নিজস্ব প্রতিবেদন : বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর (Buddhadeb Dasgupta) প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের (Rituparna Sengupta) কথায়, '' বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Buddhadeb Dasgupta) মানেই আন্তর্জাতিক মান, আন্তর্জাতিক পুরস্কার। ভারতীয় সিনেমাকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। খুব ছোট ছিলাম, তখন আমার এক ডাক্তর কাকু আমায় 'গৃহযুদ্ধ'র সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। তখন আমি খুবই ছোট ছিলাম, তাই সেসময় ওই সিনেমার গুরুত্ব সেভাবে বুঝতে পারিনি। তবে ভালো সিনেমার সঙ্গে পরিচিতিটা সেই সময়ই হয়েছিল। পরবর্তীকালে যখন ছবিটা দেখেছি, তখন মূল্যায়ন করতে পেরেছি। অবাক হয়ে দেখেছি যে চরিত্রগুলোকে এভাবে এক্সপ্লোর করা যায়। এই ছবিতে মমতা শঙ্কর, গৌতম ঘোষ, অঞ্জন দত্তকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। পরবর্তীকালে 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এ উনি আমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেসময়টা আমার কেরিয়ারের শুরু দিক, আমি বুঝতেও পারিনি যে ওই চরিত্রটা আমি করে উঠতে পারি। তারপরেও উনি আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন। আমার নিজের উপর ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না, যে ওই রকম হেবিওয়েট Prostitute, একজন মা, সেই সময়কার এক বলিষ্ঠ চরিত্রে আমি অভিনয় করতে পারব। উনি যে কারণে আমায় অনেক বকাবকি করেছিলেন, আমায় চরিত্রটার জন্য গড়ে তুলেছিলেন। 


আমার মনে আছে, খুব ভোর বেলা শ্যুটিং হত। তারপরেও ওই ম্যাজিক লাইটটা না পেলে ওনি শ্যুট বাতিল করে দিতেন। আমরা তখন খুবই হতাশ হয়ে পড়তাম। পরে সেই ছবি সেরা ছবি হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পায়। সেটা আমার কাছে খুব বড় প্রাপ্তি ছিল। আমি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত সম্পর্কে বলার জন্য খুবই ক্ষুদ্র মানুষ। তবে উনি যে পরিধিতে কাজ করেছেন, বা যা দিয়ে গেছেন, সেটা একটা টেক্সট বুকের মতো। যেটা পরবর্তী প্রজন্ম পড়বে। ওঁর পরবর্তী ছবি 'উত্তরা', যেটাতে অভিনয়ের প্রস্তাব আমার কাছে এসেছিল। যে জন্য উনি আমার বাবাকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ওই সময় আমি অনেকগুলো ছবির কাজ করছিলাম বলে ওই ছবিটা করে উঠতে পারিনি। যেটা আমার সারা জীবনের খারাপ লাগা। আমার বাবাও আমার উপর খুব অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তবে উনি আমার বেশকিছু কাজ দেখে প্রশংসা করেছিলেন, বলেছিলেন, ঋতুপর্ণা নিশ্চয় আমরা আবারও একসঙ্গে কাজ করব। উনি আমায় পুরো নাম ধরেই ডাকতেন। ওঁর মেয়ে আমার সঙ্গে একই স্কুলে পড়তেন।''


_ঋতুপর্ণার কথায়, ''এই রকম একজন ব্যক্তিত্ব আজ আমাদের মধ্যে নেই সেটা আমি ভাবতে পারছি না, ভাববোও না। উনি যে উত্তরাধিকার রেখে গেছেন, সেটা আমাদের সকলের কাছে একটা বড় প্রাপ্তি। আমার ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ পছন্দের ওঁর বানানো ছবি 'বাঘ বাহাদুর', 'চরাচর', 'গৃহযুদ্ধ', 'তাহাদের কথা'। একজন মননশীল ব্যক্তিত্ব, তাঁর একটা তো গুন নয়, অনেক, উনি একজন কবি, চলচ্চিত্র নির্মাতা, একজন সমালোচক, অনেককিছুই মাথায় আসে এই নামটার সঙ্গে। আজকের দিনটা তাই একটা কালো দিন। যাঁর জন্য আমরা এত সমৃদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক স্তরে আমাদের যে পরিচিতি, পুরস্কার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত রেখে গেছেন সেটা থেকে যাবে। আমার কাছে উনি নমস্য, গোটা চলচ্চিত্র জগতের কাছে উনি একজন phenomena।'' 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)