Lata Mangeshkar Passes Away: রেকর্ডিং রুমে রফির উপর বিরক্ত লতা; সলিল চৌধুরীর ব্যবহারেও অবাক রফি!
রফি-লতার বিবাদের একটা প্রেক্ষিত ছিলই।
সৌমিত্র সেন
১৯৪২ সালে ১৩ বছরের লতা মঙ্গেশকরের কেরিয়ারের শুরু। প্রায় সাত দশকের কেরিয়ার। সুদীর্ঘ সেই কেরিয়ারে নানা রঙ, নানা ছায়া, নানা ঘটনা, নানা মোড়। এর মধ্যে সব চেয়ে মশলাদার সম্ভবত লতা-রফি সংঘাত। তবে 'মশলাদার' হয়তো যথাযথ শব্দচয়ন হল না। কেননা, এটা তো নিছক গসিপ ছিল না। এটা ঘটেছিল আর তার জন্য অন্তত কিছু দিনের জন্য ভুগেওছিল মুম্বই ফিল্ম মিউজিক।
লতা-রফি ভারতীয় লঘুসঙ্গীত জগতের দুই মহাপ্রতিভা। মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দুই মহারথী। সাঙ্গীতিক জীবনে দু'জনেরই বলার মতো নানা অর্জন। তাঁদের দ্বৈতসঙ্গীত অসাধারণ বস্তু। কিন্তু একদা ঘটনাচক্র এমন দিকেই গিয়েছিল যে, এই দুই মহাপ্রতিভার মধ্যেও এসে উপস্থিত হয়েছিল দারুণ বিবাদ। তাঁরা আর কখনও পরস্পরের সঙ্গে গাইবেন না, এমন প্রতিজ্ঞাও করে বসলেন।
আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar Passes Away: কেন লতা বলে দিলেন কোনওদিন একটি গানও গাইবেন না রফির সঙ্গে?
কেন করলেন, তার নানা ব্যাখ্যা। ছবির গানের রয়্যালটি সংক্রান্ত বিষয়ে লতার সঙ্গে রফির তীব্র মতবিরোধ ঘটেছিল। লতা রয়্যালটি দাবি করেছিলেন এবং চেয়েছিলেন রফিও করুন; কিন্তু রফি তা করেননি। ফলে এই নিয়ে যে বাদানুবাদ তার জেরে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হয়, এবং তাঁরা একসঙ্গে গান গাওয়া বন্ধ করে দেন।
তবে এই ঘটনা ঠিক পূর্বাপরহীন নয়। অর্থাৎ, রফি-লতার এই বিবাদের আগেরও একটা প্রেক্ষিত ছিল, এই ঘটনার পরেরও একটা 'এক্সটেনশন' ছিল।
আগেরটা আগে বলা যাক। ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'মায়া'র গান রেকর্ডিং চলছে। চলছে পরবর্তী সময়ে বিখ্যাত হওয়া 'তসবির তেরি দিল মেঁ' (যে সুরে ইতিমধ্যেই একটি বাংলা গান গেয়েছেন লতা-- ওগো আর কিছু তো নয়)-র কাজ। গানটির সঙ্গীত পরিচালক সলিল চৌধুরী। গাইছেন লতা-রফি। গানটির একটি স্ট্যাঞ্জা ঠিক কী ভাবে গাওয়া হবে বা গাওয়া উচিত, তা নিয়ে রেকর্ডিং রুমেই হঠাৎই লতা বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন রফির সঙ্গে। রফি খুবই অস্বস্তিতে পড়লেন, কারণ গায়ন নিয়ে কোনও সংশোধন বা পরিবর্তনের দাবি বা নির্দেশ এলে সেটা আসা উচিত সলিল চৌধুরীর দিক থেকেই। লতা কেন বলবেন? কিন্তু সেদিন হতচকিত রফি অবাক হলেন এটা দেখে যে, সেখানে দাঁড়িয়ে লতাকে স্রেফ সমর্থন করে গেলেন সলিল চৌধুরী! ঘটনাটি যথেষ্ট ক্ষুণ্ণ করেছিল রফিকে। তখন থেকেই হয়তো লতা-রফির বিবাদের জমিটা তৈরি ছিল।
এর পরের ঘটনাটা এত প্রত্যক্ষ নয়। সেটা ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি। 'গিনেস বুক অফ রেকর্ড' তাদের নথিতে লতাকেই 'মোস্ট রেকর্ডেড ভয়েস'-এর সম্মান দিয়েছে। অর্থাৎ, সাদা বাংলায় সব চেয়ে বেশি গান লতার। রফি-শিবির 'গিনেস বুক অফ রেকর্ড'কে এ নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিল। তাদের দাবি ছিল, সমসংখ্যক গান রয়েছে রফিরও। পরে অবশ্য লতার সঙ্গেই রফির নামটিও ওই কৃতিত্বের তালিকায় যোগ করা হয়।
শোনা যায়, পরবর্তী সময়ে তাঁরা একসঙ্গে গান রেকর্ডও করেছেন। কিন্তু কেরিয়ারের শুরুর দিকে তাঁদের মধ্যে যে বোঝাপড়া ছিল তা আর কোনওদিনই ফিরে আসেনি।
আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar Passes Away: সুদীর্ঘ কেরিয়ারে কেন একটি গানও ও. পি. নইয়ারের সুরে গাইলেন না লতা?