নিজস্ব প্রতিবেদন: হাতুড়ে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ। ১ বছরের কোর্স। এক চিকিত্সক সংগঠনের উদ্যোগে সাড়াও দারুণ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কারও জ্বর, কারও পেটে মারাত্মক ব্যথা। কারও দাঁতের গোড়া ফুলে কেলেঙ্কারি কাণ্ড। কাউকে সাপে কেটেছে, বা প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন কোনও প্রসূতি। প্রত্যন্ত গ্রামে পা রাখলে, অলিগলিতে কান পাতলে বা কোনও কুঁড়ের দরজায় দাঁড়ালে এই ছবিগুলো ভেসে ওঠে চোখের সামনে। তখন কোথায় যাবে সেই মানুষগুলো?


সেই সঙ্কটের সময় ভরসা হাতুড়ে ডাক্তার। কার্যত তাঁরাই গ্রামবাংলার চিকিত্সা-পরিকাঠামোর অন্যতম স্তম্ভ। কোনও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি বা আয়ুর্বেদিক ডিগ্রি না নিয়েও তাঁরাই গ্রামে গঞ্জে অসময়ে ভরসা জোগান। প্রথাগত কোনও তালিম নেই তাঁদের। মেডিক্যাল কাউন্সিল কিংবা হোমিওপ্যাথি কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করা নেই। রাজ্যে তাঁদের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। অনেকে হামেশা ছোটখাটো অপারেশনও করে থাকেন।


২০১৫ সালে স্বাস্থ্য দফতর ঠিক করে, হাতুড়েদের ট্রেনিং দেওয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। এবার হাতুড়েদের তালিম দিতে উদ্যোগ নিল একটি চিকিত্সক সংগঠন।


কোর্সের নাম প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কোর্স। ১ বছরের কোর্সে প্রতি মাসে ২টি করে ক্লাস। কোর্স ফি ৩ হাজার টাকা। ন্যূনতম যোগ্যতা মাধ্যমিক পাশ। গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে ন্যূনতম ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ২টি পরীক্ষা। ৬ মাস পর হাফ ইয়ারলি, আর বছরশেষে ফাইনাল পরীক্ষা। মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা। পাস মার্কস ৮০। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ও জয়নগরে প্রশিক্ষণ চলছে জোরকদমে।


প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ডাক্তার নীলরতন নাইয়া জানাচ্ছেন, গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করতে এই হাতুড়েদের স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে আপডেট করতে পারলে অনেক ভাল হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার মূল জিনিসগুলোর শিক্ষাই দেওয়া হচ্ছে এখানে। ডাঃ স্বপন বিশ্বাস আবার বললেন, কোন পেশেন্টকে নিজের কাছে রাখবেন, কাকে রেফার করবেন সেই পাঠও শেখানো হচ্ছে।


আরও পড়ুন- কমবয়সী ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে ধূমপানের প্রবণতা: সমীক্ষা


তবে শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনাই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার, পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা, মুর্শিদাবাদের বহরমপুরেও শুরু হয়েছে এই প্রশিক্ষণ। কিন্তু এভাবে কি চিকিত্সা বিজ্ঞান শেখা যায়? হাতুড়ের 'অবাধ ডাক্তারিতে' মানুষকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দেবে না তো, উঠছে প্রশ্ন।