হাইপারটেনশনও হতে পারে প্রাণঘাতী! জেনে নিন নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়ে
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতের মোট প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের এক তৃতীয়াংশ উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় আক্রান্ত।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নিঃশব্দে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে হাইপারটেনশন। সময় মতো ব্যবস্থা না নিতে পারলে এই রোগ প্রাণঘাতীও হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন, মানসিক চাপ, অনিয়মিত ডায়েট এবং শরীরচর্চার অভাব, এ সবই উচ্চরক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতের মোট প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের এক তৃতীয়াংশ উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর এই সমস্যায় দেশের প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আশঙ্কার বিষয় হল, মানসিক চাপ এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ফলে ২০-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যেও বাড়ছে হাইপার টেনশনে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা।
চিকিত্সকদের মতে, শরীরে রক্তচাপ বাড়ার মূল কারণ অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। জীবনযাত্রায় এবং খাদ্যতালিকায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে ওযুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা। কিন্তু কী ভাবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক...
নুন কম খাওয়া: উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রথমেই নুন খাওয়া কমাতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত নুন রক্তে মিশে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায় এবং দেহে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে রক্তচাপ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। বাড়তে পারে কিডনির সমস্যাও। রান্নায় ছাড়া, খাবার পাতে কাঁচা নুন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে, রান্নাতেও যতটা সম্ভব নুন কম দিন।
ডায়েটে রাখুন কলা: কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম যা রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। দিনের যে কোনও সময়েই কলা খাবার চেষ্টা করুন।
তরমুজ: তরমুজে রয়েছে লাইকোপিন, পটাসিয়াম, ভিটামিন এ এবং ফাইবার যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অ্যামিনো অ্যাসিড এল-সিট্রুলিন সমৃদ্ধ তরমুজ শুধু রক্তচাপ নয়, শরীরের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
মধু: প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ মতে, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবচেযে উপকারি হল মধু। এক কাপ উষ্ণ গরম জলে এক চামচ মধুর সঙ্গে ৫-১০ ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খেতে পারলে রক্তচাপ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
সবুজ সবজি খাওয়া: অতিরিক্ত তেল আর মশলাদার খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। মশলাদার খাবারের বদলে পাতে বেশি করে রাখুন সবুজ শাক-সবজি। সিদ্ধ বা বা সামান্য তেলে রান্না করা সবজি শরীরে ক্যালোরির মাত্রা ধরে রাখে। ফাইবার সমৃদ্ধ সবুজ সবজিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফোলেট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
পাতে থাক ওটমিল: ওজন কমাতে এবং এনার্জি বাড়াতে ওটসের কোনও বিকল্প নেই। ডায়েটিশিয়ানরা সকালে ওটস খাওয়ারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ওটসে সোডিয়ামের মাত্রা খুব কম, তা ছাড়া রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কমলালেবু: নিউট্রশনিস্ট বা পুষ্টিবিদদের মতে, কমলালেবুর রসের সঙ্গে ডাবের জল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে দিনে ২ থেকে ৩ বার খাতে পারলে রক্তচাপ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।