১লা বৈশাখে বাবার দোকানের জন্য মিষ্টির বাক্স তৈরির মধ্যেই সৃষ্টির আনন্দ খুঁজেছি: Paoli
পয়লা বৈশাখ মানেই আমার কাছে, মিষ্টির বাক্স, ক্যলেন্ডার আর অবশ্যই কোল্ড ড্রিঙ্ক।
পাওলি দাম : পয়লা বৈশাখ দিনটা আমাকে ভীষণই নস্টালজিক করে তোলে। এক ঝটকায় যেন ছোটবেলাতে ফিরিয়ে নিয়ে চলে যায়। এখনকার আর ছোটবেলার পয়লা বৈশাখে অনেক তফাৎ। আমার বড় হওয়া বউবাজার এলাকায়। ওখানে দোকানে দোকানে ১লা বৈশাখ উদযাপন হত। আমার বাবার দোকানেও পুজো হত, নতুন খাতা লেখা হত। পয়লা বৈশাখ মানেই আমার কাছে, মিষ্টির বাক্স, ক্যলেন্ডার আর অবশ্যই কোল্ড ড্রিঙ্ক।
আমি যেহেতু যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি আমার কাছে ছোটবেলার স্মৃতি ভীষণ মধুর, জোরাল। খুড়তুতো, জ্যাঠতুতো, পিসতুতো সব ভাইবোনেরাই আমাদের বাড়ি চলে আসত। আমাদের দায়িত্ব ছিল মিষ্টির বাক্স বানানো। এটার মধ্যে একটা সৃষ্টির আনন্দ ছিল, সেই আনন্দটা হয়ত আমি প্রথম ওই মিষ্টির বাক্স বানানোর মধ্যে দিয়েই পেয়েছিলাম। ক্যলেন্ডার রোল করতাম, চেষ্টা করতাম সবকটাতে যেন একই রঙের রাবার ব্যান্ড লাগানো হয়। পরের দিনের কাজ ছিল মিষ্টিগুলি বাক্সে ভরা। তারপর দোকানে যেতাম, লক্ষ্মী-গণেশ পুজো হত। নতুন খাতা লেখা, নারকেলের উপর স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা। ফুল দিয়ে দোকান সাজানো, নতুন জামা পরা। আমরা বোনেরা সকালে যে জামা পরতাম, সন্ধেবেলা একে অন্যের সঙ্গে জামা এক্সচেঞ্জ করে পরতাম। এটার মধ্যে আদানপ্রদানের শিক্ষা পেয়েছি।
আরও পড়ুন- ছোট থেকে শিখে আসা বাঙালির ১লা বৈশাখের সংস্কৃতি এখন ছেলেমেয়েদের শেখাই : ঋতুপর্ণা
সন্ধেবেলা যখন দোকানে লোকজন আসত। সবসময় যে আমন্ত্রণ করতাম তাও নয়। তবে নতুন বছর দরজা সবার জন্য খোলা থাকত। আমরাও অন্য় দোকানে যেতাম। আমার অবশ্য মিষ্টি নয়, কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ার ঝোঁক ছিল। দুদিন ধরে যেন উৎসব চলত। অপেক্ষা করে থাকতাম কবে ১লাবৈশাখ আসবে। এখন এই আনন্দগুলো মিস করি। এখন তো আরও কঠিন এই বিষয়টা। আমাদের কাছে স্পর্শ বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর করোনার সময় তো আমরা স্পর্শ থেকেই দূরে সরে যাচ্ছি। আনন্দ হয়ত থাকবে, তবে অনেককিছু বদলে যাবে। এখন তো আবার অনেক কিছুই ভার্চুয়ালি হয়, সেভাবেই হয়ত পয়লা বৈশাখ উদযাপন হবে।
তবে যবে থেকে কাজ করা শুরু করেছি, আমরা দেখেছি পয়লা বৈশাখে ছবি মুক্তি পায়, কিংবা শুভ মহরত হয়। এবছর আমার একটা হিন্দি ছবি 'রাত বাকি হ্য়ায়' পয়লা বৈশাখে মুক্তি পাচ্ছে। আর এবার আমি পয়লা বৈশাখে কলকাতাতেই থাকছি, এটা একটা ভালো বিষয়।