WB Dengue Update: পুজোয় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি, রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ২০ হাজার
পুজোয় শিশুদের সামলানো বেশ মুসকিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন শিশুদের ফুলহাতা জামা পরিয়ে বাইরে বের করতে হবে। মশারি ছাড়া তাদের শোয়ানো যাবে না। ভোরে ও সন্ধেয় তাদের উপরে বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ ওই সময়ে ডেঙ্গির মশা বেশ সক্রিয় থাকে
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: একসময় গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে থাকতেন গত ২৪ ঘণ্টায় কতজন করোনায় আক্রান্ত হলেন সেই পরিসংখ্যানের দিকে। ডেঙ্গি নিয়ে মানুষের ততটা মাথাব্যথা না থাকলেও এবার সবার অলক্ষ্যে রাজ্যে বাড়াছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে রয়েছে শিশুরাও। কোথায় চিরাচরিত ডেঙ্গির উপসর্গ কিছুটা হলেও অন্যরকম দেখা যাচ্ছে আবার। পুজোয় মেতে রয়েছে বাঙালি। কিন্তু চিন্তার কারণ হল রাজ্যে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত। রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সঙ্গে ছাড়িয়ে গেল ২০ হাজারের কোটা। বৃহস্পতিবারের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে এখনওপর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২০,০৩৩ জন। গত এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা জানলে চিন্তা বাড়বে। সাত দিনে ওই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭৪৪। কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতে এখনওপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।
পড়ুন- বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি উড়িয়ে দেওয়া যাবে না ডেঙ্গিতে মৃত্য়ুর সংখ্য়াকে। এখনওপর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্য়ু হয়েছে ১৯ জনের। ফলে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে পুজোর পুরনো ফর্মে ফেরা বাঙালিকে এনিয়ে এবার ভাবতেই হচ্ছে। রাজ্য় সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী কলকাতায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২১৪৭ জন, হাওড়ায় ২৭৬৪, হুগলিতে ২০৫৫ জন, জলপাইগুড়িতে ১৯২৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি উত্তর ২৪ পরগনায়। সেখানে এখনওপর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬৫৭ জন।
পুজোয় শিশুদের সামলানো বেশ মুসকিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন শিশুদের ফুলহাতা জামা পরিয়ে বাইরে বের করতে হবে। মশারি ছাড়া তাদের শোয়ানো যাবে না। ভোরে ও সন্ধেয় তাদের উপরে বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ ওই সময়ে ডেঙ্গির মশা বেশ সক্রিয় থাকে। জ্বর এলে প্যারাসিটামল খাবে। তবে কোনও ব্যথার ওষুধ নয়। যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। ডেঙ্গির আক্রমণ থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল আগাছা পরিষ্কার রাখা। এর পাশাপাশি নিজের বাসস্থানের আশেপাশে এবং রাস্তায় যাতে অতিরিক্ত জল না জমে সেই দিকে নজর রাখা। এখন পুজর সময়। প্যান্ডেল তৈরির সময় যেভাবে বাঁশ পোঁতা হয় তাতে সেখানে অনেক জায়গায় গর্ত থাকে এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে সেই গর্তে জল জমা হয়ে মশার বংশবৃদ্ধি হয়।
পুজোতেও ডেঙ্গির দাপটের কথা মাথায় রেখে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলিকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এদিন শহরের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যবরেটরিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম নিজে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বেশ কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে যখন কোনও ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হবেন তার তথ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। সেই তথ্য স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালে আপলোড করতে হবে। চিকিত্সা ক্ষেত্রে কোনও Rapid টেস্ট করা যাবে না। একেবারে অ্যালাইজা মেথডে এনএসওয়ান টেস্ট করতে হবে। এর পাশাপাশি বেসরকারি ল্যাবগুলিকে বলা হয়েছে ডেঙ্গি পরীক্ষা রেট সাধারণের আয়ত্বের মধ্যে রাখতে হবে। কোনও ল্যাব ওই নির্দেশিকা না মানলে ক্লিনিক্যাল এসট্যাবলিসমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেঙ্গি চিকিত্সার জন্য সরকারি প্রটোকল মেনে চলতে হবে।