সৌমিতা মুখোপাধ্য়ায়: ১৯৭০ সালের নাটক 'The Sleuth' অবলম্বনে তৈরি পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Dhrubo Banerjee) প্রথম ওয়েব সিরিজ 'টিকটিকি'(tiktiki)। গল্পের দুই মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়(Kaushik Ganguly) ও অনির্বান ভট্টাচার্য(Anirban Bhattacharya)। এই প্রথম ওয়েব সিরিজে অভিনয় করলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে ওয়েব সিরিজ জঁরের ভবিষ্যত নিয়ে কথা বললেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রঃ ৫০ বছর আগে লেখা একটা ইংরাজী নাটক, এই নাটক থেকে বাংলায় নাটক ও টেলিফিল্ম তৈরি হয়েছে। এই পাঁচ দশকে আশেপাশের পরিবেশ থেকে বদলে গেছে দর্শকের মানসিকতাও। দর্শক কতোটা নিজেকে রিলেট করতে পারবে বলে আপনার মনে হয়?


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ আমার মনে হয় রিলেট করতে পারবে। মূল নাটকের যে সিরিয়াসনেস তা অনেকটাই সৌমিত্রবাবুর নাটকে কমিয়ে আনা হয়েছিল। সেই সিরিয়াসনেসটা একটা খেলার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই ওয়েব সিরিজে। গল্পটা ২০২২-এর। এটা কোনও পিরিয়ড পিস নয়। তাই বদলাতেই হত। কারণ এখন পরকীয়ার সংজ্ঞা বদলে গেছে, তার গ্রহণযোগ্যতা বদলে গেছে। সমাজ ব্যবস্থা বদলে গেছে। আমার কাছে যে চরিত্রটা এসেছে,সমরেন্দ্র কৃষ্ণ দেব, তাঁর মানসিক গঠন নিয়ে আমার সংশয় ছিল। আমার মনে হয়েছে এই মানুষটা সুস্থ হতে পারে না। এর মধ্যে একটা পাগলামি আছে। পাগলের আর তখন কোনও বিশেষ প্রাসঙ্গিকতা থাকে না। তখন তাঁর সঙ্গে রিলেট করা নিজের ফ্যান্টাসির সঙ্গে সঙ্গে হতে থাকে। সেটাকে আজকের মত করে নিতে যা যা করা দরকার তা ধ্রুব করেছে। আমার রিলেট করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয়নি। 


প্রঃ গল্পটা কোন পথে এগিয়েছে?


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ একটা বন্ধ প্রাসাদে দুজন মানুষ রয়েছেন, তাঁরা দুজন খেনায় মত্ত। খেলার বাতাবরণ তৈরি হবে। খেলা যতটা সিরিয়াসনেস দাবি করে, ততটাই এই বিষয়টা প্রাসঙ্গিক।  



 
প্রঃ আমরা এটা থিয়েটার হিসাবে দেখেছি, টেলিফিল্ম হিসাবে দেখেছি, সেখান থেকে ওয়েব সিরিজের গল্প বলার ধরন পুরোটাই আলাদা, আপনার চোখে কতটা পরিচালকের মুন্সিয়ানা ধরা পড়েছে?


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ  এটা পদ্মনাভের চিত্রনাট্য। ধ্রুব বিজ্ঞাপনের ছেলে ওর সেট সাজানো অসাধারণ। খুবই দৃষ্টিনন্দন করেছে। পুরো বাড়িটা একটা খেলাঘর বানিয়েছে। সেটা খুবই ইন্টারেস্টিং। দর্শক যখন দেখবে তখন তাঁদের মনে হবে যে তাঁরা আমাদের সঙ্গে ঐ খেলার অংশ। নাটকের চাপ ধ্রুবও নেয়নি। যখন স্বপ্নসন্ধানী 'টিকটিকি' মঞ্চস্থ করত তখন ধ্রুবও স্বপ্নসন্ধানীতে ছিল। পর্দার পিছনে ছিল ও। ওর অনেক বছর কেটেছে টিকটিকি নাটকটার সঙ্গে। 


প্রঃ ওয়েবসিরিজ জঁরটা আপনার কতটা পছন্দ আপনার?


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ  অভিনেতার কোন পছন্দ অপছন্দের কিছু থাকে না। প্যাটার্ন, ধরন বদলে যায় সেট থেকে মঞ্চে, কিন্তু যা কিছুরই শুটিং হয়, সেটা সেটে হলে অভিনেতার কাছে একই। ওয়েব সিরিজ, সিনেমা, টেলিফিল্ম সবগুলোতে অভিনয়ের ব্যাকরণ একই। সিনেমার থেকে অনেক বেশি সংলাপ থাকে, ব্যস এটুকুই। পরিচালক হিসাবে আমার কাছে ওয়েব সিরিজ একদমই সদ্যজাত, কিছু বুঝতে পারছিনা। আস্তে আস্তে বেড়ে উঠছে। পছন্দ অপছন্দ কিছু নয়, ওটা ভবিতব্য। ওটা এলে বাকি সব মরে যাবে এরকম ভাবার কোনও কারণ নেই। সংকট হতে পারে টেলিভিশনের। ধারাবাহিক পুরোটাই ওয়েব নির্ভর হয়ে উঠতে পারে। 



প্রঃ অনির্বানের সঙ্গে রসায়ন কেমন? 


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ অনির্বানের সঙ্গে অভিনয় করে আমি চূড়ান্ত সন্তুষ্ট। ও একজন তালিমপ্রাপ্ত অভিনেতা। আমি তো শখের অভিনেতা।  ১০ মাস পরিচালনা করি, ২ মাস অভিনয় করি। ও ১২ মাস অভিনয় করছে, মুখ্য চরিত্রে ওকে দেখা যায়। সবসময় চর্চায় আছে আর আমি উল্টোদিকে অচর্চিত অভিনেতা। সেক্ষেত্রে আমাকে খুব সজাগ থাকতে হয়েছে, যাতে আমি ডুবিয়ে না দিই। লোকে যাতে না বলে যে আমি পারলামই না। আমরা সারাক্ষণ বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে গেছি একে অপরের সঙ্গে। একে অপরকে পরামর্শ দিয়েছি। আমরা ভীষণ এনজয় করেছি। দুজন দুজনের শত্রুর রোল করেছি। সেই শত্রুতা করতে গিয়েই ব্যাক্তিজীবনে আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। 



প্রঃ ইন্ডাস্ট্রির সকলেই আপনাকে বাংলা সিনেমার অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতা মনে করেন, আরেক দিকে আপনি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক, নিজের কোন সত্ত্বাকে আপনি এগিয়ে রাখেন?


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ পাশাপাশি থাকুক না দুজনে যেমন আমার দুহাত, দু পা একসঙ্গে রয়েছে।  তবে অভিনয়ের সময় আমার কাঁধে বিশেষ দায়িত্ব থাকে না, তাই অনেক রিল্যাক্স থাকি। আমার ছুটি কাটানোটা অভিনয়, পরিচালনাটা ছুটি কাটানো নয়। 


প্রঃ এই চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন, তাই এই চরিত্রকে অন্যভাবে পরিবেশন করা কি চ্যালেঞ্জিং ছিল?


কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ঃ  আমি সৌমিত্রবাবুর নাটক দেখেছি। সে জুতোতে আমি পা গলানোর চেষ্টা করিনি, সেটা ঠাকুরের আসনে তুলে রেখেছি। এখন আমার কাছে সেই চাপটা নেই। এখানে তুলনা হবে না কারণ চরিত্রটার ধড়টাই পুরো আলাদা। দুটো মানুষের চেহারাগত যে তফাৎ, দর্শনে যে তফাৎ এখানেই তুলনা আসবে না। সৌমিত্রবাবুর দেবতুল্য উপস্থিতি আমার নেই। আমার মনে হয় আমি অনেক বেশি রক্তমাংসের মানুষ হয়ে উঠতে পারব। 


আরও পড়ুন: The Kashmir Files: বারংবার আইনি লড়াই, অবশেষে মুক্তি পেল 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস'



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)