জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, সুরের আকাশে অস্তরাগ। বাংলা গানের জগতে এক যুগের অবসান। ১৫ দিন হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর দীর্ঘ লড়াইয়ের পর প্রয়াত হলেন বাংলার প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী 'গীতশ্রী' সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee)। তাঁর মৃত্যুর এক বছর অতিক্রম হওয়ার পরেই ভেঙে ফেলে হল শিল্পীর বাড়ি, যেখানে কেটেছে শিল্পীর দীর্ঘ জীবন, যে বাড়ির আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে বাংলা গানের স্বর্ণ যুগের অমূল্য মুহূর্ত, যে বাড়ির দেওয়াল সাক্ষী অনেক ঐতিহাসিক মুহূর্তের, সেই দেওয়ালই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও রয়ে গেছে বাড়ির ঠিকানা, D/163। অন্যপাশে লেখা এস,গুপ্ত কারণ গীতিকার শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- Shah Rukh Khan-Suhana Khan: বাঙালি পরিচালকের ছবিতে প্রথমবার বড়পর্দায় একসঙ্গে শাহরুখ-সুহানা...


সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর এক বছর পেরোনোর পরই সেই বাড়ি প্রোমোটারের হাতে তুলে দিয়েছেন মেয়ে সৌমি গুপ্ত। সম্প্রতি সেই ভাঙা বাড়ির ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে তর্ক-বিতর্ক। কেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি সংরক্ষণ করা হল না? কেন সেই বাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হল না? সেই ভিডিয়োতেই দেখা যায়, ধুলোয়-জঞ্জালের মধ্যে পড়ে উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর ছবি। যিনি ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গুরুদেব। সেই ছবি দেখে আর পাঁচজন সংগীতপ্রেমীদের মতোই মনখারাপ হয়ে যায় সংগীতশিল্পী কৌশিকী চক্রবর্তীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে তিনি সাহায্য চান আশেপাশের মানুষদের কাছে। তাঁরা যেন দয়া করে উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর ছবিটি উদ্ধার করেন।



আরও পড়ুন- Souptick-Ranieeta Breakup: তৃতীয় ব্যক্তির কারণেই ১২ বছরের সম্পর্কে ভাঙন? বিচ্ছেদের পথে সৌপ্তিক-রণিতা...


কৌশিকীর পোস্ট দেখেই উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর ছবিটি উদ্ধার করেন মানবী, যিনি ঐ অঞ্চলেই থাকেন। তিনি ছবিটি উদ্ধার করে পৌঁছে দেন কৌশিকী চক্রবর্তীর বাড়িতে। সংগীতশিল্পী বর্তমানে ইউরোপে আছেন। গানের সূত্রেই তাঁর ইউরোপ ট্যুর। তাই সশীরের এসে সেই ছবি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাঁর। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখেই মানবী নামের এক মহিলা সেই ছবি কৌশিকীর বাড়িতে নিয়ে যান। পরিষ্কার করে সেই ছবি রাখা হয়েছে যথাযথ আসনে। মানবীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আবারও একটি পোস্ট করেন কৌশিকী। পাশাপাশি তিনি শেয়ার করে ছবিও। তিনি লেখেন, ‘সন্ধ্যাপিসি জেনে খুশি হবেন যে তাঁর গুরুজির ছবি উদ্ধার করে যথাযথ ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাঁর আশেপাশেই সংগীতের অবস্থান’।



এই বিষয়ে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটা তাঁদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত। তাই এই বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে চান না। অন্যদিকে পুর কর্তৃপক্ষ জানায়, যেহেতু বাড়িটি ব্যক্তি মালিকানা এবং শিল্পীর পরিবারের তরফ থেকে সংরক্ষণের কোনও আবেদন আসেনি তাই তাঁদের পক্ষে হস্তক্ষেপ করা আইনসম্মত নয়। অন্যদিকে এই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া।


আরও পড়ুন- Swastika Mukhejee | Srijit Mukherji: ফের একসঙ্গে ফ্রেমবন্দি, স্বস্তিকার ছবিতে সৃজিত!


অন্যদিকে স্বপন মুখোপাধ্যায়, যিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সেক্রেটারি হিসাবে যুক্ত ছিলেন, তিনি বলেন, ‘এই বাড়িতে উস্তাদ মুনাওয়ার আলি খাঁ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, নচিকেতা ঘোষ থেকে শুরু করে সলিল চৌধুরী, শ্যামল মিত্র এসেছেন। কিন্তু এই বাড়িকে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়নি। দিদি থাকতে থাকতেই এই বাড়ির সিলিংয়ে ফাটল ধরেছিল। তিনতলা এই বাড়ি দিদির মেয়ের পক্ষে একা দেখাশোনা করা সম্ভব নয়। বাড়ির সামনে খুবই জল জমে, এমনকী বাড়ির একতলাতেও জল ঢুকে যেত।’ জঞ্জালে পড়ে থাকা উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক অনুরাগী ঐ ছবিটি প্রিন্ট আউট করে দিদিকে উপহার দিয়েছিলেন। অনেক আগে থেকেই ওটা অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে চিলেকোঠায় রাখা ছিল। দিদির কাছে অরিজিনাল যে ছবি ছিল, সেই ছবি এখনও আলমারিতেই আছে।’


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)