অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: ভোটের মাঝেই তিন প্রজন্মের ভাবনা তুলে ধরল ইন্ডাস্ট্রির নতুন প্রতিভারা। 'তুমি বহু দূর দূর বহু দূর দূর বহু দূর বেড়ে গিয়েছ'- এই কথার মধ্যে দিয়েই বাক স্বাধীনতার গানের কথা গাঁথা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর, অপমানের উত্তরে গর্জে ওঠার এই গানে প্রতিটি মানুষের মনের কথা বলা হয়েছে। এনআরসির সময় অনির্বাণ ভট্টাচার্যের লেখা এই গান যেন ভোটের আগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। সব নাগরিকের কথা বলার অধিকার আছে। কেউ থামাতে পারবেন না, দমাতে পারবেন না। বিজেপি সরকারকে বিঁধলেন, গানের কথায় কটাক্ষ শীর্ষনেতাদেরও। 'তুমি মিথ্যে পুজোতে ব্যস্ত কোনও সত্যি লড়াইয়ে থাকো নি', এই লাইন বের হল অনির্বাণের কলম থেকেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চেয়েছেন অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। তাঁর মতে, 'নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতে গেলে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা হাতে নিতে হয় না, সুশীল সমাজে নাগরিক হিসেবে কথা বলার অধিকার আছে। ঠিক ভোটের আগে দল বদলালে নিজেদের লোভের চেহারাটা বেরিয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষের মতো ইন্ডাস্ট্রির সকলেরও চোখে লাগে। এটাই আদর্শ সময় ছিল এই গানটির মুক্তির। দেশের গণতন্ত্র বলি দেওয়ার জায়গায় চলে গেছে। সেটা যাতে বজায় থাকে, মানুষের অধিকার যাতে বজায় থাকে, তারই প্রচেষ্টা রয়েছে এই গানে।'


আরও পড়ুন-যে পেশাতেই থাকুন না কেন, মানুষ তারকাদের আদর্শ বানান, সেটা ভুললে চলবে না : কোয়েল মল্লিক




আরও পড়ুন-''র‍্যানচো-র পর ফারহানও ভাইরাসের কবলে'', মজা করে Covid আক্রান্তের কথা বললেন মাধবন


ঋতব্রত ভট্টাচার্যের মতে, তাঁরা ভোটের আগে এই গান তৈরি করেছেন কারণ তাঁরা এই সার্কাসের অংশ নন। তাঁর কথায়,'গলায় স্কার্ফ ঝুলিয়ে আমরা বলতে চাই না আমরা মানুষের কাজ করতে চাই। দলীয় পতাকা হাতে তুলে নিই নি। আমরা মানুষের কাজ করতে চাইতাম আজও চাই। লকডাউনে অনেককে দেখেছি তাঁরা কীরকম মানুষের কাজ করতে চান। তখন যে টেকনিশিয়ানরা খেতে পাচ্ছিলেন না তাদের পাশে এসে কেউ দাঁড়ায় নি। আমরা টাকা জোগাড় করতে পারি নি অনেকের কাছ থেকে। যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন সেখানকার মানুষেরই পাশে দাঁড়াতে পারে নি, আগামিদিনেও পারবেন বলে মনে হয় না। আমি ভোটের পরেও দেখতে চাই কীরকম তাঁরা কাজ করেন। ফেসবুকে কবিতা সাতে পাঁচে নেই, সত্যিই নেই, আবার খেলা হবে, সত্যিই ভোটকে খেলাই ভাবেন তাঁরা। এঁদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পাশে পেয়েছি অনেককে।''


কৌশিক সেনের সোজা কথা,'আমরা চাই না বিজেপি আসুক। অন্য যে কোনও দল ক্ষমতায় আসুক, কিন্তু বিজেপি নয়। পশ্চিমবঙ্গে না আসলেও কেন্দ্রীয় সরকারে বিজেপি ক্ষমতায়। সেখানেই ভয়টা। ইউজিসিতে ইতিহাসের সিলেবাস বদলে দেওয়া হোক বা আজই একটি প্রতিবেদনে পড়লাম উত্তরপ্রদেশের কাছে একটি ট্রেন থেকে চারজন নানকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, নারীদের উপর অত্যচার চলছেই, এর থেকে বড় বিপদ আর কী হতে পারে? এইগুলো যাঁরা করছেন তাঁরা কীভাবে আমার রাজ্যকে সোনার বাংলা বানাবেন? ছোট ছোট করে সেই বক্তব্যই রাখার চেষ্টা করেছি। তৃণমূল খুব নড়বড়ে, দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু বিজেপির থেকে কম ক্ষতিকর। আবারও আজকে সিপিএম যখন আব্বাস সিদ্দিকিকে ভরসা করে, সেখানেও কনফিউশন আছে। কিন্তু আমার হাতে সেরাটা নেই, কী করব? এটা দুর্ভাগ্যজনক।''



গানে বিভিন্ন প্রজন্মের অভিনেতারা বক্তব্য রেখেছেন। বর্ষীয়ান অভিনেতা অরুণ মুখোপাধ্যায়ের মতে, যে কোনও বক্তব্যই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক। তিনি নিজে কোনওদিন সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়ান নি। দর্শন ছিল, আজও আছে। শুধুই মানুষের কথাই বলতে চেয়েছেন এই গানের মাধ্যমে। একে ভোট দিন তাকে ভোট দিন বলে লাভও নেই, সবাই সবার দর্শন অনুযায়ীই ভোট দেবেন। নাতির বয়সীদের সঙ্গে কাজ করে খুব ভালো লেগেছে, তাও জানান অভিনেতা।


গানের মাঝে তিন গায়কের উপস্থিতি বেশ নজর কেড়েছে। অনুপম রায়, রূপঙ্কর ও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। এই গানে অংশগ্রহণ করে তাঁরাও কি তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থানের কথা প্রকাশ করলেন! গানের শেষে ছোট্ট মেয়ের কন্ঠে কথা,'আমি অন্য কোথাও যাব না, আমি ভারতবর্ষে থাকব।' পরমব্রতর স্ক্রিন প্লে, মধুরা পালিতের ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল, সেট হিসেবে নাটকের মঞ্চের ব্যবহার থেকে শুভদীপ গুহর কম্পোজিশনে 'নিজেদের মতে নিজেদের গান' ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফিরে পাবেন মানুষ বাকস্বাধীনতা? ভয় না পেয়ে মনের কথা বলতে পারবেন তো কোনও রাজনৈতিক আশ্রয় ছাড়াই?



শাড়ি পরবে না, সালোয়ার কামিজ পরবে না, ওরা হাফ প্যান্টুল পরিয়ে দেবে ওদের বলুন যাও অনেক হয়েছে, কে কী পরবে সেটা যার যার নিজের চয়েজ, ধর্ম যার যার উ।সব সবার  জামা কাপড় যার যার আপনার নিজের ভাল নিজে বুঝবেন , যে যা ভাল বোঝেন তাই পরবেন।