ওয়েব ডেস্ক: ট্রেনে-বাসে হকাররা হজমি বিক্রি করতে করতে প্রায়শই বলে ওঠেন, রোগ আর অম্বল, বাঙালির সম্বল। কিন্তু কেন অম্বল সম্বল করে ভুগতে হয় বাঙালিকে? চিকিত্সকরা খাদ্যাভ্যাসকেই দায়ী করেন। কিন্তু এর থেকে প্রতিকার কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বাঙালির পেটরোগা। এ বদনাম তো দীর্ঘদিনের। বুকে জ্বালা, টক ঢেকুর, সঙ্গে মাথার যন্ত্রণা সম্বল করে বাঙালি বেঁচে থাকে। হাজার টোটকা, ওষুধেও এ জ্বালা থেকে যেন মুক্তি নেই। কিন্তু কেন অম্বল হয়? বেশিরভাগ চিকিত্সকেরাই বলেন, প্রাথমিকভাবে এর জন্য দায়ি কিছু বদ অভ্যাস।


আরও পড়ুন-কী কী খেলে আপনি সুস্থ থাকবেন এই বর্ষায়?


জিভে জল আনা খাবার দাবার দেখে লোভ সামলাতে পারেন না বেশিরভাগ বাঙালি। সিঙ্গারা-কচুরি-আলুর চপ থেকে কাটলেট-কবিরাজি, এরকম হাজারো ভাজাভুজি খেয়ে ডেকে আনেন অম্বল


অপরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে খাবার খাওয়ার অভ্যাসটাও অম্বলের অন্যতম কারণ।


অনেকেই আছেন, খেয়ে দেয়ে একটু গড়িয়ে নেওয়ার অভ্যাস। এতে খাবার হজম তো হয়ই না, বরং তাতে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়।


অনেকে পরিমিত খাওয়া দাওয়া করেন, কিন্তু হাঁটা চলা কম করেন। তাঁদের সঙ্গি হয় অম্বল।


অম্বল কি শুধুমাত্র এ কারণেই হয়? চিকিত্সকদের বক্তব্য, খাদ্যাভ্যাস এবং বদঅভ্যাসের কারণে শরীরে নানা অসুখ দানা বাঁধে। তাই হজমের ওষুধ বা টোটকা করে সাময়িক স্বস্তি মেলে, কিন্তু বদহজম ফিরে ফিরে আসে।


হার্টের সমস্যা বা ডায়াবেটিস থাকলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে


কোষ্ঠকাঠিন্যে পাকস্থলীর মুভমেণ্ট ঠিক মতো হয় না। মুভমেণ্টের অভাবে ঠিকমতো মলত্যাগ হয় না। ফলে অম্বল দেখা দিতে পারে


খাদ্যনালি, পাকস্থলীতে কোনও সমস্যা থাকলেও হতে পারে অ্যাসিডিটির সমস্যা


গ্যাস্ট্রোএসোফাগেল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা গলব্লাডারে স্টোন থাকলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে


গ্যাস্ট্রিক আলসারের কারণেও  দেখা দিতে পারে অ্যাসিডিটির সমস্যা


 হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া পেট জ্বালার অন্যতম কারণ


 
অম্বল থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়টা তাহলে কী?  



অম্বল হলে অনেকেই ওষুধ খেয়ে বসেন। কিন্তু চিকিত্সকেরা পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধই খাওয়া উচিত নয়। অম্বলের ওষুধও নয়


ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া টোটকায় অম্বল সারাতে পারেন। যেমন, জোয়ান-আদা চিবিয়ে গরম জল পান কিংবা শুধু জোয়ান চিবিয়ে খাওয়া


প্রায় অম্বলের সমস্যায় ভুগলে গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্টের পরামর্শ নিন। তাঁকে জানান, অম্বল ছাড়া আপনার অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা আছে কিনা


যাঁরা অম্বলের সমস্যায় প্রতিদিন ভোগেন, তাঁরা কয়েকটি টোটকা করে দেখতে পারেন


এক গ্লাস গরম জলে এক চামচ জোয়ান, এক চিমটে বিট নুন ও গোল মরিচের গুঁড়ো সকালে ভিজিয়ে রাখুন। দুপুরে খাওয়ার এক ঘণ্টা পর ওই জল ছেঁকে পান করুন


একটি পাতি লেবুর রস বের করে সেটি এক গ্লাস জলে গুলে ফেলুন। এর মধ্যে এক চিমটে নুন দিন। দুপুরের খাওয়ার পর সেটি খেলে অম্বল থেকে রেহাই পেতে পারেন


আর যদি অম্বলতে বাই বাই বলতে চান, তাহলে বিশেষজ্ঞদের কয়েকটি পরামর্শ মেনে চলুন। বাইরের খাবার, বিশেষ করে ভাজাভুজি বা জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন। এড়িয়ে চলুন সিগারেট এবং মদ্যপান।


রোজ প্রচুর শাক-সবজি, স্যালাড খান।


প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।


রাতে খাওয়ার পর অন্তত ১০-১৫ মিনিট হাঁটুন।


খাওয়ার পর ২-৩ ঘণ্টা ঘুমাবেন না।


একবারে অনেকটা না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।


মোটা হলে ওজন কমান।


তবে যা কিছুই করুন না কেন, চিকিত্সকের পরামর্শ কিন্তু মাস্ট।