শর্মিলা মাইতি                    


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ছবির নাম: সনম তেরি কসম


রেটিং: *



স্ট্যাচুটরি ওয়ার্নিং: এ ছবির নবাগতা নায়িকা অবশ্যই একবাক্স রুমাল গিফট পাবেন। সারা ছবি জুড়ে এত বার চোখের জলে নাকের জলে হয়েছেন, আর এত বার নাক মুছেছেন যে, কোনও অ্যাওয়ার্ড যদি না পান, এটা অবশ্যই প্রাপ্য।


শেষের কথাটা প্রথমে বলে নিলাম। শেষ কবে দেখেছেন বলুন তো, নায়িকাকে পছন্দ হয়নি বলে দুচ্ছাই করে চলে যাচ্ছে আইআইটি আইআইএম পাত্র, আর তা নিয়ে নায়িকা কেঁদেকেটে একসা হয়ে ভাবছে কী করে ঠাটবাট বদলে ফেলে কুচ্ছিত বাচ্চা হাঁস থেকে রাজহাঁস হবে। হায় কৃষ্টি! এর পরেও যা রয়েছে এ ছবির সংলাপে, যা লেখার অয়োগ্য। শত আলোকবর্ষ দূরের কোনও অন্তঃপুরবাসিনীর ছিঁচকাঁদন এখনও শুনতে হবে? এ ছবির পরিচালক দুইজন। কী এমন দোষ করেছিলেন প্রযোজক যে, পরিচালকেরা তাঁর সঙ্গে এমন ব্যবহার করলেন? বাংলা ছবিতেই দু দশক আগে হয়ে গেছে মেয়েরাও মানুষ! আমাদের ন্যাশনাল সিনারিও ২০১৬ সালেও এমন তথৈবচ?  দুই পরিচালক আসলে ছবি বানাতে গিয়ে দুই দিকে হেঁটেছেন। ফলস্বরূপ, ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে দিকদিশাহীন।


তবু ভ্যালেন্টাইন হপ্তা শুরুর আগে, একটু ওয়ার্মআপ সেশন হবে না! তেলুগু নায়ক হর্ষবর্ধন আর পাক নায়িকা মারওয়া হোকেন। ভাগ্যিস এ ছবির এক কাস্টিং ডিরেক্টর ছিলেন। ইনটলারেন্সের বাজারে ইন্ডিয়া-পাক যুগলবন্দির বেশ জমজমাট প্রোমোশনও হয়েছিল। আবার, পুলকিত-ইয়ামির আগামী ছবি সনম রে-র সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেও দেখতে এসেছিলেন বেশ কিছু দর্শক। হর্ষবর্ধন চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। সারা গায়ে যেভাবে উল্কি এঁকেছেন, তাতে আট বছর জেলের ভেতরে কী করছিলেন সেটা সহজেই অনুমেয়। শুধু এই ইনফর্মেশনটা বোধহয় ছিল না স্ক্রিপ্টরাইটারের যে, জেলের ভেতরে এমন তুখড় উল্কি-আঁকিয়ে পাওয়া যায় না। অথবা বিশেষ কোনও জেলে এ-ব্যবস্থা আছে কী না, তা একবার জানতে ইচ্ছা করি। মোদ্দা কথা পুরো স্ক্রিপ্টই এমন ম্যায়নে প্য়ার কিয়া স্টাইলে কবুতর যা যা যা করে উড়ে গেছে যে, দর্শকের ভাবনার স্তরে আর কিছু পড়ে থাকেনি।


হিমেশ রেশম্মিয়াকে (অভিনেতা নয়, সঙ্গীত পরিচালক) আবার কবর খুঁড়ে আনল এ ছবি। এই বাজারে ২০১৫ সাল থেকেই তিনি হিট প্রোডিউস করছেন, আমরা দেখেও দেখছি না, এটা বড় বিচ্ছিরি ব্যাপার। নাকিসুর উধাও। এক নয়া অবতারে পাবেনই এঁকে, যদি ইন্টারভ্যালের পরেও ছবিটা বসে দেখেন। গুণীর সমাদর করতে জানেন।


আবার ফিরে আসি মাওরা হোকেনে। অপূর্ব সুন্দরী এই পাক নায়িকাকে ছাই মাখিয়েও ডিগ্ল্যামারাইজ করতে পারেননি পরিচালক। আশির দশকের বস্তাপচা স্ক্রিপ্টে শ্যামলা নায়িকার চরিত্রে অ্যাক্টিং-এর সুযোগ পেলেই খুব করে কালিঝুলি মেখে ক্যামেরার সামনে হাজির হতেন বাঙালি নায়িকারা। বলিউডেও কীভাবে এমন ভুল হয় কে জানে। যাই হোক, স্ক্রিপ্টের ভুল স্ক্রিপ্টই শুধরে নিয়েছে। বিজয় রাজের যাদুছড়ির মেকওভারের পর যে মাওরাকে পাবেন, তাকে শুধুই দেখতে থাকবেন, আর দেখেই আশ মেটাবেন।


সনম তেরি কসম-এ একমাত্র ট্রোফিটি যিনি জিতবেন, তিনি এ ছবির কস্টিউম ডিজাইনার। নামটা নিজেরাই গুগল করে দেখে নিন। ছবিটা না হয় পরেই দেখবেন।