অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়- মিডিয়ার সামনে তাঁকে বেশ কিছু বছর কথা বলতে দেখা যায় না। তিনি বিশ্বাস করেন নিজের সম্বন্ধে কথা বলে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়া যায় না। মানুষ যদি চান তাঁকে তাঁর সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে মনে রাখবেন। ৯২ বছরে দাঁড়িয়েও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চান, প্রতিনিয়ত মনকে সময়োপযোগী করতে চান তিনি। এবার তিনি ধরা দিচ্ছেন তথ্যচিত্রে। রাজনীতিক শতরূপ ঘোষ এই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তিনি বর্ষীয়ান পরিচালক তরুণ মজুমদার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Raj Vs Srijit: রাজ-সৃজিতের মন কষাকষি, মান-অভিমান কি মিটল?


পরিচালকের অনুমতি পেতে যদিও কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। অনেক পরিচালকই তাঁর কাছে তথ্য়চিত্র তৈরি করার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে তিনি একটু বেশি নম্বর দিয়ে এগিয়ে দিয়েছেন শতরূপ ঘোষকে (Shatarup Ghosh)। কেন তা অবশ্চয খোলসা করেননি পরিচালক। চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম কান্ডারির নাম তরুণ মজুমদার। তাঁর ছবির অপেক্ষায় থাকেন না এমন বাঙালি পাওয়া বিরল। ছবিতে মানুষের মন বুঝে একান্নবর্তী পরিবারের প্রতিটি সদস্য়ের মন ছুঁয়ে যেতে পারেন তিনিই। যেন মনের গভীরে নাড়া দিয়ে য়ায় লুকোনো চাপা কান্না। গানে গানেও ভরিয়ে দিয়ে যায় দর্শকের মন। 



সমাজের বুক থেকে গল্প তুলে এনে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে কজনই বা পারেন? পরিচালকের ভাবনা যেমন আলাদা তেমনই তাঁর অভিনেতাদের প্রতি আচরণ একেবারে অন্যরকম। মাটির সঙ্গে মিশে থাকলেই শিল্পী হওয়া যায়, মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন। কত গল্প জড়িয়ে রয়েছে এক জীবন জুড়ে। যে উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেন তাঁকে সহকারি পরিচালক থেকে পরিচালক হিসাবে হাত পাকানোর জন্য উৎসাহ  দিয়েছিলেন, তিনিই মহানায়ককে নিয়ে প্রথম ছবি করলেন ‘চাওয়া-পাওয়া’। এই ছবির পর আর কিন্তু উত্তম কুমারকে নায়ক হিসাবে তাঁর ছবিতে নেননি, কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই তথ্যচিত্রে প্রথমবার জানিয়েছেন তিনি। বলা ভাল প্রথম এই বিষয়ে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান পরিচালক। আবার যে সময় তাবড় তাবড় সঙ্গীত পরিচালকেরা একের পর এক হিট গান উপহার দিচ্ছেন টলিউডে সেখানে কেন সব ছবিতেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে বেছে নিতেন তিনি, এই সবকিছুর উত্তর রয়েছে শতরূপ ঘোষের তথ্যচিত্রে। 



স্থানীয়দের সঙ্গে কীভাবে মিশে যাওয়া যায়, সকলকে নিয়ে উদযাপন করা যায়, বেঁচে থাকার রশদ কীভাবে তৈরি করা যায় মুহূর্ত দিয়ে শতরূপ এই সবকিছু ধরতে চেয়েছেন তাঁর প্রথম পরিচালিত তথ্যচিত্রে। নিজের জীবনেও প্রতি নিয়ত বর্ষীয়ান পরিচালকের সঙ্গ উপভোগ করছেন শতরূপ। সদ্য ‘অপরাজিত’ দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন শিল্পীকে। ছবি দেখে উদার কণ্ঠে পরিচালকের জনসমক্ষে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি, নিরাপত্তাহীনতার উর্দ্ধে উঠে বুকে টেনে নিয়েছিলেন অনুজপ্রতীম অনীককে। এ তো তাঁর অগ্রজ শিল্পীরই দেখানো পথ। কারণ ‘সংসার সীমান্ত’ ছবিটি তৈরি করার পর সত্যজিৎ রায় তাঁর ছবি দেখে বলেছিলেন এই ছবি বিদেশের বহু ফেস্টিভ্যালে যাওয়া উচিৎ। ফেস্টিভ্যালের জন্য ছবির কিছু অংশের কোলাজ করে তা ফেস্টিভ্যালে পাঠাতে হয়। কাজে ব্যস্ত থাকায় তরুণ মজুমদারের সময় বের হচ্ছিল না, তাই কিছুতেই পাঠানো হচ্ছিল না ছবি।  সত্যজিৎ রায় নিজের স্মৃতি থেকে মিনিটের হিসাবে দৃশ্য লিখে রেখেছিলেন পাতায়, এবং সেই পাতাটি তরুণ মজুমদারের হাতে দিয়ে বলেছিলেন এই ছবিটি গোটা পৃথিবীর দেখা উচিৎ। সত্যজিৎ রায়ের হাতে লেখা সেই কাগজটা এখনও তরুণ মজুমদারের কাছে আছে। এমনই নানা অজানা কথায় মুড়ে থাকবে ‘জীবনপুরের পথিক’, যা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করবে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সিনেমাপ্রেমীরা।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)