নিজস্ব প্রতিবেদন: এ রোগের ‘ডাকনাম’ ‘জয়বাংলা’, অনেকে আবার একে ‘চোখ উঠেছে’ বলেও ব্যাখ্যা করেন। তবে চিকিত্সকেরা একে বলেন কনজাংটিভাইটিস। কনজাংটিভাইটিস বা ‘পিঙ্ক আই’ মারাত্মক কোনও রোগ না হলেও এটি খুবই অস্বস্তিকর। কনজাংটিভাইটিস হলে চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠে, চোখ কটকট করে। চোখ জ্বালা করার সঙ্গে সঙ্গে চোখ থেকে জল পড়া, পিচুটি কাটার মতো সমস্যাও দেখা যায় কনজাংটিভাইটিস হলে। তবে এ সবই নাকি করোনাভাইরাসের একটি নতুন উপসর্গ!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে। ওই সমস্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চিনে ৩৮ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ১২ জন কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত। এই ১২ জনের চোখ থেকে নির্গত পিচুটি বা শ্লেষ্মা জাতীয় পদার্থে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে!


৩১ মার্চ আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি পত্রিকায় প্রথম এই খবর প্রকাশিত হয়। আবার ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এর একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, চিনে ১০৯৯ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে মাত্র ৯ জন কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত।


অ্যামেরিকান অ্যাকাডেমি অব অপথ্যালমোলজির মুখপাত্র ডঃ সোনাল তুলি জানান, করোনাভাইরাসের উপসর্গ কনজাংটিভাইটিস, এ ভাবে বলা যায় না। কারণ গোটা বিষয়টি এখনও প্রমাণসাপেক্ষ, অনুমানভিত্তিক। চোখ লাল হয়েছে মানেই কনজাংটিভাইটিস হয়েছে, এটা যেমন বলা ঠিক নয়, তেমনই কনজাংটিভাইটিসকে করোনাভাইরাসের উপসর্গ হিসাবে বলে দেওয়া উচিত নয়।


আরও পড়ুন: মশার কামড় থেকেও কি সংক্রমিত হতে পারে করোনাভাইরাস? জানালেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞ


Centers for Disease Control and Prevention সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন (CDC) বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO করোনাভাইরাসের উপসর্গ হিসাবে কনজাংটিভাইটিসকে এখনও মান্যতা দেয়নি। এর পিছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। চিনে করোনায় আক্রান্ত যে ১২ জনের কনজাংটিভাইটিসও ছিল বলে দাবি করা হয়েছে, তাঁদের কেউই চক্ষু বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নিশ্চিত করেননি যে তাঁদের চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠার কারণ কনজাংটিভাইটিস। এছাড়া, এই ১২ জনের চোখ থেকে নির্গত পিচুটি বা শ্লেষ্মা বা অশ্রুর নমুনাও পরীক্ষা করা হয়নি।


আরও পড়ুন: COVID-19: বাঁধাকপিতেই সবচেয়ে বেশিক্ষণ বাঁচতে পারে করোনাভাইরাস!


তাই কনজাংটিভাইটিসকে এখনই করোনাভাইরাসের একটি নতুন উপসর্গ বলে দেওয়ার মতো যথেষ্ট প্রমাণ এখনও হাতে আসেনি বিজ্ঞানীদের। ডঃ তুলি জানান, কনজাংটিভাইটিস আর করোনাভাইরাসের যোগসূত্রের এখনও তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে রুপোর্টগুলি সামনে এসেছে, সেগুলিও যথেষ্ট পরীক্ষালব্ধ নয়। তাই কনজাংটিভাইটিস হলে চক্ষু বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নিশ্চিত হতে হবে। কনজাংটিভাইটিস হলে করোনা সংক্রমণ ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই!