জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো :  বাংলা ভাষার সঙ্গে বাঙালির কি ইদানীং কোনও চোরা লড়াই চলছে? নাকি বাঙালি না বুঝেই বাংলা ভাষার সঙ্গে একটা দ্বৈরথে নেমে পড়েছে? নইলে এত সাধারণ সহজ ভুলভ্রান্তি বারে বারে হচ্ছে কেন? এরকমই কিছু প্রশ্ন জমেছে কবি শ্রীজাত-র মনে। সেই প্রশ্নের উত্তরে খুঁজতেই নতুন শো 'বাংলা বনাম বাঙালি' নিয়ে হাজির শ্রীজাত। কবির সঙ্গে রবিবারের আড্ডায় হাজির ছিলেন দুই সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী ও জয়তী চক্রবর্তী। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ইমন ও জয়তীর সঙ্গে বাংলা ভাষা নিয়ে শ্রীজাত-র আলোচনার উঠে এল উচ্চারণ প্রসঙ্গ। দুই শিল্পীর কাছে শ্রীজাত-র প্রশ্ন ছিল আজকাল সব শিল্পীরা কি স্পষ্ট, এবং সঠিক উচ্চারণে গান গেয়ে থাকেন? উত্তরে ইমন ও জয়তী দুজনেই বলেন 'নাহ'। অনুষ্ঠানে দুই শিল্পীই জানান, গান শেখাতে গিয়ে তাঁদের বহু ভুল উচ্চারণ ঠিক করে শেখাতে হয়। উদাহরণ টেনে জয়তী বলেন, 'পাখি এল নীড়ে, তরী এলো তিরে', অনেকেই ড় এবং ব়-এর পার্থক্য করতে পারেন না উচ্চারণের সময়। বলেন, এই যে রবীন্দ্রনাথের 'ভানু সিংহের পদাবলী'-তে স এবং শ, দুটোই ব্যবহার হয়েছে, এই পার্থক্যটাও অনেকে করতে পারেন না। জয়তীর কথায়, শুধু র, ড়, স, শ নয়, আবার ই, ঈ-এর পার্থক্যও রয়েছে। যেমন এখানে কোনটা কতটা দীর্ঘায়িত হবে, সেটাও বুঝতে হবে। আবার 'ফ'-এর উচ্চরণও অনেকে ঠিক মতো করতে পারেন না। 


প্রসঙ্গ টেনে ইমন চক্রবর্তী চলে যান, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দিনে। বলেন,  ''আমাকে এক শিক্ষক 'বজ্রে তোমায় বাজে বাঁশি' গানটি গাইতে বলেছিলেন। আমার উচ্চরণ শুনে উনি বললেন, বাঙাল? আমি বললাম হ্যাঁ। আসলে বাঙাল, ঘটি-র পার্থক্যেও অনেক সময় উচ্চরণ বদলে যায়। বাঙালদের উচারণে যেমন বেশকিছু ভুল ধরা পড়ে, তেমনই ঘটিদের উচ্চরণেও বেশকিছু ভুল রয়েছে। যেমন আমি গান শেখাতে গিয়ে এমন অনেক ভুলই পাই, গুরু হিসাবে আমার কর্তব্য যেগুলি শুধরে দেওয়া।'' ইমনের কথায়, আবার প্রবাসে থাকেন অনেক বাঙালি আছেন, যাঁরা বাংলার মধ্যে 'কিউকি' ঢুকিয়ে ফেলেন। প্রসঙ্গক্রমে শ্রীজাত বলেন, 'কিউকি' তো তাও ঠিক আছে, অনেতে তো আবার 'কেন কি' বলে বসেন, কিন্তু ওটা আসলে 'কেন না'। শ্রীজাতর কথায়, ভুল ধরিয়ে দিলে, অনেকে আবার সেটা শুধরে নিতেও চান না। প্রসঙ্গক্রমে, জয়তী বলেন, আসলে সব বয়সেই শেখার জন্য মন খুলে রাখাটা খুব দরকার। 


আরও পড়ুন- সাথে নয়, সঙ্গে লিখুন, শ্রীজাতর সহজপাঠ | দেখুন 'বাংলা বনাম বাঙালি'...



শ্রীজাত-র কথায়, আসলে ভৌগলিক পরিবর্তনে বাংলা বদলে যায়, তবে যখন আমরা উপন্যাস লিখছি, কিংবা গান করছি, সেখানে ঠিক বাংলাটা লেখা উচিত, কিংবা বলা উচিত, এই দায়বদ্ধতা থাকাটা ভীষণ প্রয়োজন। সবশেষে শ্রীজাত বলেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বলে আমরা বেঁচে গেছি। অনেক কিছু শিখেছি। জয়তী বলেন, 'আমি রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে একটা আলাদা তৃপ্তি পাই, যা অন্য কোনও গান গেয়ে পাই না। ওঁর গানেও বিভিন্ন ধরনের বাংলা আছে।' আবার এদিনের আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে আসে লোকগানের প্রসঙ্গ। শ্রীজাত বলেন, একজন মজুর, একজন মাঝি, ওঁদের ভাষাও কিন্তু বাংলা ভাষা। তাঁর কথায়, যখন যে বাংলাতেই কথা বলি, যেন ঠিক ভাবে বলি। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)