ছোট থেকে শিখে আসা বাঙালির ১লা বৈশাখের সংস্কৃতি এখন ছেলেমেয়েদের শেখাই : Rituparna

এই দিনে নতুন জামা পাওয়াটা আরও একটা আনন্দ। নতুন জামা আসতে দেরি হলে মন খারাপ হয়ে যেত। 

Updated By: Apr 15, 2021, 12:13 AM IST
ছোট থেকে শিখে আসা বাঙালির ১লা বৈশাখের সংস্কৃতি এখন ছেলেমেয়েদের শেখাই : Rituparna

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত : ১লা বৈশাখ ঘিরে আমার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে। এইদিনটা এলেই মনে হত, আবার নতুন করে সবকিছু শুরু হল। আমি সেসময় 'চিত্রাংশু' নামে একটি ছবি আঁকা ও নাচের স্কুলে যেতাম। সেখানে ১লা বৈশাখে সুন্দর অনুষ্ঠান হত, আমিও নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নিতাম। খুব ভালো কেটেছে সেই দিনগুলো। খুব মনে পড়ে, বাড়িতে আমার ঠাকুমা এই দিনটা নিয়ে খুব উৎসাহী থাকতেন। তিনি বিভিন্ন রকম বাঙালি রান্না করে সকলকে খাওয়াতেন। সকালবেলা উঠে বড়দের প্রমাণ করে আশীর্বাদ নিতাম। এই দিনে নতুন জামা পাওয়াটা আরও একটা আনন্দ। নতুন জামা আসতে দেরি হলে মন খারাপ হয়ে যেত। কে কী পরবে, কখন নতুন জামা পরবে, তা নিয়ে এক দফা আলোচনা হয়ে যেত। বিকেলে আবার খুড়তুতো, জ্যাঠতুতো, পিসতুতো সব ভাইবোনেরা মিলে বাড়িতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতাম।

যদি টলিপাড়ায় ফিরে আসি, তাহলে সেখানেও পয়লা বৈশাখের সঙ্গে সুন্দর স্মৃতি রয়েছে। ওই দিন অনেক ছবির মহরৎ হত। বিভিন্ন ফ্লোরে মিষ্টি ও কোল্ড ড্রিঙ্কের ব্যবস্থা থাকত। ফুল দিয়ে সাজানো হত, সে স্মৃতি খুবই সুখের। সেই আনন্দটা যাঁরা দেখেননি, তাঁরা হয়ত ঠিক বুঝতেও পারবেন না। সেই পয়লা বৈশাখের আনন্দটা এখনও মিস করি। ১লা বৈশাখে আমারও বহু ছবির মহরৎ হয়েছে, বহু ভালো ছবি মুক্তি পেয়েছে। একসময় আমি রবীন্দ্রনাথের বহু নৃত্যনাট্য করেছি, সেগুলি ১লা বৈশাখের দিনই শুরু করতাম।

 আরও পড়ুন- ১লা বৈশাখে বাবার দোকানের জন্য মিষ্টির বাক্স তৈরির মধ্যেই সৃষ্টির আনন্দ খুঁজেছি : পাওলি

বাঙালির এই ১লা বৈশাখের সংস্কৃতিটা যাতে এখন আমার ছেলেমেয়েরাও বুঝতে পারে, অনুভব করে, সেটা আমি পুরোপুরি চেষ্টা করি। আমি যেটা ছোটবেলায় করেছি, সেটাই আমি দুই ছেলেমেয়েকে শেখানোর চেষ্টা করি। গুরুজনদের প্রণাম করা, নিজের জিনিস থেকেই সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া, এগুলো ওদের শেখাই। গতবছরও লকডাউনের মধ্যে ১লা বৈশাখ কেটেছে। খাওয়াদাওয়ার একটি হিড়িক তো থাকেই এই দিন। ওরা যা খেতে ভালোবাসে বাড়িতে সেগুলিই রান্না হয়। গতবার লকডাউনের কারণে এই দিনটা আমি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পেরেছিলাম। আগের বছর এই দিনে আমার ইউটিউব চ্যানেল লঞ্চ হয়েছিল। এবারও করোনার কারণে এখানে (সিঙ্গাপুরে) জমায়েত তো করা যাবে না, তবে এখানকার কিছু সংস্থা আছে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছু করার চেষ্টা করব। 

১লা বৈশাখে আমরা একটাই প্রার্থনা আমরা যেন করোনা মুক্ত হয়ে আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি। এই জটিল পরিস্থিতি থেকে যেন আবার সহজ জীবনে ফিরতে পারি। আশাকরি, পরবর্তীকালে আবারও আমরা সকলে মিলে  ১লা বৈশাখ উদযাপন করতে পারব।

.