Bangla Bonam Bangali: বাংলা বনাম বাঙালি | গীতিকার হিসাবে দাম পাইনি, আক্ষেপ রূপম ইসলামের
রূপম যখন আছেন, তখন গান হবে না তা কি হয়? তাই রবিবারের `বাংলা বনাম বাঙালি` শোটি শুরুই হয় রূপমের গান দিয়ে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো : বাংলা ভাষার সঙ্গে বাঙালির কি ইদানীং কোনও চোরা লড়াই চলছে? নাকি বাঙালি না বুঝেই বাংলা ভাষার সঙ্গে একটা দ্বৈরথে নেমে পড়েছে? নইলে এত সাধারণ সহজ ভুলভ্রান্তি বারে বারে হচ্ছে কেন? এরকমই কিছু প্রশ্ন জমেছে কবি শ্রীজাত-র মনে। সেই প্রশ্নের উত্তরে খুঁজতেই নতুন শো 'বাংলা বনাম বাঙালি' নিয়ে হাজির শ্রীজাত। কবির সঙ্গে রবিবারের আড্ডায় হাজির ছিলেন সংগীতশিল্পী, রূপম ইসলাম। আর রূপম যখন আছেন, তখন গান হবে না তা কি হয়? তাই রবিবারের 'বাংলা বনাম বাঙালি' শোটি শুরুই হয় রূপমের গান দিয়ে।
শ্রীজাতর কথায়, রূপম ইসলাম একটা গোটা প্রজন্মকে গানের ভাষা, বাঁচার দিশা দেখিয়েছেন। খুব কম মানুষ আছেন, যাঁদের দিকে মানুষ তাকিয়ে থাকেন, তুমি সেই বিরলদের মধ্যে একজন যাঁর দিকে মানুষ তাকিয়ে থাকেন, আবার তরুণ-তরুণীরা তোমায় অনুসরণ করেন। এপ্রসঙ্গে রূপমের উত্তর, এর জন্য আমি মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। শ্রীজাতর কথায় 'বভুক্ষু হিংস্রতার, মুমূর্ষু যুদ্ধসাজ' এই ৪টি ভারী শব্দ একসঙ্গে রয়েছে তোমার গানে, তারপরেও মানুষ শুনছেন। এবং মানুষের সেই কথা মুখস্থ। শিল্পীর কাছে শ্রীজাত প্রথম প্রশ্ন তুমি কীভাবে এই জাদু করলে? রূপমের উত্তর, আমি এই ভাষাতেই কথা বলি, আমার আবহে এই ভাষাই থাকে। আমার আবহে সব ধরনের ভাষার সহাবস্থান। আমার গানে হিন্দি, ইংরাজিও যেমন এসেছে, তেমনই কঠিন বাংলাও এসেছে। কোথাও মানুষের খটকা লাগেনি।
আরও পড়ুন- বাংলা বনাম বাঙালি | 'শিলাজিৎ ছাড়া কেউ কি গাড়ির নম্বর প্লেট বাংলায় লেখেন?'
রূপম জানান, আমি যখন রক মিউজিক শুরু করেছিলাম, তখন আমায় অনেকে বলেছিলেন, বাংলায় রক হয় না। তবে যখন ব্যন্ড তৈরি করলাম, তখনই ঠিক করে ফেলেছিলাম, যে ধরনের গান বানাচ্ছি, সেটাই করব। আমরা তো ধরেই নিয়েছিলাম, হয়ত আমাদের গান কেউ শুনবেন না, আমরা মাটির তলায় চাপা পড়ে থাকব। হয়ত বহু বছর বাদে কেউ খুঁড়ে বের করবেন, যেকারণে আমাদের ব্যান্ডের নাম হয় 'ফসিলস্'। প্রসঙ্গক্রমে শ্রীজাত বলেন, আমাদের দেশে এমন হয়েছে, সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা কাজ মানুষ নেননি, বুঝতে পারেননি। তবে ভালো লাগে তোমাকে মানুষ ভালোবেসেছেন।
রূপম জানান, একসময় তাঁর মা গান লিখতেন। যিনি আকাশবাণীর অনুমোদিত গীতিকার ছিলেন। ওঁর গান পিন্টু ভট্টাচার্য, রামকুমার চট্টোপাধ্যায় গেয়েছেন, ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারও গেয়েছে। আমি এই ব্যকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। রূপমের কাথয়, ১৯৯২ সালে তাঁর মা মারা যাওয়ার পর বাড়িতে গান লেখা বন্ধ হয়ে যায়। তখনই আমি শুরুটা করি। রূপম ইসলামের আক্ষেপ, এই ৩০ বছর গীতিকার হিসাবে কাজ করেও সেভাবে সম্মান পাননি। নানান পুরস্কার বিতরণী হয়েছে, তবে তিনি গীতিকার হিসাবে নমিনেশন পেয়েছেন মাত্র একবার, জিতেছেন। প্রসঙ্গক্রমে শ্রীজাত বলেন, তিনিও আজকাল ছবির গান লিখছেন, তবে ছবির গানের কৃতিত্বে গীতিকারকে সেভাবে ধরা হয়না। সিনেমা পোস্টার হোক কিংবা ইউটিউব রিলিজে গীতিকারের নাম থাকে না।