাখা। একান্তই জরুরী না হলে বাইরে বের হবেন না। বিগত বেশকিছুদিন ধরে আমিও সেটা করারই চেষ্টা করছি। গান শুনে, সিনেমা দেখে এবং আমার ৪টে পোষ্য আছে, তাদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে। এই দেশ খুব কঠিন সময় দাড়িয়ে রয়েছে। আমরা এখনই প্রতিরোধ না করলে এর পরিণাম ইতালি কিংবা চিনের মতো হবে। এটা কাম্য নয়। বেশিরভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটচ্ছেন, কোনও হোয়াটসআপ ফরোয়ার্ড বা ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার আগে একটু সত্য়তা যাচাই করে নিন। আজকে জনতা কার্ফু, ৫টার সময় বারান্দায় গিয়ে কী বাজাবো এখনও জানি না। তবে সাধুবাদ প্রাপ্য সেই চিকৎসক, পুলিস প্রশাসন, সাংবাদিক তথা আরও বেশকিছু নাগরিকদের যাঁর এই পরিস্থিতিতেও কাজ করে যাচ্ছেন। 


রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় (অভিনেতা)


পৃথিবী ভীষণই কঠিন সময়য়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আর কঠিন সময় আমাদের কিছু কঠিন পথ বেছে নিতে হয়। আমরা চাই বা না চাই, আমাদের এখন একটাই কাজ, বাড়িতে থাকা, এবং যা যা বিধিনিষেধ আমাদের কাছে আসছে সেগুলো মেনে চলা। জনতা কার্ফু এমনই একটা জিনিস, যেদিন আমাদের সারাটা দিন বাড়িতে থাকতে হবে। বাড়িতে থাকাটা অবশ্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভীষণ প্রয়োজনীয়। দয়া করে এটা মেনে চলুন, অনুরোধ করছি, আপনি হয়ত সুস্থ আছেন, তবে আপনি না মানলে কিছু অসুস্থ মানুষও বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়তে পারে। কাজেই নিজের কথা ভাববেন না, গোটা সমাজের কথা ভাবুন, দেশের কথা ভাবুন,  মানুষের কথা ভাবুন।


বিক্রম চট্টোপাধ্যায় (অভিনেতা)


এই মুহূর্তে গোটাবিশ্ব একটা কঠিন পরিস্থতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এটা আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে, যদি আমরা সচেতন না হই। সরকার, চিকিসক, সাংবাদিক বন্ধুরা আরো ও অনেকেই নিজের জীবনের বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব আমরা নিজেরা সুরক্ষিত থাকি। দয়া করে বাড়ির বাইরে বের হবেন না। বের হতে হলে, মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার নিয়ে বের হোন। বারবার হাত ধুয়ে নিনি। বেশি লোকজন রয়েছে এমন জায়গায় যাবে না। যাঁদের সর্দি কাশি জ্বর আছে, তাঁদের কাছে যাবেন না। এটা নিজেদের জন্য যেমন করতে হবে, তেমন আমাদের আশে পাশে বয়স্ক মানুষদের জন্যও করতে হবে। কারণ তাঁদর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। দেশের জন্য ভবুন।, হাতে সময় আছে, নিজেদের ভালো লাগার বিষয়গুলি যেগুলি ব্যস্ততার জন্য চর্চা করতে পারেন না। সেগুলো করুন। গান, শুনুন, গান, বই পড়ুন, ছবি আঁকুন। পরিবারকে সময় দিন।


তুহিনা দাস (অভিনেত্রী)


খুব কঠিন সময়ের মধ্যে যাচ্ছি, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হবেন না।, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন, দায়িত্ববান হোন। বেশি লোকজন রয়েছে এমন জায়গায় যাবেন না। ভাইরাস কার শরীরে ঢুকবে এটার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। আমাদের পরিবার, সমাজের প্রতি একটু দায়িত্ববান হই আমরা। এখন আমাদেরও কাজ কর্ম বন্ধ, চেষ্টা করছি, বই পড়া, রান্না করা, ঘর গুছানো, দেওয়াল রং করা, যেগুলো সময়ের অজুহাত দেখিয়ে আমি এতদিন করিনি, সেগুলো এখন করার চেষ্টা করছি। বাড়ির মধ্যে থাকুন, সুস্থ থাকুন, সাবধানে থাকুন।