নিজস্ব প্রতিবেদন: রবিবার রাশিয়ার সেকেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (Sechenov First Moscow State Medical University) বিজ্ঞানীরা তাঁদের তৈরি করোনা প্রতিষেধকের চূড়ান্ত পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল পর্ব শেষ হওয়ার খবর জানান।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী রাশিয়ার গামালেই ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি (Gamalei Institute of Epidemiology and Microbiology)-এর ডিরেক্টর আলেকজান্ডার গিনস্টবার্গ (Alexander Gintsburg) সে দেশের সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ১২ থেকে ১৪ অগাস্টের মধ্যেই এই প্রতিষেধক বাজারে ছাড়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে সংস্থা।


কিন্তু আদৌ কি প্রতিষেধক তৈরিতে সমস্ত সুরক্ষা, কার্যকারিতা পরীক্ষার নিয়ম-কানুন মানা হয়েছে রাশিয়ার গামালেই ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনা টিকার ক্ষেত্রে? প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি অসঙ্গতি ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। আসুন সেগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক...


জানা গিয়েছে, ১৮ জুন থেকে করোনা প্রতিষেধকের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করেন রাশিয়ার সেকেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। ১২ জুলাই বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দেন, প্রতিষেধকের চূড়ান্ত পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল শেষ হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এক মাসেরও কম সময়ে কী করে তিন পর্যায়ে হিউম্যান ট্রায়াল শেষ করলেন তাঁরা? এত অল্প সময়ের মধ্যে কী আদৌ কোনও প্রতিষেধকের সুরক্ষা, কার্যকারিতা পরীক্ষা করে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব?


সেকেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁদের তৈরি করোনা প্রতিষেধকটি ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর প্রয়োগ করে দেখা হয়েছে। কিন্তু WHO-এর পরামর্শ অনুযায়ী, যে কোনও প্রতিষেধকের দ্বিতীয় হিউম্যান ট্রায়ালে অন্তত ১০০ জন এবং তৃতীয় পর্যায়ে হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকের উপর প্রতিষেধকের সুরক্ষা, কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা প্রযোজন।


৭ জুলাই WHO-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রুশ বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনা প্রতিষেধকটির প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল চলছে। টিকার সুরক্ষা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে অন্তত ৩-৪টি ট্রায়ালের প্রয়োজন। কিন্তু এর মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যেই সেকেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দেন, তাঁদের তৈরি টিকার হিউম্যান ট্রায়াল শেষ, এটি নিরাপদ। কী ভাবে এত দ্রুত এই টিকার সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হলেন রুশ বিজ্ঞানীরা, উঠছে প্রশ্ন।


আরও পড়ুন: অনেক দেশই ভুল পথে এগোচ্ছে, আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে করোনা পরিস্থিতি! আশঙ্কা WHO-এর


সব মিলিয়ে যে কোনও প্রতিষেধক তৈরির ক্ষেত্রে যে সমস্ত সুরক্ষা বিধি, যে সব পরীক্ষা পর্যায় মেনে চলার কথা, সে সব সঠিক ভাবে মেনে টিকা তৈরিতে প্রায় এক বছর সময় লেগে যায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার বেশিও সময় লাগতে পারে। সেখানে সেকেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা কী ভাবে এক মাসের মধ্যে তা সেরে ফেললেন? এ ক্ষেত্রে কী আদৌ প্রতিষেধক তৈরির সমস্ত সুরক্ষা বিধি, সব পরীক্ষা পর্যায় মেনে চলা হয়েছে? সামনে আসা একাধিক অসঙ্গতিতে উঠছে প্রশ্ন। তাই রুশ বিজ্ঞানীদের তৈরি এই টিকা কতটা নিরাপদ, এ বিষয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিজ্ঞানীদের একাংশ।