Web Series: স্বস্তিকার সঙ্গে জুটিতে দেবাশিস, `চরিত্রের সঙ্গে নিজের মিল পাই`, জানালেন অভিনেতা
অভিনেতা দেবাশিস মণ্ডল জি ২৪ ঘণ্টাকে জানান,`জনার্দন দাসের চরিত্রটির সঙ্গে আমি অনেকাংশেই মিল খুঁজে পেয়েছি। ভাবনাচিন্তা, আদর্শ, ব্যক্তিগত জীবন ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিগত টানাপোড়েনের যে মানসিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে জনি ওরফে জনার্দন যায় তার সঙ্গে বহু অংশেই আমি সমানুভূতি অনুভব করি।`
নিজস্ব প্রতিবেদন: ওয়েব সিরিজ মন্দারে নজর কেড়েছিলেন অভিনেতা দেবাশিস মণ্ডল। ফের এক ওয়েবসিরিজে মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। তবে এই সিরিজে তিনি একজন পুলিস অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করবেন। তাঁর সঙ্গে প্রথমবার জুটি বাঁধছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত। অভিজিৎ চৌধুরী পরিচালিত এই ওয়েবসিরিজের নাম জনি বনি।
তরুণ পুলিশ অফিসার জনার্দন দাস ওরফে জনি চায় বড় কোনো ইনভেস্টিগেশন কেসের দায়িত্ব পেতে। তবে বড় কেস তো দূর, জনির পোস্টিং হয় স্থানীয় পলিটিশিয়ান প্রমোদ সেনের বাড়ির নিরাপত্তার তদারকির দায়িত্বে। প্রমোদ সেনের স্ত্রী সুরমা, জনিকে বাড়ির ছেলে হিসেবে ভালোবাসেন। প্রমোদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও, বাড়ির বাজার করা থেকে পোষ্য কুকুরের দেখাশুনো, সবরকমের গৃহস্থালি কাজ করাই জনির প্রধান দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। বার বার চেষ্টা করা সত্ত্বেও জনি কিছুতেই থানা থেকে ডিউটি চেঞ্জ করতে পারে না।জনিকে ওর স্ত্রী আঁখির কাছে ডিউটি নিয়ে মিথ্যে গল্প দিতে হয়, কারণ আর যাই ঘটুক জনি কিছুতেই আঁখির চোখে ছোট হতে পারবে না। এরই মধ্যে আঁখির দিদির ছেলে, তেরো বছরের বনি, দুর্গাপুরে ওর বাড়ি থেকে পালিয়ে, জনার্দনদের বাড়িতে এসে হাজির হয়, কলকাতায় একটা দাবা টুর্নামেন্ট খেলবে বলে। জনি এবং বনির মধ্যে সম্পর্কটা একটু গোলমেলে, অনেকটা টম এন্ড জেরির মত। জনি চায় বনি বড়দের শাসন মেনে কাজ করুক। কিন্তু বনি কিছুতেই বিশ্বাস করে না ছোটরা বড়দের থেকে কম বোঝে। জনি আঁখিকে ডিউটি নিয়ে যাইই গল্প দিতে যায়, বনি সেগুলো গুল হিসেবে ডিক্লেয়ার করে।
জনির ভাগ্যচক্রে হঠাৎ পরিবর্তন আসে যখন তিনজন দুষ্কৃতী প্রমোদ সেনের বাড়িতে অকস্মাৎ হামলা করে এবং জনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে নিজে গুলি খেয়ে প্রমোদ সেনদের বাঁচিয়ে দেয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে প্রমোদ সেনের মেয়ে রিমিরও খোঁজ পাওয়া যায় না। জনি কেসটার ইনভেস্টিগেশনের দায়িত্ব পায়। জনি তদন্ত করতে শুরু করে ক্রমশ বুঝতে পারে অত্যন্ত পাওয়ারফুল কিছু মানুষ গোটা ঘটনাটার সাথে জড়িয়ে এবং লোকাল থানা আসলে চায় না কেসটার সমাধান হোক। একই সাথে বনির দাবা টুর্নামেন্ট শুরু হয়। জনি কি পারবে তার কেরিয়ারের প্রথম কেস সল্ভ করতে ? বনি কি পারবে দাবা টুর্নামেন্টে জিতে নিজেকে প্রমাণ করতে ? নাকি দুজনকে লক্ষ্য পূরণ করতে একে অন্যের সাহায্য নিতে হবে। পরতে পরতে রহস্য, দাবার চাল, অলীক স্বপ্ন ছুঁতে চাওয়া এক পুলিশ অফিসার এবং এক কিশোরের আখ্যান নিয়েই গল্প 'জনি বনি'।
দেবাশিস মণ্ডল ও স্বস্তিকা দত্ত ছাড়াও মিল্কি ওয়ে ফিল্মস প্রযোজিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে অঙ্কিত মজুমদার, কমলেশ্বর মুখার্জি, লোকনাথ দে, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, যুধাজিৎ সরকার, শুভস্মিতা মুখার্জি, পুষ্পিতা মুখার্জি, জয়তী চক্রবর্তী, অভ্যুদয় দে এবং তুষিতা ব্যানার্জিকে। ছবি প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন,'জনি একজন তরুণ পুলিশ অফিসার এবং বনি একজন কিশোর দাবা খেলোয়াড়। তাই সিরিজিটিতে একদিকে যেমন আমাদের দেশের পুলিশি ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক ও প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, অন্যদিকে দাবা খেলার প্রচুর খুঁটিনাটি একইসাথে সিরিজিটির গল্পে এসেছে। বেশ কিছু প্রাক্তন পুলিশ অফিসার যেমন আমাদের সাহায্য করেছেন পুলিশের সাথে সমাজের বিভিন্ন অংশের অংশের সমীকরণ বুঝতে একইভাবে কিছু খ্যাতনামা দাবাড়ু আমাদের সাহায্য করেছেন দাবা খেলাকে নিখুঁতভাবে গল্পে চিত্রায়ন করতে । বিশেষত আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া এবং তাঁর চেস অ্যাকাডেমির কাছে, আমাদের নানাভাবে সাহায্য করার জন্য।'
অভিনেতা দেবাশিস মণ্ডল জি ২৪ ঘণ্টাকে জানান,'জনার্দন দাসের চরিত্রটির সঙ্গে আমি অনেকাংশেই মিল খুঁজে পেয়েছি। ভাবনাচিন্তা, আদর্শ, ব্যক্তিগত জীবন ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিগত টানাপোড়েনের যে মানসিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে জনি ওরফে জনার্দন যায় তার সঙ্গে বহু অংশেই আমি সমানুভূতি অনুভব করি। যথেষ্ট চাপের মধ্যে শুটিং হলেও জনার্দন চরিত্রটি করা আমার জন্য একটি অনবদ্য যাত্রা ছিল। চরিত্রটি এই সিরিজের চিত্রনাট্যকার এবং পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরীর ভাবনা থেকে উঠে এসেছে । তাই তার সঙ্গেই এই গল্প নিয়ে আলোচনার সময় বুঝতে পারি, এই চরিত্রের মূল দ্বন্দ্ব, যা আমাদেরই সামাজিক এবং ব্যক্তিগত জীবনের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তৈরি। যে কারণে এই চরিত্রের সঙ্গে অনেকটাই একাত্ম হতে পেরেছিলাম। বাকিটা কল্পনার ভিত্তিতে এই চরিত্রটিকে একটি বাস্তবিক রূপ দিতে সাহায্য করেছে। সাথে সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নির্মিত সহচরিত্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। স্বস্তিকা, অঙ্কন কমলেশ্বর বাবু সহ আরো অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সাথে এবং বিশেষত ক্লিকের সঙ্গে এটি আমার প্রথম কাজ। এই সিরিজ টি আমার অভিনয় জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হয়ে থাকবে। এই সিরিজের সাথে যুক্ত সকল শিল্পী, পরিচালক ও প্রযোজকদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই।'ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ক্লিকে দেখা যাবে এই ওয়েব সিরিজ।
আরও পড়ুন: Abhishek Bachchan: অভিষেক বচ্চনের 'দশভি' দেখে অনুপ্রাণিত, বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১২ জন কয়েদি