নিজস্ব প্রতিবেদন: ৭-এর দশকে মহেশ ভাট ও পারভিন ববির প্রেমের কথা হয়ত অনেকেরই শোনা। সেসময় পুরুষতান্ত্রিক বলিউডে অন্যমাত্রায় ধরা দিয়েছিলেন পারভিন ববি। তিনিই প্রথম বলিউড নায়িকা যিনি প্রথম টাইম ম্যাগজিনের কভারে উঠে আসেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ফিল্মফেয়ার ম্যাগজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পারভিন ববির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মহেশ ভাট। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে পারভিনের সম্পর্কের নানান কথা। মহেশ ভাটের কথায়, কবীর বেদীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন পারভিন। সেসময় পারভিন 'ওমর আকবর অ্যান্থনি' (১৯৭৭) ও কালা পাহাড় (১৯৭৯)-এর মতো ছবির টপ তারকা, আর তিনি সেসময় একজন অসফল পরিচালক। সেসময় স্ত্রী লরেন ব্রাইট ও মেয়ে পূজাকে ছেড়ে পারভিনের সঙ্গে থাকা শুরু করেন মহেশ ভাট।


আরও পড়ুন-ইঞ্জিনিয়রিংয়ের পরীক্ষায় ৯৮.৫ নম্বর পেলেন সানি লিওন!


 


মহেশ ভাট জানান, তিনি হঠাৎই একদিন পারভিনের মানসিক অসুস্থতার কথা জানতে পারেন। সালটা ১৯৭৯, একদিন পরিচালক তাঁর বৃদ্ধা মা জামাল বাবি-কে দেখে পারভিনের বাড়িতে পৌঁছোন। তাঁর সারা ঘরে তখন পারফিউমের গন্ধে ম ম করছে। আর ববি ঘরের বিছানার কোণে রান্না ঘরের ছুরি নিয়ে বসে রয়েছেন। তাঁকে দেখে সসস শব্দ করে কথা না বলতে বলেন। জানান, ঘরে কোনও গুপ্তচরের ডিভাইস বসানো রয়েছে। কেউ তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। ও আমার হাত ধরে ঘরের বাইরে বের হয়ে আসে। সেসময় পারভিনের মা আমার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়েছিলেন। জানান, পারভিন এমন ঘটনা আগেও ঘটিয়েছে। সেবারই প্রথম নয়। 


আরও পড়ুন-ক্যাটরিনার জন্য 'ভারত'-এর শ্যুটিং বন্ধ করলেন সলমন? দেখুন কী ঘটেছে...



মহেশ ভাট জানান, এরপর তিনি পারভিনের চিকিৎসার জন্য তিনি বিভিন্ন মনস্তত্ববিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রায় সকলেই জানান, পারভিন প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া-তে আক্রান্ত। সেসময় ববিকে সুস্থ করতে চিকিৎসকরা ড্রাগ থেরাপির কথা, ও ইলেকট্রিক শক দেওয়ার কথা বলেছিলেন। পারভিনের অসুস্থতা ক্রমাগত বেড়েই চলেছিল। মহেশ ভাট জানান, একবার তিনি তাঁর বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে পারভিনকে নিয়ে ফিরছেন, সেসময় হঠৎই পারভিন চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে দিতে বলেন, দাবি করেন গাড়িতে নাকি বোমা রাখা আছে। এমনকি একবার অমিতাভ বচ্চনের দিকে আঙুল তুলে বলেছিলেন, তিনি নাকি পারভিনকে খুন করতে চান। পরে যদিও তিনি অমিতাভ বচ্চনের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন। 


আরও পড়ুন-স্কুলে না যেতে চাওয়ায় আজব আজুহাত অক্ষয় কন্যার



দিনে দিনে পারভিনের অসুস্থতা এতোটাই বেড়ে যাচ্ছিল যে অভিনেত্রী নাকি খাবার, ওষুধ কিছুই খেতে চাইতেন না। তাঁর মনে হতো তাতে বিষ মেশানো রয়েছে। সবকিছুই তাঁকে আগে খেতে হত, তারপর ববি খেতেন বলে জানান মহেশ ভাট।  চিকিৎসকরা পারভিনকে সিনেমা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিল। পারভিন চিকিৎসার মাঝপথে চলে আসেন তাঁর ব্যাঙ্গালোরের বাড়িতে। এরপরই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান মহেশ ভাট। তাঁরা অন্তরঙ্গও হন। সেসময়ই পারভিন তাঁকে জানান, হয় তাঁকে, না হয় তাঁর মনোচিকিৎসককে বেছে নিতে হবে। আর একপরেই শেষবারের মতো পারভিনকে ছেড়ে আসেন মহেশ ভাট। সেসময় তাঁর নাম ধরে ডাকতে ডাকতে বের হয়ে আসেন পারভিন। মহেশ ভাট না তাকিয়ে সোজা বেরিয়ে যান। পরিচালক জানান, তখনই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, এটাই তাঁর সম্পর্কের শেষ। তবে তিনি চেয়েছিলেন পারভিন সুস্থ হয়ে উঠবেন। একটা ভালো পরিণতি হবে। মহেশ ভাট তাঁকে ছেড়ে স্ত্রীর কাছে ফিরে এসেছিলেন।


আরও পড়ুন-সইফের এই ব্যবহারে তিতিবিরক্ত করিনা



তবে পরবর্তীকালে পারভিন আমেরিকা চলে যান। মহেশ ভাট জানান, ১৯৯১ সালে শেষবার পারভিনের সঙ্গে একটা বইয়ের দোকানে দেখা যায় তাঁর। পরিচিত কারোর গলায় ‘Excuse me!” শুনে ফিরে তাকিয়ে দেখেন পারভিনকে। পরিচালকের তখন তাঁর চোখে ছিল শিশুদের মতো রাগ। 



আরও পড়ুন-বাবাকে কোনওদিনই কাছে পাইনি, তাই অভাব বোধ করি না, মুখ খুললেন আলিয়া



মহেশ ভাট জানান, ২২ জাুয়ারি ২০০৫ সালে তিনি যখন পারভিনের মৃত্যুর খবর পান তখন তিনি হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে। আমার ফোনে তখন এসএমএস-এর বন্যা বয়ে যাচ্ছে। খবরটা যেন তাঁর বিশ্বাসই হচ্ছিল না। পারভিনের দেহ উদ্ধার হয় তাঁর ফ্ল্যাটে। হাসপাতালে পারভিনের দেহ কেউ নিতে আসছে না জানতে পেরে ২৩ জানুয়ারি মহেশ ভাট নিজেই যান সেখানে। নায়িকা পারভিন ববিকে সমাধিস্ত করেন। এরপর মহেশ ভাটের 'আর্থ', 'ও লমহে' একাধিক সিনেমায় উঠে আসে তাঁর ও পারভিনের প্রেমের কাহিনি। 


আরও পড়ুন-আকাশ-শ্লোকের বিয়ের আগে উৎসবমুখর আম্বানি পরিবার