সুদীপ দে: সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬০৩। এই ভাইরাসের প্রকোপে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ১১ হাজার ৭৬৮ জনের। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে লক ডাউন চলছে আমেরিকা, ইতালি, স্পেন, ভারত-সহ সারা বিশ্বের ১৮৫টি দেশে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভারতে এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ৬৩২। এ দেশে এখনও পর্যন্ত ৯৩৪ জনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে করোনা থেকে মুক্তির এখনই কোনও উপায় দেখছেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর প্রধান টেডরোজ অ্যাডানম ঘিব্রিইয়েসাস। WHO-এর প্রধান আরও জানান, এখনই লকডাউন ছেড়ে বেরোনো কোনও দেশের পক্ষেই উচিত নয়। বিপদ এখনও কাটেনি।


ভারত-সহ এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে বৈশাখী তাপমাত্রার পারদ চড় চড় করে বেড়ে চলেছে। একটা সময় অনেকেই আশা করেছিলেন গরম এবং আর্দ্রতা বাড়লে হয়তো কমবে করোনা সংক্রমণের গতি। কিন্তু তাপমাত্রা আর আর্দ্রতা বাড়লেও ভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা এখনও ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে ঠিক কত তাপমাত্রায় করোনাভাইরাস সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়ে যায় তা জানালেন মোহালির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর অধ্যাপক ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডঃ ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়


ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়ায় যদি করোনাভাইরাসের প্রকোপ সত্যিই কমত, তাহলে কেরল বা মহারাষ্ট্র, বিশেষ করে মুম্বইয়ে এই ভাইরাস কোনও ভাবেই এতটা সংক্রমিত হত না। এপ্রিল মাসে এই দুই রাজ্যের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা মার্চের তুলনায় অনেকটাই বেশি। অথচ, এপ্রিল মাসেও এই দুই রাজ্যে করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে এর আগে দাবি করা হয়েছিল ২৩ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে দুর্বল হবে করোনাভাইরাস। কিন্তু সে তত্ত্ব যে ভুল, তা তো এখন বোঝাই যাচ্ছে।



তাহলে কোন তাপমাত্রায় করোনাভাইরাস সম্পূর্ণ রূপে বিনষ্ট হয়ে যায়?


ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ বিষয়ে গবেষণাগারে দীর্ঘ গবেষণা চলেছে। সম্প্রতি একদল ফরাসি বিজ্ঞানী তাঁদের গবেষণা পত্রে উল্লেখ করেছেন, তিন রকম তাপমাত্রায় করোনাভাইরাসের উপর প্রভাব লক্ষ্য করা হয়েছে। ৫৬ ডিগ্রি, ৬০ ডিগ্রি এবং ৯২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় করোনাভাইরাসের প্রভাব লক্ষ্য করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, ৯২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এই ভাইরাস সম্পূর্ণ রূপে বিনষ্ট হয়ে যায়।


আরও পড়ুন: উপসর্গ প্রকাশের ১৮ ঘণ্টা আগেই ছড়াতে শুরু করে করোনা; ধরা পড়ে না র‌্যাপিড টেস্টেও!


ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে চাই বাড়তি সতর্কতা। কারণ, শুধু লকডাউনই করোনার সমাধান নয়, এর সঙ্গেই প্রয়োজন পর্যাপ্ত টেস্টের! অনেক ক্ষেত্রেই র‌্যাপিড টেস্টেও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে না! চিনে ৪৪ শতাংশ করোনা আক্রান্তের শরীরে ভাইরাসের কোনও উপসর্গই ছিল না। আর এই উপসর্গহীন সংক্রমণই ভয় বাড়াচ্ছে চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞদের। শুধু তাই নয়, করোনায় মৃতদের দেহের সৎকারের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত উপযুক্ত সতর্কতার। আর করোনায় মৃতদের দেহের সৎকারের ক্ষেত্রে ফরাসি বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাপত্রের কথা মাথায় রাখা জরুরি।