শর্মিষ্ঠা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায় -


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মা হতে চলেছেন কোয়েল মল্লিক। আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মানসিক প্রস্তুতি সারা। নতুন এক অনুভূতিতে বুঁদ হয়ে রয়েছেন। বরাবরই নিজেকে প্রাইভেসির ঘেরাটোপে আটকে রাখতে চান নায়িকা। তবে নিজেই নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তনি সন্তানসম্ভবা।  তারপর আবার গেলেন নির্বাসনে। কী ফিটনেস রেজিমে আছেন, কী ডায়েট ফলো করছেন, কবে ফিরবেন শুটিংয়ে, সব প্রশ্নের জবাব দিলেন রাখঢাক না করেই।


প্রশ্ন - কেমন আছ কোয়েল?


কোয়েল - খুব ভাল শর্মিষ্ঠাদি। সুস্থ আছি। রেগুলার চেক-আপে আছি। সামনের মাসেই ডেট। আমি চাই বাচ্চা নর্মালি হোক, তাই ডাক্তার যা বলছেন, সেই মতোই চলছি।


প্রশ্ন - মুড সুইংস হচ্ছে?


কোয়েল - (হাসতে হাসতে) সব্বাই বলেছিল। আমার মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি, রানে সকলে রেডি ছিল আমাকে প্যাম্পার করবে বলে। ডাক্তার বলেছিলেন, এত রকমের হরমোনাল চেঞ্জেস হবে, তার সঙ্গে মুড সুইং হবেই। কিন্তু বিশ্বাস কর, চাইলে সবাইকে জিগ্যেস কর  আমার সেরকম কিছুই হয় নি। দিব্যি আছি। আসলে ঘরবন্দি হয়ে গেলেও, যেহেতু আমার পরপর ছবির প্রোমোশন চলছে, তাই আমি 'আউট অফ জব' বসে নেই। 'মিতিনমাসি'র পরপরই 'সাগরদ্বীপে যকের ধন' ছবির প্রমোশন চলল। সেইজন্যই বোধহয় মুড সুইং কাবু করতে পারেনি।



প্রশ্ন - কী খাচ্ছ? ডায়েট কী? বিশেষ কিছু খেতে ইচ্ছে করছে?


কোয়েল - প্রেগন্যান্সির গোড়ার দিকে খুব ফুচকা খাচ্ছিলাম। আমি অবশ্য ফুচকা খেতে খুব ভালবাসি, তুমি জানো সেটা। তাছাড়া বাড়ির খাবারই খাচ্ছি। তফাৎ একটাই, এখন নিয়মমাফিক সময়মত খাচ্ছি। শুটিংয়ে যেমন খাওয়াদাওয়ার সময়ের কোনও ঠিকঠিকানা থাকে না, সবসময়ে পাত্তাও দিই না, সেটা এখন চলবে না। তাই বেবির গ্রোথও ঠিক আছে৷ আমার ডাক্তার খুশি। খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি আমি অবশ্য নিয়মিত যোগব্যায়াম করছি। এমনিতে আমি রেগুলার জিমে যাই। এখন সেটা বন্ধ রেখে, বাড়িতেই যোগ-ইনস্ট্রাকটর রেখেছি। তবে এই করোনা আউটব্রেকটা হওয়ার পর, বাড়িতে একটু রেস্ট্রিকশন রাখতেই হচ্ছে।


প্রশ্ন - কোয়েল, নায়িকাদের জীবন বদলেছে। তাঁদের প্রমোশন প্যাটার্ন বদলেছে। পি আররা খুব স্ট্র‍্যাটেজিক্যালি বলে দেন, নায়িকাদের কীভাবে নিজেদের প্রেগন্যান্সি প্রোমোট করা দরকার। করিনা কাপুর খান থেকে কলকি কেকলাঁ, সকলেই বেবি-বাম্প নিয়ে জনসমক্ষে আসছেন। কলকাতায় ও বসে এগুলো কি তোমাকে ভাবায়? স্ট্র‍্যাটেজাইস কর?


কোয়েল - শর্মিষ্ঠাদি, তুমি জানো, আমি মানুষ হিসেবে কতটা প্রাইভেট।  বাংলা ছবিতে এত বড় সাফল্য পাওয়ার পরে আমার এখনও মনে হয়, আমি হোমমেকার হতে পারলেই ভাল হত। কিন্তু এটাও ঠিক যে, আমার একটা প্রফেশনাল জীবন আছে। আমার দর্শকেরা, ফ্যানেরা আমার কাছে পরিবারের থেকে কম কিছু নয়। তাদের কথা ভেবেই ইনস্টাগ্রামে আমি জানাই যে, মা হতে চলেছি। তাতে যা সাড়া পড়ে, প্রচুর হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেজ, ফোন, তখন মনে হল, সকলকে জানিয়ে ভালোই করেছি।  এই আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা আমার জীবনে খুবই দরকার এখন। প্রতি চেক আপের সময়ে যখন বেবিকে দেখি বা হার্ট-বিট শুনি, আই কাউন্ট মাই ব্লেসিংস। এই সময়ে এটা খুব জরুরি। এও বেশি হয়ত কিছু করে উঠতে পারব না কিন্তু খবরটা হওয়া মাত্র সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেব।


প্রশ্ন - কাজের কথায় আসি। রক্তরহস্য মুক্তির অপেক্ষায়। তুমি রেডিও জকি, কিন্তু কিছু একটা চক্রান্তের শিকার যেন।


কোয়েল - বুঝেছি। তুমি ট্রেলারের ওই অংশটা বলছ তো, যেখানে স্বর্ণজা (আমার চরিত্র) বলে, ৯ মাস ভিতরে আর ২ মাস বাইরে!   দেখ, আমাকে বাংলা ছবিতে সবসময়ে এমন চরিত্র দেওয়া হয়েছে, যেখানে মেয়েটা জিতে যায়। এই প্রথম আমি একটা হেরে যাওয়া মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করলাম।পরিচালক সৌকর্য ঘোষাল অপূর্ব  লিখেছেন। এই ছবি শুধুমাত্র চিত্রনাট্যের উপর দাঁড়িয়ে  রয়েছে। একটা সাধারণ মেয়ের ৬ বছর আগের-পরের গল্প। থ্রিলারে আমি আগেও অভিনয় করেছি,  কিন্তু স্বর্ণজা আমাকে জাস্ট  আর্টিস্ট হিসাবে নিংড়ে নিয়েছে। ছবিটা মুক্তি পাওয়ার কথা ১০ এপ্রিল, কিন্তু করোনা পরবর্তীতে হয়ত মুক্তির তারিখ বদলাতেও পারে।


প্রশ্ন - কোয়েল, তোমার জন্য তো 'মিতিনমাসি ২' শুটিং পিছোল। পুজোতে কি আসতে পারবে মিতিন মাসি?


কোয়েল - দেখ, ক্যামেলিয়া প্রোডাকশন হাউস আমার সমস্যাটা বুঝেছেন। পরিচালক অরিন্দম শীলও এই ছবিটা নিয়েই তৈরি হচ্ছিলেন। তবে তাঁকেও বোঝানো গেছে। আমি খুব খুশি যে, অরিন্দমদার হাতে এখন পরপর ছবি। আমি বোধহয় একটু সময় পেয়ে যাব।তবে পুজোয় না হলেও হয়ত শীতে আসবে মিতিন মাসি। আর মিতিনকে যেভাবে দর্শক ভালবেসেছেন, তাতে বছরের যেই সময়েই আসুক না কেন, দর্শক হলমুখী হবেন।


প্রশ্ন - নায়িকা যাঁরা মা হয়েছেন, তাঁরা  নানাভাবে সোশ্যাল মিডিয়া এবং মিডিয়া হ্যান্ডেল করেছেন। যেমন ধর, করিনা তৈমুর কে ক্যামেরার সামনে ছেড়েই দিয়েছেন, রানি মুখার্জি আবার আদিরাকে প্রায় লুকিয়ে রেখেছেন। তোমার কী প্ল্যান?


কোয়েল - কলকাতায় পাপারাত্জি কালচারটা অতটা ভয়ঙ্কর নয় এখনও।  আমরা দু পক্ষই দু পক্ষকে বুঝি, সম্মান করি৷ আমার মা হওয়ার খবর শুনে সবথেকে বেশি ফোন পেয়েছি সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে। ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুদের থেকেও অনেক বেশি। তাই তাঁদের উপর আমার ভরসা আছে। তাঁরা আমাকে, রানেকে আর আমাদের বাচ্চাকে সময় দেবেন।



প্রশ্ন - রানে কী বলছে?


কোয়েল - ওহ, হি ইস ইন ক্লাউড নাইন। আমার সঙ্গে চেক আপে যায়, ফেরার সময়ে ওর মুখটাই দেখার মত হয়।


প্রশ্ন - তোমারা কি প্রেগন্যান্সি প্ল্যান করেছিলে?


কোয়েল - একটা প্ল্যানিং তো ছিলই, কারণ আমি এই সময়ে কোনও শুটিং রাখি নি। শুধু ছবির প্রোমোশন ছিল। প্রফেশনাল হিসেবে আমাদের তো কিছু দায়িত্ব থাকেই। কোনও  কাজটাই আমার জন্য যাতে আটকে পড়ে না থাকে, আমরা সেদিকে নজর রেখেছিলাম।


প্রশ্ন - দেখতে তো আরও সুন্দর হয়েছ, চুল আর ত্বকের কোনও  বিশেষ যত্ন নিচ্ছ?


কোয়েল - ওই আর কি। পুষ্টিকর খাবার, একটু স্পা, যোগব্যায়াম আর নিয়মিত চেক আপ। সবই ঠিক আছে, শুধু দিন যত এগোচ্ছে, রাতের ঘুমটা কমছে আর সামান্য একটু শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তবে ডাক্তার বলেছেন, সেটা স্বাভাবিক, চিন্তার কিছু নেই। এপ্রিলের শেষেই তো মহাপরীক্ষা। প্লিজ, ব্লেস আস।