জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: স্বাধীন ভারতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রত্যাখ্যান করা প্রথম বাঙালি তিনি। ১৯৫৯ সালের আজকের দিনে (২ ফেব্রুয়ারি) ফিরিয়ে দিয়েছিলেন 'পদ্মভূষণ'। শুধু তাই নয়, সরকার থিয়েটারের জন্য কিছু যে করেনি, তা-ও উল্লখ করতে ভোলেননি। দুঃসাহসে বলেছিলেন, রাষ্ট্রীয় সম্মান আদতে স্তাবকের দল গঠনের প্রচেষ্টা মাত্র। জানতে চাইছেন তো, কে তিনি?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Swami Vivekananda’s Birth Anniversary: যথাবিহিত শ্রদ্ধা ও মর্যাদার সঙ্গে বেলুড়ে উদযাপিত স্বামীজির জন্মতিথি


সবুর করুন। বরং তাঁর আর একটু পরিচয় নিন। ১৯১২ সালে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে রবীন্দ্রনাথের 'বৈকুণ্ঠের খাতা' নাটকে কেদার চরিত্রে তাঁর অভিনয় দেখে স্বয়ং কবি বলেছিলেন, 'কেদার আমার ঈর্ষার পাত্র। একদা ওই পার্টে আমার যশ ছিল।' আরও উদগ্রীব হয়ে উঠছেন তো, এই মানুষটি কে জানতে?


তিনি এক ও অদ্বিতীয় শিশির ভাদুড়ি। ১৯৫৯ সালে ভারত সরকারের দেওয়া দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান 'পদ্মভূষণে' ভূষিত হন তিনি। কিন্তু ওই পুরষ্কার নিতে অস্বীকার করেন তিনি। করেন এই বলে যে, তিনি যদি এই পুরস্কার নেন, তাহলে একটি ভুল সংকেত পাঠানো হবে যে, সরকার যেন দেশে থিয়েটার সংস্কৃতির প্রচারে সাহায্য করেছে! শুধু তাই নয়, তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, সরকার সম্মান দেয় আসলে তার চারপাশে কিছু স্তাবক তৈরি করতে। রাষ্ট্রীয় সম্মান আদতে স্তাবকের দল গঠনের এক প্রচেষ্টা মাত্র!


আরও পড়ুন: Sundarbans: রোমহর্ষক! বাঘের ডেরায় তাড়া করে দুই জলদস্যুকে পাকড়াও, মিলল হরিণপোড়া ছাইও...


১৮৮৯ সালের ২ অক্টোবর মেদিনীপুরে জন্ম। স্কটিশ চার্চ কলেজে অধ্যয়ন। মেট্রোপলিটন কলেজে (আজকের বিদ্যাসাগর কলেজ ) অধ্যাপনা। অভিনয়টা বরাবরই ছিল। তবে ১৯২১ সালে পূর্ণ-সময়ের মঞ্চ অভিনেতা হওয়ার জন্য চাকরি ছেড়ে দেন। গিরিশচন্দ্র ঘোষের পর শিশির ভাদুড়ি একার হাতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বাংলা থিয়েটারের। আধুনিক বাংলা নাট্যজগতের পথিকৃৎ বলা হয় তাঁকে। নিজে খ্যাতনামা অভিনেতা ছিলেন, ছিলেন নাট্যকার, নাট্য সংগঠক, নাট্য পরিচালক। বাংলা রঙ্গমঞ্চের কিংবদন্তিতুল্য ব্যক্তিত্ব। নাট্যাচার্য। আধুনিক বাংলা থিয়েটারের পথপ্রদর্শকও। বাংলা নাটকে তিনিই প্রথম মঞ্চসজ্জা ও আলোর ব্যবহার প্রবর্তন করে নাট্যশিল্পীদের কর্মকুশলতাকে বাস্তবতার আঙ্গিকে উত্তরণ ঘটানোর পথ দেখান। নাট্যাচার্য শিশিরকুমার ১৯৫৯ সালের ৩০ জুন কলকাতার বরাহনগরস্থিত নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন। রেখে যান এক অনন্য নজির, রচনা করে যান এক অতুলনীয় ইতিহাস-- নাট্যপ্রজ্ঞার, ব্যক্তি-স্বাধীনতার, সত্যবাচনের ও আত্মপ্রকাশের নিষ্ঠার।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)