Sandipta Sen: ‘১৫ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে আমাকে...’ #MeToo নিয়ে মুখ খুললেন সন্দীপ্তা...
Sandipta Sen: `অনেকেই বলে ‘তোদের ইন্ডাস্ট্রিতে তো এরকম হয়েই থাকে’। এই বিষয়ে আমি বলব, আমাদের জীবনটা খুবই ওপেন। আমাদের জীবন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের খুব আগ্রহ থাকে। তারজন্য আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে বেশি কথা হয়।`
সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: মুক্তির প্রথম দিন থেকেই সাড়া ফেলেছে ‘হইচই’-এর নয়া ওয়েব সিরিজ ‘নষ্টনীড়’(Nostoneer)। অদিতি রায়ের(Aditi Roy) এই ওয়েবসিরিজে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সন্দীপ্তা সেন(Sandipta Sen)। #MeToo আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ওয়েবসিরিজ(Web Series) নিয়ে আড্ডায় অভিনেত্রী।
‘নষ্টনীড়’ বললেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম মনে পড়ে, এই গল্পের সঙ্গে কোনও যোগ আছে?
সন্দীপ্তা সেন: আমরা বিভিন্ন সময়ে রবি ঠাকুরের থেকে বিভিন্ন কিছু ধার নিয়ে থাকি, এখানে শুধু নামটা ধার নিয়েছি। বাকি গল্প একেবারেই আলাদা।
আরও পড়ুন- Pori Moni: ‘সব ভুলে আবার এক হলেন!’ মুখ খুললেন পরীমণি ও শরিফুল রাজ...
ছবির গল্প জুড়ে রয়েছে #MeToo আন্দোলন, আপনার কাছে এই আন্দোলন কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
সন্দীপ্তা সেন: আমার কাছে #MeToo একটা প্ল্যাটফর্ম বা মাধ্যম। সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা একটা মুভমেন্ট। এই মাধ্যমে আমরা অনেক মানুষের কাছে এখন আমাদের কথা বলতে পারছি কিন্তু #MeToo র যেটা বক্তব্য সেটা বহু যুগ ধরে চলে আসছে। তখন হয়তো প্রতিবাদ করার সুযোগ কম ছিল। তারজন্য অনেকেই চুপ করে থেকেছে, মেনে নিয়েছে, যাতে সংসারটা না ভাঙে। আবার অনেকে প্রতিবাদও করেছে। তাই আমি #MeToo মুভমেন্টটাকে আমি ভীষণ সাপোর্ট করি। এর জেরে অনেকেই সহজে তাঁদের কথা তুলে ধরতে পারছে। তবে এটাও ঠিক এই আন্দোলনকে অনেকেই নিজের প্রয়োজনে অপব্যবহার করেছে সেই কারণে এর গুরুত্ব অনেকাংশে কমে গেছে।
এখানে একটা সংলাপ আছে, ‘তোরা এত #MeToo দিস কেন?’ তার মানে একাংশের কাছে এটা খুব ক্যাজুয়াল...
সন্দীপ্তা সেন: সেটা কিন্তু খুব একটা ভুল নয়। শুধু #MeToo কেন, ৪৯৮ ও অপব্যবহার করে অনেকে। যাঁদের জন্য এই আন্দোলন তৈরি, আইন তৈরি তাঁরা কজন আর এগুলোর উপকার পায়। অনেকেই অপব্যবহার করে, আর এই অপব্যবহারের কারণেই এই ভয়ংকর অপরাধগুলো গুরুত্ব কমে যায়। সেই ওজনটা কমে যায়।
টলিউডে অনেকেই #MeToo এর অভিযোগ এনেছিল বা এখনও আনে, আপনি কখনও এই পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন?
সন্দীপ্তা সেন: আমি ১৫ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে আছি, আমাকে কেউ কখনও খারাপ ইঙ্গিত দেয়নি। কেউ করলে আমি জোর গলায় প্রতিবাদ করতাম। অনেকেই বলে ‘তোদের ইন্ডাস্ট্রিতে তো এরকম হয়েই থাকে’। এই বিষয়ে আমি বলব, আমাদের জীবনটা খুবই ওপেন। আমাদের জীবন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের খুব আগ্রহ থাকে। তারজন্য আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে বেশি কথা হয়। তবে তুমি যেকোনও প্রতিষ্ঠানে বা ইন্ডাস্ট্রিতে যাও সেখানেই এটা হয়ে থাকে, হয়তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির থেকে বেশিই হয়। অনেকেই ভাবে #MeToo শুধু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিষয়। কিন্তু এটা তো সত্যি নয়। যেকোনও জায়গায়, যেকোনও ক্ষেত্রেই হতে পারে।
এখানে #MeToo-র পাশাপাশি সম্পর্কের গল্পও উঠে আসছে...
সন্দীপ্তা সেন: আমি এই বিষয়েই বলতে যাচ্ছিলাম, নষ্টনীড় শুধু #MeToo নিয়ে নয়। এখানে ইন্টার পার্সোনাল রিলেশনশিপ নিয়েও অনেক কিছু বলা হয়েছে। সম্পর্কের জটিলতা রয়েছে। আমার যে বেস্টফ্রেন্ড রয়েছে, রুকমা রয়েছে সেই চরিত্রে, ওরা একটা লিভ ইন রিলেশনে আছে। সেই লিভ-ইন রিলেশনশিপের কথাও আছে। আবার একজন যে সংসার করতে ভালোবাসে, তাঁর কথাও আছে। দুধরনের সম্পর্কের নানা দিক আছে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এরকম একটা বিষয় ঘটলে যে টানাপোড়েন চলে, সেই বিষয়টা নিয়ে সমাজের চোখ রাঙানি, সবটাই রয়েছে।
আরও পড়ুন- Madhu Mantena-Ira Trivedi's Reception: মধু-ইরার রিসেপশনে চাঁদের হাট
আপনার চরিত্র যে সংসার করতে ভালোবাসে। অনেকেই মনে করেন সংসার করে মানেই সেটা চাপিয়ে দেওয়া পুরুষতন্ত্র, কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই সেটা নয়...
সন্দীপ্তা সেন: হ্যাঁ! এখানেই একটা বক্তব্য রয়েছে। যে সংসার ভালোবাসে, সে যে শুধুই সারাদিন রান্না করে, কাপড় কাচে এরকম নয়। আমার চরিত্রটা সংসার করে বুটিকও চালায়। ওর হাজবেন্ড চায় না ও রান্না করুক কিন্তু ও শখে রান্না করে, সকালে উঠে চা করতে ভালোবাসে, চায়ের ঐ গন্ধটা ওর পছন্দ। সংসারের প্রতি যত্ন নেওয়াটা মানেই এই নয় যে নিজের আইডেন্টিটি বিসর্জন দেওয়া নয়। অনেকেই ভালোবেসে ইচ্ছে করেই সংসার করে। ইচ্ছে থেকে যা করছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।