নিজের ভুয়ো মৃত্যু সংবাদ শুনে কী হয়েছিল রঞ্জিত মল্লিকের?
দীর্ঘদিনের অপেক্ষে অবশেষে পর্দায় ফিরছেন রঞ্জিত মল্লিক। সোহম ও শুভশ্রীর সঙ্গে একসঙ্গে পর্দায় দেখা যাবে অভিনেতাকে। বাংলা ছবি `হানিমুন` মুক্তির আগে ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি পূজা বসু দত্তের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা।
দীর্ঘদিনের অপেক্ষে অবশেষে পর্দায় ফিরছেন রঞ্জিত মল্লিক। সোহম ও শুভশ্রীর সঙ্গে একসঙ্গে পর্দায় দেখা যাবে অভিনেতাকে। বাংলা ছবি 'হানিমুন' মুক্তির আগে ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি পূজা বসু দত্তের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা।
পূজা- 'হানিমুন' ছবিতে আপনার চরিত্রটা খানিকটা 'বস' টাইপের, এধরণের একটা চরিত্র বেছে নেওয়ার কারণ কী?
রঞ্জিক মল্লিক- প্রথম কথা হাসিই শেষ্ঠ পথ্য বলে আমি মনে করি। হাসি, আনন্দ, ঠাট্টা এসবই মানুষের জীবনে ভীষণ ভাবে প্রয়োজন। আজকাল এত রকম সমস্যার মধ্যে মানুষ থাকে, আর যখন এধরণের একটি 'কমেডি' ছবি হচ্ছে তাই এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব মেনে নিই।
মাঝে মধ্যেই প্রস্তাব আসে অভিনয়ের, অনেকেই বলেন, অন্তত মাঝে মধ্যে একটা দুটো ছবি করুন। আমি বিশেষ রাজি হয়নি। তবে এই মজার ছবিটার প্রস্তাব যখন আসে আমি রাজি হয়ে যাই। আর মজার ছবি করতে আমি ভালোবাসি। 'মৌচাক', 'রাগ-অনুরাগ', 'গ্যাঁড়াকল', সবই মজার ছবি ছিল।
পূজা- সেসময়কার মজার ছবি আর এখনকার মজার ছবি, কোথাও কি আলাদা কিছু মনে হয়, নাকিই একই রকম?
রঞ্জিত মল্লিক- দেখুন, 'হাসি'র যে ব্যাপারটা যে খুব একটা বদলে গেছে তা নয়। এখন যদি 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' দেয়, তা দেখে তখনও যেমন হাসত, এখনও হাসবে। 'মৌচাক' ছবিটা আজ থেকে প্রায় ৩৫ বছর আগের। এখনও লোকে আমায় বলে, দাদা মন খারাপ থাকলে 'মৌচাক'-এর ক্যাসেট চালিয়ে দি। এটা একটা রিলিফ, মজা, আসলে হাসির জায়গাটা আজও একই জায়গায় আছে।
পূজা- 'বস' চরিত্রটা আপনি কীভাবে উপভোগ করেছেন?
রঞ্জিত মল্লিক- খুব মজা পেয়েছি। গল্পটা খুব ভালো, একটা অল্প বয়সী ছেলেমেয়ের সবে বিয়ে হয়েছে, তারা 'হানিমুন'এ গেছে। কিন্তু বস এমন স্ট্রিক্ট যে কাউকে ছুটি দেয় না। ছেলেটা ঠিক করেছে যেভাবে হোক সে 'হানিমুন'এ যাবেই যাবে। এরই মধ্যে ছেলেটির বস যখন বাইরে যাচ্ছে শোনে সেও তখন পালিয়ে 'হানিমুন'এ যায়। আর সেখানে গিয়েও সে ওই বসের সামনেই পড়ে। তারপর লুকোচুরি। বেশ মজার গল্প।
পূজা- তাহলে কি ধরে নিতে পারি, যে নতুন একটা ইনিংস শুরু করছেন, অভিনয়ে ফিরছেন?
রঞ্জিত মল্লিক- না, সেভাবে লাগাতার আর কাজ করব না। তবে মাঝে মধ্যে কাজ করব। হয়ত মাস ছয়েক শ্যুটিং করলাম। আর বাকি সময়টা পরিবারের সঙ্গে অন্যভাবে কাটালাম, এভাবেই চলবে।
পূজা- তখন যে ছবি করতেন, আর এখনও ছবি হচ্ছে, কী বদল পান?
রঞ্জিত মল্লিক- টেকনিক্যালই তো অনেক বদলে গেছে। অনেক এগিয়েছে। তবে বিষয়বস্তুতে সেভাবে আর আকর্ষণ পাই না। বেশি সংখ্যায় মানুষকে টানতে পারে না। কিছু মানুষ পছন্দ করে। আমাকে তো এখনও অনেকে বলে দাদা আপনার পুরনো ছবিই আমার ভালো লাগে। শুধু আমার কাছে কেন অন্যদের কাছেও বলে, যে তাঁদের আগের ছবিই দেখতে ভালোবাসে। অথচ রাগ, দুঃখ, ভালোবাসা, এসবই তো তখনকার ছবিতেও ছিল এখনও আছে। কিন্তু বিষয়বস্তু আর সেভাবে টানে না।
পূজা- কোনওভাবে কি মনে হয়েছে রঞ্জিত মল্লিক এই অভিনেতাকে টাইপ কাস্ট করা হয়েছে?
রঞ্জিত মল্লিক- আমার জীবনের প্রথম ছবি 'ইন্টারভিউ', সেই প্রথম ছবি আবার ২০ বছর পর বাদেও যখন সত্যজিৎ রায়ের 'শাখা প্রশাখা' করেছি, সেখানেও সেই প্রতিবাদী চরিত্র। হয়ত প্রতিবাদের ধরণ বদলেছে। আসছে আমাকে এই প্রতিবাদী চরিত্রতেই মানুষ বেশি পছন্দ করেছে। এর উল্টো করতে গিয়ে দেখেছি ফল ভালো হয়নি।
একবার আমি 'ঈশ্বর পরমেশ্বর' বলে ছবিতে মন্দ লোকের অভিনয় করেছিলাম। সে ছবিটা ভয়ানক ফ্লপ হল। একবার তো কিছু মহিলা এসে আমায় বলেই ফেললেন এধরণের অভিনয় করবেন না। আপনাকে ঠিক মানায় না।
পূজা- এবার একেবারেই অন্য একটা কথা জিজ্ঞেস করি, বেশ কয়েকবার আপনার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই আপনাকে কিংবা আপনার বাড়িতে ফোন করেছে, এই যে সংবাদমাধ্যম থেকে আমারাই হয়ত ফোন করেছি। সেসময়টাতে কী মনে হচ্ছিল।
রঞ্জিত মল্লিক- (হাসতে হাসতে) কারা যে এসব ছড়িয়ে দেয় বুঝি না। অনেকবার হয়েছে। তবে যতবারই এধরণের খবর জানতে ফোন এসেছে কোয়েল ধরেছে বা বাড়ির অন্যকেউ। আমি ধরিনি। আর এটা শুনে কীই বা ভাবব, হাসিই পেয়েছে বরং।
আরও পড়ুন- ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর কেউ যদি কাজ চায়, পরিচালকের কী দোষ, একতা কাপুর