স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আজ ৩ সেপ্টেম্বর।বাঙালির বড় গর্বের দিন বাঙালির কাছে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই যে থাকে একজন নায়ক। আর সেই বাঙালি পুরুষের মননকে পর্দায় তাঁর থেকে মহানায়কোচিতভাবে আর কেই বা দেখিয়েছেন? উত্তম কুমার। কে জানে, 'উত্তম'কে না পেলে বাঙালি ঠিক কতটা 'অধম' হয়েই দিন কাটাতো! কথায় বলে না, কিছু মানুষের জন্য কিছু মানুষ ঢেকে যান। আসলে সমসাময়িক অনেক মানুষ, অনেক প্রতিভাবান মানুষকে নিজের আলোয় ঢেকে দেন। উত্তম কুমার যদি সব আলো নিজের দিকে নিয়ে থাকেন, তাহলে খানিকটা অন্ধকারে রয়ে গেলেন তিনি। তপেন চ্যাটার্জি। উত্তম কুমার বাঙালি মনের নায়ককে সবার সামনে মেলে ধরেছিলেন। আর তপেন যেন বাঙালিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কল্পনা করা শিখিয়েছিলেন, 'ইস আমিও যদি এমন পারতাম!'


তপেন চ্যাটার্জি ছাড়া আপনি কখনও গুপি গাইনকে কল্পনা করতে পারবেন? উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরি যখন লিখেছিলেন, তখনও বোধহয় তাঁর মাথাতে ছিল এমনই এক অবয়ব। আর সেই কল্পনাকে বাস্তবে তুলে ধরেছিলেন সত্যজিত রায়। ওই তপেন চ্যাটার্জির মাধ্যমেই! ১৯৩৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তপেন চ্যাটার্জি। পড়াশোনায় খুব ভালো ছিলেন। সেই আমলেও ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। চাকরির সুবাদে বেশ কিছু দিন ছিলেন রাজস্থানে। কিন্তু সৃষ্টিশীল মানুষের মন কি আর ওই যন্ত্রপাতি-কল-কব্জাতে আটকে রাখা যায়! অগত্যা সব ছেড়ে তপেন পাড়ি দিলেন কলকাতায়।


ফিরে এসে যোগ দিলেন সন্দেশ ম্যাগাজিনে। তবে, বিজ্ঞাপন বিভাগে। কিন্তু ততদিনে সত্যজিত রায় তাঁকে চিনে ফেলেছেন। মানে জহুরির ততদিনে হীরে চেনা হয়ে গিয়েছে। তাই সত্যজিত, তপেনকে দিয়ে অভিনয় করালেন নিজের ছবি মহানগরে। এরপর গুপি গাইন হিসেবে আত্মপ্রকাশ। ব্যস, মানুষটা আর সারা জীবন তপেন চ্যাটার্জি হিসেবে কম বেঁচে ছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন সত্যিকারের গুপি গাইন। যিনি হাততালি দিয়ে সব জায়গায় যেতে পারেন, যা খুশি খেতে পারেন আর তিনি গান গাইলে গোটা জগত মন্ত্রমুগ্ধ।কীসের আবার হিংসা? শুধু গান দিয়েই যদি পৃথিবীটাকে থমকে দেওয়া যায়, তার থেকে ভালো কিছু আছে নাকি!


কিন্তু এভাবেই একদিন থমকে গেল মানুষটার হৃতপিণ্ডটাও! ২০১০ সালের ২৪ মে চলে গেলেন তপেন চ্যাটার্জি। আমরা তারপরও গুনগুন করলাম, আজও করি - আহা কী আনন্দ আকাশে - বাতাসে.....তপেন ঠিক শোনেন হয়তো। পরের লাইনটা নিজেই ধরেন.....। কে জানে যেখানে আজ তিনি থাকেন, সেখানে গান শোনার পর তিনিও থমকে থাকেন কিনা!


আরও পড়ুন কম কথা বলে এত বেশি রোজগার!