Parambrata Chatterjee on Primary TET Movement: `এভাবে রাতে বল প্রয়োগ করে আন্দোলন তুলে দেওয়া সমর্থন করতে পারছি না`
Parambrata Chatterjee on Primary TET Movement: `আমি একটা জায়গায় অনশনে বসব বা ধর্ণা দেব সেটা তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যখন এটা সুষ্ঠ সমালোচনার দিকে এগোচ্ছে তখন রাতের অন্ধকারে তাঁদের তুলে দেওয়া রাজ্য সরকারের কাছেই একটা ক্ষতিকর বিষয়। এটা না করে কী অন্য ব্যবস্থা নেওয়া যেত না?’
Parambrata Chatterjee on Primary TET Movement, অনুসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: বৃহস্পতিবার রাতে করুণাময়ীতে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন পুলিস যেভাবে তুলে দিয়েছে তার প্রতিবাদে মুখর বুদ্ধিজীবীরা। চাকরিপ্রার্থীদের পুলিস যে বলপ্রয়োগ করেছে সেটা অসাংবিধানিক, এই ঘটনার নিন্দা করে একটি ডেপুটেশনে সই করেছেন বেশ কিছু বুদ্ধিজীবী। পুলিস প্রশাসনের এমন আচরণে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র, সুদীপ্তা চক্রবর্তীর মতো তারকারা। এবার সেই তালিকায় নতুন নাম পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এহেন আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ অভিনেতা।
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
জি ২৪ ঘণ্টার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমার মনে হয়, যে তৎপরতার সঙ্গে চাকরিপ্রার্থী অনশনকারীদের গ্রেফতার করা হল, সেই তৎপরতা যদি এই কেলেঙ্কারিতে যাঁরা মূল দোষী তাঁদের গ্রেফতারিতে বা তাঁদের জেলে পুরতে বা তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করতে দেখা যায় তাহলে একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমার ভালো লাগবে বা হয়তো আমি আরেকটু নিশ্চিন্ত হব। অনেকরকম যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এভাবে কেন করা হচ্ছে, ওভাবে কেন করা হচ্ছে, আগে থেকে কোর্টের রায় ছিল ইত্যাদি...কিন্তু যাই হোক না কেন আমার একটা কথাই মনে হচ্ছে, একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কিছু মানুষ তাঁদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছে, সেই আন্দোলনকে এভাবে রাতের অন্ধকারে তুলে দেওয়াটা অত্যন্ত অনভিপ্রেত, আমি সমর্থন করতে পারছি না’।
'আমি শ্যুটিংয়ের জন্য অনেকদিন কলকাতার বাইরে, ভোপালে আছি। আমি বিষয়টা অনেক পরে জেনেছি। বিষয়টা হঠাৎ আমার চোখে পড়েছে আর চোখে লেগেছে তাই এই বিষয়ে আমি বক্তব্য রাখতে চেয়েছি। আমাদের একটা বিষয়ে চিঠি লিখে, মিডিয়ায় বলে, ট্যুইটারে মিসাইল ছুঁড়ে বিরাট কোনও বদল আসবে না। পরের মুহূর্তে আমরা ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাব। সেটা দেশের ক্ষেত্রে হোক বা রাজ্যের ক্ষেত্রে, অনেক অন্যায়ের প্রতিবাদেই আমরা শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতেই সরব হতে পারি। যে পদ্ধতিতে এদের গ্রেফতার করা হয়েছে সেটা আমার ভালো লাগেনি। সেটার সমালোচনা হওয়া প্রয়োজন। যেখানে রাজ্য সরকার ও শিক্ষা পর্ষদ দুজনে মিলে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে একটা আলোচনায় ঢুকছিল। সেটার পর যে পদ্ধতিতে এটা করা হল তা আমার কাছে অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ ও ঠিক নয় বলে মনে হচ্ছে’।
বুদ্ধিজীবীদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই? তবে এই ঘটনায় অনেকেই মুখ খুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই প্রসঙ্গে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কথায় কথায় বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে জবাবদিহি চাওয়াটা একধরনের ট্রোলিং। সেটাকে আমি সমর্থন করতে পারছি না। কোনও এক বুদ্ধিজীবী একসময়ে অসুস্থ থাকতে পারেন, তাঁর মনখারাপ থাকতে পারে, তিনি অন্যদিকে হেলে থাকতে পারেন, সেটা তাঁর ব্যাপার। জনগনও প্রশ্ন তুলতে পারেন সেটা তাঁদের ব্যাপার। একজন দুজনকে ট্যাগ করে 'এরা কোথায়?' লেখা খুবই সোজা। তাঁদের কাজ তাঁরা করেন আর আমার যখন কথা বলতে ইচ্ছে হবে, তখন আমি বলব। এই বিষয়টা চোখে লেগেছে তাই বলছি। তাছাড়া এই আন্দোলনটা খুবই ন্যায্য, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতে পারে না। এই সমস্যার সুরাহা করার জন্যই তো এত আলোচনা! রাজ্য সরকার নিজে আশ্বাস দিয়েছে যে এদের প্রত্যেকের কথা শোনা হবে, পরীক্ষা হবে, ইন্টারভিউ হবে, সেই আলোচনার মধ্যে কিছু মানুষ সংশ্লিষ্ট দাবি নিয়ে ধর্ণায় বসেছে। এবার ওদের একটি রায় বেরিয়েছে যে ওই জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কিন্তু আমি একটা জায়গায় অনশনে বসব বা ধর্ণা দেব সেটা তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যখন এটা সুষ্ঠ সমালোচনার দিকে এগোচ্ছে তখন রাতের অন্ধকারে তাঁদের তুলে দেওয়া রাজ্য সরকারের কাছেই একটা ক্ষতিকর বিষয়। এটা না করে কী অন্য ব্যবস্থা নেওয়া যেত না?’
সেদিনের ঘটনার ফুটেজ দেখে কার্যত মনখারাপ অভিনেতার। তিনি বলেন, ‘গোটা বিষয়টার মধ্যে খুব শো অফ পাওয়ার আছে। এটা তো অনেক মানুষের জীবিকার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের দাবি কতটা ন্যায্য কতটা অন্যায্য সেটা পরে আসবে, আগে তো জীবিকা। ২০১৪ সালে যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁদের বয়স বেড়ে গেছে। এদের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তাতে তো কোনও সন্দেহ নেই। কেউ যদি সত্যি সত্যিই রাজ্য সরকারের শুভকাঙ্খী হয় তাহলে বলতেন যে এটা করবেন না। কারণ এটার সঙ্গে অনেক মানুষের জীবিকা, ইমোশন জড়িয়ে আছে, এটা এভাবে না করলেও হতো’।