Cough Syrup, Guaifenesin: মৃত্যু হতে পারে শিশুদের! ভারতের `বিষাক্ত` কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্কবার্তা হু-র
“এই সতর্কতায় উল্লেখ করা পণ্যটি নিম্নমানের। ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। বিষাক্ত প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, প্রস্রাব করতে না পারা, মাথাব্যথা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, কিডনিতে সমস্যা। যেগুলি মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।”
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কাশির সিরাপে 'বিষ'? 'বিষাক্ত' কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর তাতেই মহা ফ্য়াসাদে পড়েছে ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। কারণ, 'বিষাক্ত' ওই কাশির সিরাপ তাদেরই বানানো! ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার বানানো ওই 'বিষাক্ত' কাশির সিরাপ নিয়ে রীতিমতো সতর্কতা জারি করেছে হু। যাতে লেখা, এই কাশির সিরাপ ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয়। বিশেষ করে শিশুদের জন্য। এতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে শরীরের। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
গুয়াইফেনেসিন টিজি এই কাশির সিরাপটিকে নিম্নমানের পণ্য বলে চিহ্নিত করা হয় মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়াতে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিজিএ)-এর মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগারে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা গুয়াইফেনেসিন টিজি সিরাপের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। যাতে দেখা গেছে, ওই কাশির সিরাপে গ্রহণযোগ্য নয়, এমন পরিমাণে ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে। যার ফলে সিরাপটি দূষিত, একেবারেণ গ্রহণযোগ্য নয়। তারপরই হু-কে রিপোর্ট করা হয়।
এরপরই হু-এর তরফে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, “এই সতর্কতায় উল্লেখ করা পণ্যটি নিম্নমানের। ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। বিষাক্ত প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, প্রস্রাব করতে না পারা, মাথাব্যথা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, কিডনিতে সমস্যা। যেগুলি মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।” উল্লেখ্য, Guaifenesin (গুয়াইফেনেসিন) বুকে কফের সংক্রনণ, বুকে কফ জমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ও কাশির অন্যান্য উপসর্গের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এখন এই কাশির সিরাপটির প্রস্তুতকারক হল পাঞ্জাবের QP ফার্মাকেম লিমিটেড। পণ্যটি বিপণন করে হরিয়ানার ট্রিলিয়াম ফার্মা নামক সংস্থা। যাদের কেউই এখনও পর্যন্ত এই কাশির সিরাপের সুরক্ষা এবং গুণমান সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে কোনও গ্যারান্টি দেয়নি। যদিও কিউপি ফার্মাকেম লিমিটেডের দাবি, তাদের সন্দেহ যে ওই কাশির সিরাপটি 'ডুপ্লিকেটেড' বা নকল ছিল। তাদের বক্তব্য, “পাঞ্জাবের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সন্দেহ করে যে কেউ কম্বোডিয়ায় পাঠানো কাশির সিরাপটি নকল করেছে। তারপর ভারত সরকারের মানহানি করতে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং মাইক্রোনেশিয়ায় বিক্রি করেছে। এফডিএ বিভাগ পরীক্ষার জন্য কম্বোডিয়ায় পাঠানো কাশির সিরাপের নমুনা নিয়েছে।' পাশাপাশি, তাদের আরও দাবি, সম্ভবত মেয়াদ উত্তীর্ণ কাশির সিরাপের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এটাই প্রথম নয়। সম্প্রতি আরও একবার ভারতীয় কোম্পানির তৈরি ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফেব্রুয়ারি মাসেই তামিলনাড়ু ভিত্তিক গ্লোবাল ফার্মা হেলথকেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল ওঠে। অভিযোগ, তাদের তৈরি আই-ড্রপ ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারান। এছাড়া কয়েক মাস আগে, মেডেন ফার্মা নামে আরও এক কোম্পানির তৈরি কাশির সিরাপের জন্য আফ্রিকান দেশ গাম্বিয়াতে বহু সংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয় বলেও অভিযোগ উঠেছিল। অন্যদিকে একই সময়ে উজবেকিস্তানও দাবি করে যে নয়ডার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মেরিয়ন বায়োটেকের তৈরি কাশির সিরাপ খাওয়ানোর পর দেশে ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন, Maoist Attack: দান্তেওয়াড়ায় ফের মাওবাদী হামলা, শক্তিশালী বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন ১১!