জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মা হওয়া যে মুখের কথা নয় তা বারে বারে প্রমাণিত। ইদানীং বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের সফলতা বাড়লেও কিছু বাধা থেকেই যায়। অনেক সময় ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পরেও গর্ভস্থ ভ্রূণ ধরে রাখা মুশকিল হয়ে ওঠে। অবশ্য এই সমস্যার বিরুদ্ধে লড়তে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা সব সময়ই নানান নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন করছেন ও সফল হচ্ছেন। সম্প্রতি বিরল পদ্ধতিতে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পর সন্তান কোলে পেলেন পড়শি বাংলাদেশের এক দম্পতি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- Vibrio vulnificus: ভয়ংকর মারণক্ষমতাসম্পন্ন মাংস-খেকো এই ব্যাকটেরিয়া থেকে সাবধান!


বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইভিএফ পদ্ধতিতে এমব্রায়ো ট্র্যান্সফার করা হয় ট্র্যান্স সারভাইকাল রুটের মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে ইউটেরাইন ক্যাভিটিতে সরাসরি ভ্রূণটি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিছুদিন পরে গর্ভধারণ পরীক্ষার ধনাত্মক ফল আসে। তবে প্রায় ৩–৫% ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির সাহায্যে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন ও গর্ভধারণ সম্ভব হয় না। সার্ভাইকাল স্টেনোসিস, সার্ভিক্স ও ইউটেরাসের মধ্যে অ্যাঙ্গুলেশন অর্থাৎ কোনও বিশেষ ধরণের গঠনগত ত্রুটি থাকলে বা সারভিক্সের কোনও সার্জারি হলে বা এই ধরণের নানান সমস্যা ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।


বিশ্বের তাবড় তাবড় বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞরা এই পদ্ধতির মোকাবিলা করতে হিস্টেরোস্কোপি ও সারভিক্স ডায়ালেশনের সাহায্যে হবু মাকে ঘুম পাড়িয়ে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এই পদ্ধিতিটি সফল না হওয়ায় অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ আইভিএফ পদ্ধতিটি বিফলে যায়। এরই বিকল্প হিসেবে অত্যন্ত দক্ষ আলট্রাসাউণ্ড স্পেশালিস্টের তত্ত্বাবধানে ইনফার্টিলিটি ফিজিশিয়ানরা বিকল্প এক পদ্ধতির সাহায্যে গর্ভ ধারণ সম্ভব করার চেষ্টা করছেন। সৃষ্টি ক্লিনিকের অনফার্টিলিটি ফিজিশিয়ান ডা সুদীপ বসুর নেতৃত্বে ট্র্যান্স মায়ো মেট্রিয়াল ট্র্যান্সফার (টিএমইটি) পদ্ধতিতে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করে সাফল্যের মুখ দেখেছেন।


পড়শি দেশ বাংলাদেশের এক সন্তানাকাঙ্খী দম্পতির মুখে হাসি ফুটেছে এই বিরল পদ্ধতিতে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পর কোলে সন্তান পেয়ে। ভারতবর্ষে দ্বিতীয়বার ও পূর্বভারতে প্রথম ট্র্যান্স মায়ো মেট্রিয়াল ট্র্যান্সফার পদ্ধতিতে সফল গর্ভধারণ সম্ভব হল। ডা সুদীপ বসু জানালেন যে বিশেষ টোকাও পদ্ধতিতে ৩২ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের  টিএমইটি (কুক) নিডল ব্যবহার করে হবু মাকে ঘুম পাড়িয়ে ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই দিন কিছুক্ষণ অবজারভেশনের পর হবু মা বাড়ি ফিরে যান। অত্যন্ত দক্ষ ও উন্নত প্রযুক্তির আলট্রাসাউন্ডের সাহায্যে সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি সম্পন্ন করা হয়।


আরও পড়ুন- Medical Negligence: মরণাপন্ন রোগীকে দেখতে অস্বীকার, শহরের নামি হাসপাতালের ডাক্তারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ


সুদীপ বসু জানালেন জাপানে একটি বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা কেন্দ্রে এই বিশেষ ও অত্যন্ত জটিল পদ্ধতিটির প্রশিক্ষণ নেবার পর হাতে কলমে তিনি নিজের মত করে এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করে চতুর্থ বারে সফল হলেন। সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেক আপের পর যথাসময়ে এক সুস্থ স্বাভাবিক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান কোলে নিয়ে হাসিমুখে বাংলাদেশি দম্পতি বাড়ি ফিরে যান। বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় ভ্রূণ প্রতিস্থাপনে এক অনন্য নজির টিএমইটি পদ্ধতিতে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন সন্তানহীন দম্পতিদের কাছে আশার আলো নিয়ে এসেছে।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)