নিজস্ব প্রতিবেদন: মদ এক ফোঁটাও খাননি, তথচ ব্রেথালাইজার মেশিন বলছে আপনি আকণ্ঠ পান করেছেন! মাথাটা একটু ঝিমঝিম করছে বটে, তবে সেটা হয়তো অসুস্থতার কারণে, নেশা হয়েছে বলে নয়। কিন্তু পুলিস আপনার মুখ থেকে মদের চড়া গন্ধ পাচ্ছে তখনও। তাই আপনি যে মদ খাননি, সে কথা বিশ্বাসই করছেন না তাঁরা। এমনও আবার হয় নাকি, এক ফোঁটাও মদ খাননি, তথচ ব্রেথালাইজার মেশিনের রিপোর্ট বলছে আপনি মদ্যপ! এ-ও কি সম্ভব!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চিকিত্সা বিজ্ঞান বলছে, সম্ভব। যদি আপনি ‘অটো-ব্রুয়ারি সিন্ড্রোম’ (Auto-brewery Syndrome) নামের বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে নিজে থেকেই অ্যালকোহল উৎপন্ন হয়।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানাচ্ছেন, ‘অটো-ব্রুয়ারি সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত ব্যক্তির খাদ্যনালীতে ‘স্যাকারোমাইসিস সেরাভিসিয়াই’ (Saccharomyces cerevisiae) নামের ইস্ট বা ছত্রাক সৃষ্টি হয় এবং তা অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। সুরা শিল্পে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এই ‘স্যাকারোমাইসিস সেরাভিসিয়াই’ নামের ইস্ট ব্যবহার করেই।


বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ছত্রাক শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট জাতিয় খাবারকে ইথানলে পরিণত করে। তাই ‘অটো-ব্রুয়ারি সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত ব্যক্তি কার্বোহাইড্রেট জাতিয় খাবার খেলেই কোহল-সন্ধান প্রক্রিয়ায় শরীরে মদ তৈরি হয় যা রক্তেও মিশে যায়। ফলে শুধু ব্রেথালাইজার মেশিনেই নয়, রক্ত পরীক্ষা করালেও মিলবে অ্যালকোহলের উপস্থিতি। তাই ‘অটো-ব্রুয়ারি সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত ব্যক্তি যে আদৌ মদ্যপান করেননি তা প্রমান করা বা বিশ্বাস করা যে কোনও মানুষের পক্ষেই কঠিন।


আরও পড়ুন: জলের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনাভাইরাস! ঠিক যেমন হয়েছিল ১৩ বছর আগে, আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের


১৯৭০ সাল নাগাদ জাপানে প্রথম এই রোগের খোঁজ মেলে। এরও বছর দশেক পর আমেরিকায় ‘অটো-ব্রুয়ারি সিন্ড্রোম’-এর অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। রিচমন্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের দাবি, অত্যাধিক পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার ফলে আমাদের খাদ্যনালীতে থাকা উপকারি ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা কমে গিয়ে ‘স্যাকারোমাইসিস সেরাভিসিয়াই’ নামের ইস্ট বা ছত্রাকের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরে বাসা বাঁধে ‘অটো-ব্রুয়ারি সিন্ড্রোম’-এর মতো বিরল রোগ।