Roddur Roy: `বাংলাতেই এটা সম্ভব, অন্য রাজ্য হলে সাহস পেতেন না`, রোদ্দুর রায়ের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে ইমন, কী বলছেন বাংলার শিল্পীরা?
ইমন চক্রবর্তী: আমার সবার আগে মনে হয়েছে যখন রবীন্দ্রনাথের গানের বিকৃতি ঘটালেন, তখন কেন ওঁকে গ্রেফতার করা হল না? তখনই ওঁকে উচিত শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন- মঙ্গলবার গোয়া থেকে রোদ্দুর রায়কে(Roddur Roy) গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিস(Kolkata Police)। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে(Facebook live) এসে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে। কলকাতা শহরের একাধিক থানায় রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল। তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় রুজু করা হয়েছিল একাধিক মামলা। সেই মামলার তদন্তে নেমেই গ্রেফতার করা হল রোদ্দুর রায়কে। রোদ্দুর রায়ের গ্রেফতারির পর কী বলছেন ইউটিউবাররা, কী বলছেন বাংলার শিল্পীরা?
ইমন চক্রবর্তী: আমার সবার আগে মনে হয়েছে যখন রবীন্দ্রনাথের গানের বিকৃতি ঘটালেন, তখন কেন ওঁকে গ্রেফতার করা হল না? তখনই ওঁকে উচিত শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এখন যে ঘটনা ঘটেছে সেটা তো অত্যন্ত নক্কারজনক। একজন মহিলাকে এমন নোংরা ভাষায় আক্রমন করা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা অত্যন্ত অশালীন মন্তব্য, আমি একজন মানুষ হয়ে মেনে নিতে পারছি না। তবে এটা পশ্চিমবঙ্গ বলেই সম্ভব হয়েছে, অন্য কোনও রাজ্য হলে এই সাহসটা পেত না। আমরা অনেক সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে দিয়েছি। এখন এই সময়ে এসে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা প্রশাসন বুঝবে। তবে আমি এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাই।
মনোময় ভট্টাচার্য: মানুষটা যে একদম কিছু জানে না এমনটা নয়। কিন্তু যেভাবে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে তা অন্যায় ও সমাজের পক্ষে খারাপ। রোদ্দুর রায় নিজের মতামত অবশ্যই প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু যেভাবে তিনি কথা বলেন সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। এখন মানুষের রুচি এরকমই হয়ে গেছে যে খারাপ জিনিসের প্রতিই সবাই আকর্ষিত হয়। রোদ্দুর রায়ের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ভালো মন্দ সবার মধ্যেই আছে। তবে মন্দ থেকে ভালোর দিকে যাওয়ার জন্য পড়াশোনা, শিক্ষা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। রোদ্দুর রায়কে অনেক আগেই গ্রেফতার করা উচিত ছিল। যেভাবে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে অশ্লীল ভাষা জুড়েছেন। যেসব অশ্লীল ভাষা তিনি বলেন তা অত্যন্ত নক্কারজনক।
আরও পড়ুন: Roddur Roy: নির্বাপিত রোদ্দুর! সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন 'মোকসা' রোদ্দুর রায়ের আসল পরিচয় কী?
উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায়: মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করা একদমই উচিত হয়নি। কিন্তু ওঁকে দেখে মনে হয়, ওঁ এসব পরোয়া করে না। প্রচুর সাধারণ মানুষ এই ভিডিওগুলোও দেখে। আমার বরাবরই মনে হয়, এগুলো কী করে করতে পারেন উনি?ইউটিউবারদের সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে। শব্দচয়ন একটা বড় ফ্যাক্টর। ইউটিউবের অনেক নিয়ম থাকে। উনি ভাবছেন স্বাধীনভাবে উনি কনটেন্ট বানাবেন। এই স্বাধীনতাটা আমরা পেয়েছি ইন্টারনেটের জন্য। ইন্টারনেটের ব্যবহারটা কত ভালোভাবে করব সেটা আমাদের উপর। আমরা যা-তা বানাতে পারি না। আমরা কিছু অ্যাডাল্ট কনটেন্ট বানিয়েছিলাম কিন্তু দর্শকের কথা ভেবে আর সেগুলো বানাই না। রোদ্দুর রায় যেভাবে গালিগালাজ ব্যবহার করেছেন সেরকম কেউই করে না। তাই এটা জানাই ছিল যে আজ নয় কাল উনি গ্রেফতার হবেন। উনি সবসময় সমাজকে ওঁর মতো করে বার্তা দিতে চেয়েছেন। উনি তো আসলে রোদ্দুর রায় নন, নিজেকে একটি ক্যারেক্টরের মাধ্যমে পেশ করেন। বলার স্টাইলটা খুবই কুরুচিকর। আমি অপেক্ষায় আছি যে আদালতে উনি কী জাস্টিফিকেশন দেন।
স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত: মুখ্যমন্ত্রীকে গালি দেওয়া বা রবীন্দ্রনাথকে গালি দেওয়া এগুলোকে আমি বলব বিকারগ্রস্ত। এটা একটা অসুখ। কোনও বিকৃতিকেই প্রকৃতিস্থরা সাপোর্ট করবে না। একটা সুস্থ সমাজ রাখতে গেলে সেখানে যদি টিউমার দেখা যায় তার ব্যবস্থা তো করতেই হবে। বিকার ও অপ্রাকৃতিক বস্তু খুবই বিপজ্জনক। আয়নায় মুখ দেখতে হবে তো।