Zayed Khan | Sayantika Banerjee: ‘অন্যের দোষ ঢাকতে আমার চরিত্রে কালি ছেটাচ্ছেন’, সায়ন্তিকা প্রসঙ্গে বিস্ফোরক জায়েদ
Zayed Khan | Sayantika Banerjee: জায়েদ খানের দাবি, কিছু মানুষ সারাদিন তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতেন। তাঁরা যদি আগেই জানতেন যে সায়ন্তিকা জায়েদের সঙ্গে কাজ করবেন তাহলে হয়তো তাঁরা সায়ন্তিকাকে বাংলাদেশে আসতেই দিত না বলে দাবি করেন জায়েদ।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়(Sayantika Banerjee)। জায়েদ খানের(Zayed Khan) বিপরীতে ‘ছায়াবাজ’ ছবিতে অভিনয় করতেই যান তিনি। কিন্তু দুদিন আগেই শোনা যায় যে সেই ছবির শ্যুটিং ছেড়েই নাকি কলকাতায় ফিরে এসেছেন নায়িকা। এরপর সায়ন্তিকা জানান যে শ্যুটিংয়ে এক কোরিওগ্রাফার নাকি অনুমতি না নিয়েই স্পর্শ করেছে, সেই কোরিওগ্রাফারের সঙ্গে কাজ করতে চাননি অভিনেত্রী। প্রযোজককে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও সুরাহা হয়নি।
আরও পড়ুন- Gaurav-Ridhima: বাবা-মা হলেন গৌরব-ঋদ্ধিমা, ছেলের নাম কী রাখলেন তারকা-দম্পতি?
তাজু কামরুলের পরিচালনায় সিনেমার শুটিং করতে গত ৩০ আগস্ট ঢাকায় যান সায়ন্তিকা। সেদিন বিকালেই নায়ক জায়েদ খানের সঙ্গে কক্সবাজারে উড়ে যান তিনি। কথা ছিল ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুটিং করার। কিন্তু তিনি সেটি না করে ৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ফিরে আসেন সায়ন্তিকা। বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যায় যে গান দিয়ে শুরু হয় শ্যুটিং। নির্বিঘ্নেই শেষ হয় প্রথম গানের শুটিং। দ্বিতীয় গানের শুটিং চলাকালীন হঠাৎ করেই নাকি সায়ন্তিকা অভিযোগ করেন নৃত্য পরিচালক মাইকেলের বিরুদ্ধে। অভিনেত্রীর দাবি, নৃত্য পরিচালক অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তাঁকে স্পর্শ করেছে। তাই পরিবর্তন করতে হবে নৃত্য পরিচালককে, অন্যথায় কাজ করবেন না তিনি।
এই প্রসঙ্গে সায়ন্তিকা বলেন সমস্যা প্রযোজকের তরফেই। প্রথমে অন্য মাস্টারজি এসেছিলেন নাচের দৃশ্য শুটিংয়ের জন্য কিন্তু সেখানেও টাকাপয়সা নিয়ে সমস্যার জন্য তিনি চলে যান। তার পর মাইকেল নামক একটি ছেলে আসে। সত্যিই কি শ্যুটিং ছেড়ে কলকাতায় চলে এসেছেন সায়ন্তিকা? এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, “আমি এক জন পেশাদার শিল্পী। তাই এ রকম করার কথা ভাবতেই পারি না। মাইকেল আমার থেকে অনুমতি না নিয়েই হাত ধরে আমায় সরাতে গিয়েছিল। তখন আমি সকলের সামনেই বাধা দিই। বারংবার আমি প্রযোজক মনিরুলের সঙ্গে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কোনও উত্তরই পাওয়া যায়নি। ওঁর কোনও পরিকল্পনা নেই। কোনও ব্যবস্থা নেই।’’ তিনি জানান যে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করার পরেও যখন মনিরুল তাঁর কথার উত্তর দেননি। সায়ন্তিকার দাবি, “তিনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করেন, তা হলে আমি নিশ্চয়ই ছবিটার কাজ শেষ করব। কিন্তু তার আগে আমায় চিত্রনাট্য, শট ডিভিশন পুঙ্খানুপুঙ্খ জানাতে হবে।”
নায়িকার অভিযোগ প্রযোজকের বিরুদ্ধে হলেও বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের দাবি আলোচনায় জায়েদ খানের নামও উঠে আসছে। শুধু তাই নয়, হোটেল রুমে একান্তে সময় কাটানোর বিষয়েও কথা উঠেছে। তবে জায়েদ খানের দাবি, ‘সায়ন্তিকা কোথাও বলেননি যে মাইকেল হাত ধরায় তার আপত্তি। তিনি কিন্তু শুটিং শেষ করে চলে গেছেন। সায়ন্তিকা ক্লিয়ার করেছেন মূল সমস্যাটা কোথায়। এখানে অন্য কোনো ব্যাপার নেই। মাঝখান থেকে কেউ কেউ ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে, আমাকে খারাপ বানানোর চেষ্টা করছে। সায়ন্তিকা কোথায় বলেছেন যে মাইকেল কাজ করলে তিনি কাজ করবেন না? হয়তো স্পটে রেগে বলতেও পারেন। অফিসিয়ালি তো কোথাও বলেননি, মাইকেলের সঙ্গেই কাজ শেষ করে তিনি কলকাতায় গেছেন।’
অন্যদিকে কোরিওগ্রাফার মাইকেল বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমার সঙ্গে নায়িকার ভালো সম্পর্ক ছিল। আমাকে দাদাভাই বলেও সম্বোধন করেছেন সায়ন্তিকা। প্রথম একটা গান ভালোভাবেই শেষ করেছি। কিন্তু দ্বিতীয় গানের ক্ষেত্রে আমি দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে পোশাক পরিবর্তন ও লাঞ্চ ব্রেক হিসেবে এক ঘণ্টা সময় দিলেও জায়েদ খান ও সায়ন্তিকা শুটিং স্পটে উপস্থিত হন সন্ধ্যার পরে, যখন সূর্য ডুবে গেছে। ডে লাইট ছাড়া ওই শুট হবে না। আমাকে প্রযোজক বিষয়টি নিয়ে কথা শোনান।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাধ্য হয়ে পরদিন শুটিং করি। শুটিং শেষ হয়। ওই গান করার সময় আমি সব বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু সায়ন্তিকার ঠিকঠাক হচ্ছিল না। পরে আমি জায়েদ ভাইকে বললাম, জায়েদ ভাই বললো দেখায়ে দাও। আমি দেখাতেই তার হাতে স্পর্শ লাগে। তখন সায়ন্তিকা বলেন, তুমি আমার হাত ধরছ, পারমিশন নিছো? আমি বললাম, দুদিন ধরে তো এভাবে কাজ করলাম। হাতে হাত লেগেছে। আমরা যেহেতু কাজ করি, হাত ধরতে হয়। তিনি বলে দেন, আর কাজ করবেন না। পরিচালক ও প্রযোজক আমার ভুল ধরতে পারেননি।’
এ বিষয়ে জায়েদ খান এই দেরি হওয়ার নেপথ্যেও প্রযোজককে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘কস্টিউমের সমস্যা রয়েছে। লেদারের কিছু ড্রেস প্রয়োজন। যা যা প্রয়োজন সব জানানো হয়েছে প্রযোজককে। ড্রেস পরিবর্তন করতে গিয়ে যদি ড্রেস না পাওয়া যায় এবং তার বিকল্প কী হতে পারে এসব ঠিক করবে কে? আর সায়ন্তিকা ডেইলিবেসিসে কাজ করেন। তিনি ওই ব্রেকে যাওয়ার সময় হোটেলে পেমেন্ট পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু প্রযোজক সেটা পাঠাননি, মূলত দেরি হবার এটাই কারণ। এটাকে ইস্যু করার কিছুই নেই। এটাকে একটি চক্র অন্যদিকে ঘটনার মোড় নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমার চরিত্র নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলে কালিমা লেপনের চেষ্টা করছে কয়েকজন, যাদের আমি চিনি।’