টিকিট না পাওয়ায় `ক্ষোভ`, BJP-তে যাচ্ছেন Hiran?
টলিপাড়া ও রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জনের মাঝেই Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় রাজনীতি নিয়ে নানান কথা বললেন হিরণ।
রণিতা গোস্বামী: দেব, মিমি, নুসরত-এর মত সতীর্থরা সাংসদ হয়েছেন। ভোটে হারলেও বড়জোড়া থেকে তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন সোহম। বহু আগে থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে থাকলেও 'ব্রাত্য' থেকে গিয়েছেন। আর সেই ক্ষোভ থেকেই কি এবার বিজেপি (BJP)র দিকে ঝুুঁকছেন টলিউড অভিনেতা হিরণ? টলিপাড়া ও রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জনের মাঝেই Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় রাজনীতি নিয়ে নানান কথা বললেন হিরণ।
তাহলে, বিজেপিতে যাচ্ছেন?
হিরণ: আমি তো তেমন কিছু বলিনি। (ঠোঁটে হাসি)
টলিপাড়া ও রাজনৈতিক মহল, দু'জায়গাতেই তো জোর গুঞ্জন আপনি এবার বিজেপিতে?
হিরণ: আমিও শুনছি(হাসতে হাসতে)। দেখো রাজনীতিতে সমস্ত সম্ভাবনার পথই খোলা রাখতে হয়। অঙ্ক কষেই তো এগিয়ে যেতে হয়। রাজনীতিতে কেউ চিরবন্ধু বা চিরশত্রু নয়। তাই কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এত যে কু-কথার রাজনীতি, কী বলবেন?
হিরণ: এটা তো বাংলার রাজনীতির সংস্কৃতি নয়। আমরা ছোটবেলা থেকে যে রাজনীতির কথা পড়ে বড় হয়েছি, গান্ধীজি, সুভাষচন্দ্র বসু, রাসবিহারী বসুর কথা, তাতে তো কখনও শুনিনি, গান্ধীজিকে গালি গালাজ করেছেন সুভষচন্দ্র বসু। আমরা তো তাঁদের পুজো করি। এখন কেউ যদি কাউকে বলেন পা ভেঙে দেব, দেখে নেব, এটা তো ব্যক্তিগত আক্রমণ হয়ে যাচ্ছে।
সায়নী ঘোষকে 'যৌনকর্মী' বলেছেন বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, কী বলবেন?
হিরণ: এটা অপসংস্কৃতি। মানুষকে যা খুশি বলার যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, তার প্রতিবাদ করা দরকার। ব্যক্তিগত ভাবে যদি কেউ কাউকে আক্রমণ করে থাকেন, তাহলে ব্যক্তিগতভাবেই ক্ষমা চাওয়া উচিত। এটা দলের ভুল তো নয়। সৌমিত্র খাঁ ওই কথা বলে থাকলে অবশ্যই ভুল। অপমান করার অধিকার কেউ কাউকে দেয়নি।
দেবলীনা দত্তের গোমাংস মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দেন রুদ্রনীল। তার পাল্টা আবার দেবলীনা বলেছেন, রুদ্রনীলকে আর বন্ধু ভাবি না। রাজনীতি কি বন্ধুত্বে প্রভাব ফেলছে?
হিরণ: আমি একদমই সেটা মনে করি না। ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। আমি আমার স্ত্রী যদি বিরোধী রাজনীতি করি, তাহলে কী সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে!
সোহমের সঙ্গে তোমার নাকি মতপার্থক্য?
হিরণ: না, না, সোহম তো আমার খুবই ভালো বন্ধু। সবসময়ই থাকবে। ওর সঙ্গে তো শুধু কাজের কোনও সম্পর্কই ছিল না। মতপার্থক্য কীভাবে হবে? সোহম, আমি, দুজনেই ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলাম। তবে আমি যে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম, সেটা পূরণ হয়নি। দেখলাম, আমি শুধু ক্যাম্পেন করে যাচ্ছি। পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা, লোকসভা, সব নির্বাচনের আগে আমি তো শুধু ক্যাম্পেনার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেসেজ করেও কোনও উত্তর পাইনি।
সহকর্মীরা সাংসদ হয়ে গেল। আর তুমি বঞ্চিত থেকে গেল। এতেই কি ক্ষোভ?
হিরণ: আমি তো কখনও দলের কাছে টিকিট চাইনি। ক্ষোভ কীভাবে থাকবে! দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করেছি। যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি হওয়ার পর থেকে আমি শুধুই ক্যাম্পেন করে গিয়েছি। সেটা যদি আমার দায়িত্ব হলে, তাই-ই সই। সে কাজে তো কোনও বাধা আসেনি। ধরো সিনেমাহলে বাচ্চাকে নিয়ে বাবা-মা সিনেমা দেখতে গেলেন, ওঁরা আইসক্রিম খেলেন, বাচ্চাটা বায়না করল না। সে বায়না করল না বলে কি বাবা-মায়ের উচিত নয় ওকে অন্তত একটা চকোলেট কিনে দেওয়া? (প্রসঙ্গক্রমে) তুমি কী বলবে? আমি দলের কাছে কখনও কিছু চাইনি। দলও হয়ত আমায় যোগ্য বলে মনে করেনি।
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে সিনেমার সংখ্যা কমেছে? কেন মনে হয়?
হিরণ: এটা বলা খুব মুশকিল। যাঁরা বলেছেন, হিরণ ধান্দা করতে এসেছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে শুধু বলব, আমি ভাড়া বাড়িতে থাকি। আমার একটা দামি গাড়ি ছিল সেটাও বিক্রি করে দিয়েছি। তাহলে দলে এসে ধান্দাটা কোথায় করলাম? অনেকে বলেছিলেন সিনেমা পায় না, তাই রাজনীতিতে এসেছেন সিনেমা পাওয়ার জন্য। আমি তো দল করার পর সিনেমার সংখ্যাও কমেছে।
মোদী না মমতা কাকে রাজনৈতিক আদর্শ মনে করো?
হিরণ: দুজনকেই আমি ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ব্যক্তিত্ব ভারতবর্ষে খুব কমই আছেন। আমি দিদিকে শ্রদ্ধা করি এবং সবসময় করব। আমার ওনার প্রতি কোনও ক্ষোভ নেই। আবার, নরেন্দ্র মোদী দেশকে একটা অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। আজ ইজরায়েল বলছে 'উই ট্রাস্ট ইন্ডিয়া', আবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও ভারতের কথা বলেছেন। সেটা তো মানতেই হয়।